পাতা:প্রবাসী (চতুর্বিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/১২৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

>"8 পারে ? শুধু যে একের প্রভুত্ব অন্যের দাসত্বহেতু দ্বেধ জন্মেছিল, তাও নয়। আর্য ও অনাৰ্য্য দুই র-য় (race)। যে স্বত্রে হক, দুই রয় পরস্পর সম্মুখীন হ’লেই কে বড় কে ছোট, এই তুলনা চলতে থাকে। আর্য্যেরা বলবান, স্বতরাং তারা যে বড়, তা স্বীকার করতেই হঠত । র্তাদের গণোৎকর্ষ দেখ্যে অনাৰ্য্যদের ঈর্ষ্য হ’ত । কিন্তু ঈর্ষ্য। এইখানেই থামে না! ক্রোধের সহিত যুক্ত হয়। যেন অনাৰ্য্যেরা বলত, আর্য্যের কেন বড় হবে । এই 'কেন' খুজতে গিয়ে কিন্তু, নিজেদের অপকর্ষ দেখতে পেলে না ; দেখতে পেলে আর্য্যদের দুষ্টামি। “কেমন কর্যে জানলে ?” “দেখাই যাচছে, তাদের দুষ্টামি না থাকলে আমারা বড় হতাম !” এই উত্তর নূতন নয়। সে আমার অপকার করছে, আমি তার অপকার করতে পারছি না, তারই জন্যে পাবৃছি না, এই ত দ্বেষ । সে ত আমার নয়, আমার বংশের নয়, জাতির নয়, ধর্মের নয়, দেশের নয়। এমন লোকই ত অপকার করে । রয়িক দ্বেষের তুল্য স্থায়ী ভাব, বোধ হয়, আর নাই। এর গোড়ায় সন্দেহ ও ভয় । ইহাকে জীবন-সংগ্রামও ব’লতে পারি। আমেরিকায় কৃষ্ণবর্ণের প্রতি সাম্যবাদী ভ্রাতৃ-সম্বন্ধী শ্বেত-বর্ণের ঘৃণা ঘুচতে বহুকাল লাগবে। এদেশের ফিরঙ্গী ইংরেজের কাছে কাছে চলে, তবু ফিরঙ্গীকে ইংরেজ সমান ভাবতে পারে না ; পাঠান ও মোগলের বনিকুনাও কখনও হ’ত না, যদিও উভয়েই মুসলমান । ইয়ুরোপে সমবৰ্ণ খ্ৰীষ্টানে খ্ৰীষ্টানে যুদ্ধ হ’ল, কারণ সকলের রয় এক নয়। আয়ালগু এত কাল এক রাজ্য-গর্ব ভোগ ক’বৃছিল, সমাজে এক ছিল, কিস্ত ইংলণ্ড যে পর, তা ভুলতে পারলে না। এমন কি, শনতে পাই, স্কটুলণ্ডও পৃথক হতে চায় ; কেন না ব্রিটন নয় | এখন যা দেখছি, পূর্বকালেও তাই ঘাটুত। পূর্বকাল কেন, একালেও ঘটছে। উন্নতিকামী শূত্রেরা বলছে, ব্রাহ্মণের দুষ্টামি-হেতু তারা অবনত হয়ে আছে। বঙ্গদেশে একথা তত স্পষ্ট শোনা যায় না। কারণ শূদ্রের বহু ভাগ আছে, আর অনেক ভাগ বড়ও আছে। সুতরাং দল বেঁধ্যে ব্রাহ্মণের বিপক্ষে দাড়াবার দরকার হয় নাই ! প্রবাসী—কাৰ্ত্তিক, ১৩৩১ ২৪শ ভাগ, ২য় খণ্ড হিন্দুশাস্ত্রে চারি বর্ণের অধিক বর্ণ স্বীকৃত হয় নাই। কিন্তু কতকগুলি জাতি চারি বর্ণের মধ্যে পড়ে না। ইহার হিন্দু, কিন্তু অবর্ণ। মাদ্রাজে বলে পঞ্চমবর্ণ, সংক্ষেপে ‘পঞ্চম’ । বোম্বাই অঞ্চলে ইহার ‘মারাটা’ । দক্ষিণাপথের সর্বত্র হিন্দুজাতি দু ভাগে ভাগ হয়ে গেছে, সবর্ণ অর্থাৎ ব্রাহ্মণ, আর অবর্ণ অর্থাৎ অ-ব্রাহ্মণ । বঙ্গদেশেও নাকি ব্রাহ্মণ ও শূদ্র বই অন্য জাতি নাই। দুই রয় যদি একই বর্ণ হয়, দুয়েরই ধদি গায়ের রং এক হয়, তা হ’লে রয়িক দ্বেষ তত প্রকট হ’তে পারে না । বেদের সময়ে ‘ব্রাত’নামে এক যাযাবর জাতি আৰ্য্যদিকে উত্যক্ত ক’বৃত। বোধ হয় এই ব্রাত জাতি বৰ্ত্তমান বেদিয়া জাতির আদি । সে বা হ’ক, ব্রাতজাতি কৃষ্ণবর্ণ ছিল না । সচ্ছন্দে পরে ‘ব্রাতা’ নামে আর্য্যসমাজে মিস্তে গেছে। তার পর কত ধবন শক হণ, হিন্দু হয়ে গেছে, তার সংখ্যা নাই। কিন্তু, বেদের দস্থ কৃষ্ণবর্ণ ছিল । শ্বেত ও কৃষ্ণ বর্ণ বৈষম্যহেতুতে রয়-বৈষম্য প্রকট হয়ে দাড়াল, স্বজাতি বিজাতি বুঝতে কষ্ট হ’ল না। অনেক পশ, গা শঙ্গ্যে বা দূর হতে গন্ধ পেয়ে স্বজাতি বিজাতি ঠাওরাতে পারে । সমগন্ধী স্বজাতি, বিষমগন্ধী বিজাতি। স্বজাতি মিত্র, বিজাতি শত্র, উপকথায় আছে, রাক্ষসী ও পিশাচ দূর হতে মামুযের গন্ধ টের পায় । মহিষের ভ্রাণশক্তি তত প্রথর নয়, কাছে না পেলে কোন মাস্থ্য শত্র, কোন মানুষ মিত্র, তা বুঝতে পারে না । প্রিয় পুত্রের মস্তক আভ্রাণ কর্যে বুঝি, সে আমার আপনার । কিন্তু, দূরে থাকলে দেখা ভিন্ন উপায় নাই। যে কাল, সে যে দুষ মন, তাতে আর সন্দেহ কি । নইলে কাল হবে কেম, আমার মতন গোরা হ’ত । চুরি-ডাকাতি যত দুষ্কর্ম সব অন্ধকারে হয় । খুটু-ঘুটি আঁধারে বাইরে ধায়, কার সাধ্য! ভূত-প্রেত সব কাল । তবু অন্ধকারে থাকে, অন্ধকার পক্ষে প্ৰেতকাৰ্য্য ক’বৃত হয় । এক-একটা লোক যেন কাল ভূত, তাদের কাছে যেতেও ভয় হয়। ডাকীংগুলা মিস্-মিস্তে কাল নিশ্চয়। রাহ, কেতু, দুটাই কাল ; আমন স্বর্ণকাস্তি চন্দ্রস্বৰ্য্যকে কাল কর্যে ফেলে, পৃথিবীটাকে অন্ধকারে ঢাকে । তাড়াও, তাড়াও ; শঙ্খ ঘণ্টা বাজাও । গঙ্গাস্নান কর,