পাতা:প্রবাসী (চতুর্বিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/১০৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

8 ه لا গিয়া কানাইকে আহবান করিয়া বলিল, “কানাই, বিমানবাবু যে তরকারী এনেছেন ডালা স্বদ্ধ ওপরে নিয়ে এসত।’ ডালা অন্বেষণ করিয়া মাধবীর তালিকার অতিরিক্ত দুইটি জিনিস পাওয়া গেল,—ডুমুর এবং পাতিলেবু। বিজয়োৎফুল্প-মুখে মাধবী বলিল, “দেখুন আমারই জিত হয়েছে ; আপনি বলছিলেন একটা কিছু বাকি রেখে “ইত্যাদি ব্যবহার করা চলে ; তা হ’লে দুটো জিনিস বাকি রেখে ‘কত কি ব্যবহার করায় আমার কোন অন্ধ্যায়ই হয়নি !” বিমানবিহারী স্মিতমূখে বলিল, “হিসেব-মত তোমার জিত হ’লেও, সে-জিত হারের এত কাছাকাছি যে প্রকৃত পক্ষে তা হারই !” - কপট-বোষে মাধবী বলিল, “আর আপনার হার, জিতের এত কাছাকাছি যে প্রকৃত পক্ষে তা বোধ হয় छिङहे ?” মাধবীর এই সবিদ্রুপ অথচ সযুক্তি প্রতিবাদে বিমানবিহারী এবং তাহার সহিত অপর সকলেই হাসিয়া উঠিল । তারাত্বন্দরী দুৰ্ব্বল-হস্তে উঠাইয়া-উঠাইয়া তরকারীগুলি দেখিতে লাগিলেন এবং কষ্ট করিয়া বিমানবিহারী সেগুলি সংগ্রহ করিয়া আনিয়াছে বলিয়া বারস্বার অন্থযোগ করিতে লাগিলেন । কুরমা বলিল,-“আমার হাতের রান্না খেতে যদি আপত্তি না থাকে, তা হ’লে মা, আমি আপনার পথ্যটা রেখে দিয়ে যাই ।” তারান্থন্দরী বলিলেন, “তোমার হাতের রান্না খেতে আমার বাধবে, সে-পাপ আমি বোধ হয় করিনি! তোমার হাতের রান্না খেতে আমার কোন আপত্তি নেই মা । কিন্তু কেন তুমি অনৰ্থক অত কষ্ট করবে ? মাধবী দেবে অখন রোধে !” g মাধবী একটা নূতন প্রস্তাব আনিল । সে সাগ্রহে বলিল, “বেশ ত মা, স্বরম দিদি রাখুন আর আমি &কে সাহায্য করি । তার পর এখানেই খাওয়া-দাওয়া করে ও-বেলা ওঁরা বাড়ী যাবেন!” মাধবীর এ-প্রস্তাব তারান্বন্দরী সানন্দে অম্বুমোদন করিলেন এবং নিজে তিনি এই জানদের রন্ধন-ব্যাপারে প্রবাসী—কাক্টিক, ১৩৩১ [২৪শ ভাগ, ২য় খণ্ড কোনও সাহায্য করিতে পারিবেন না বলিয়া দুঃখপ্রকাশ করিতে লাগিলেন। স্বরম একটু বিমূঢ় হইয়া বলিল, “না না, মাধবী, আজি আর অত হাঙ্গামা করে কাজ নেই। মা’র রান্না রোধে দিয়ে আমরা চলে যাব অখন । তাতে তুমি মনে কোরে না যে আমাদের কোনো বিষয়ে কিছু অস্থবিধে হবে।” স্বমিত্ৰা বলিল, “তা-ছাড়া, বাড়ীতে কোনও কথা বলে’ আসাও হয়নি ।” মাধবী বলিল, “তার জন্যে কিছু আটকাবে না ; আমি কানাইকে দিয়ে এখনি দু-বাড়ীতেই খবর দিয়ে পাঠাচ্ছি।” তাহার পর বিমানবিহারীর দিকে দৃষ্টিপাত করিয়া বলিল, “আপনি কিছু বলছেন না কেন, বিমান বাৰু? আপনি মত দিন !” বিমান মুছ হাসিয়া বলিল, “আমার মতের জন্যে ধদি আটকায়, তা হ’লে এখনি আমি মত দিচ্ছি। আমি নিজেই তোমাদের মতামতের অপেক্ষায় ছিলাম । তা-ছাড়া দু-বাড়ীতে খবর দেওয়ার ভারও আমি নিচ্ছি। দু-বাড়ীতে পাচ-ছটাক চাল অপচয় হ’তে দেওয়া হবে না, সে-কথা আমি তোমাদের কথা আরম্ভ হওয়া থেকেই মনে-মনে ভাব ছি!” মাধবী হাসিয়া বলিল, “পাচ-ছটাক ত নয়, সাড়েসাত ছটাক । আপনাকেও এখানে খেতে হবে।” বিমানবিহারী বলিল, “আমাকে মাপ কোরে মাধবী, আমার আজ একটু কাজ আছে। তা-ছাড়া, আমার মত দুৰ্ব্বত্ত লোককে ওলের স্বত্তো আর পলতার চচ্চড়ি খাইয়ে তোমাদের কোনও পুণ্য হবে না।” “তোমার ভয় নেই ঠাকুরপো, ও-দুটি অদ্ভূত তরকারী আমাদের মধ্যে কেউ রাধ তে জানে না " বলিয়া স্বরম হাসিতে লাগিল । বিমানবিহারীও হাসিতে-হাঁসিতে বলিল, “ষাই হোক, ঐসব শাকসব্জী দিয়েই রাধবে ত? ও দিয়ে কোনো-রকমেই ভজলোকের ভোগ তৈরী করা यांच्च न !” মাধবী হাসিতে-হাসিতে বলিল, “সে-জন্য ভঞ্জলোকের কোনও ভাবনা নেই, জীব-জন্তুর ব্যবস্থাও থাকুৰে ।”