ృ9o জরাজীর্ণ সমাজে কেহ রসায়ন প্রয়োগ করছেন না, দুৰ্ব্বল দেহে বল-সঞ্চারের চিন্ত ভাবছেন না । শিকড়মাকড়, জড়ো-বুঢ়ী দিয়ে মৃত্যু-কাল কিছু বাড়তে পারে, কিন্তু যৌবন আসবে না। ভাইকোমে সত্যা গ্রহীরা মন্দিরের পাশের পথ গোলা পাবে, কিন্তু আর যে হাজার পথে লোহার কপাট প’ড়বে, বোধ হয় সে চিন্ত করে নাই । যে স্বেস্ব ভিতরে ভিতরে ছিল, সবর্ণের মনে তা জেগে উঠবে, রোযে ভবিষ্যৎ মিলন কঠিন কর্যে তুলবে। বঙ্গদেশে ও যে-সব নিম্ন জাতি নাম বদলে উচ্চ হতে চাচ ছে, তাদেরও বুদ্ধি সফল হবে মনে হয় না । কারণ, তারা ও ছোট ও বড় স্বীকার ক’বৃছে, স্বীকার করছে না কেবল নিজেদের নিম্নত৷ ৷ অর্থাং তোমরা নীচে থাক, আমরা উপরে উঠ । যে বটগাছ সে বটগাছই থাকৃছে, লোক আমগাছ বল্যে ভাবতে পার্বুছে না । দু-চারি পুর্য গেলে হয়ত আমগাছ মনে হবে, কিন্তু প্রকৃত আমগাছ হওয়া অসম্ভব। ফলে এখন যে ভেদ আছে, তখনও থাকুবে, অসহযোগ মাত্র প্রবল হবে। বুঝি, সাত্ম-গৌরব সকলের সাধ্য নয়, সাধ্য জাতি-গৌরব। প্রত্যেক ইংরেজ কিছু বড় নয়, কিন্তু ইংরেজ জাতিটা বড়, সেই গৌরবে প্রত্যেক ইংরেজেরও গৌরব । কিন্তু এখানে গৌরব ব্রাহ্মণের কাছে ; ব্রাহ্মণ বিমুখ হ’লে, কে গৌরব মানবে ? শুধু ব্রাহ্মণ নন, অন্য যেসব জাতি সহযোগে জীবন-যাত্রা নিৰ্বাহ করত, তারাও তুষ্ট হবে না। বুঝতে হবে জাতিতন্ত্র স্বতন্ত্র হয়েও পরতন্ত্র, এক হিন্দুতন্ত্র। স্বতরাং হিন্দুতন্ত্রের মধ্যে থাকৃতে হ’লে প্রত্যেককে পরের অধীনতা স্বীকার ক’বৃতে হবে। সমাজ অর্থেই স্বাধীনতার খবত। কেহ উচ্চ কেই নীচ থাকৃবেই, কেহ প্রন্থ কেহু দাস হ’বেই। কিন্তু উচ্চ-নীচের সহযোগে, প্রভু-দাসের পরম্পর সাহায্যে সংসার চলছে । ছোট মনে করলেই ছোট, নইলে কে কাকে ছোট ক’বৃতে পারে ? রাজার জেল-থানা আছে,আমাদেব দেহটাকে জেলে পুরতে পারেন, কিন্তু মনকে ত পারেন না । হিন্দুত্তন্ত্রের বাইরে গেলেও জয় হবে না । কারণ যে-জন্ত যুদ্ধ তা পাবে না, নিজের অস্তিত্ব ভুলতে হবে। আর যদি অস্তিত্বই গেল, তা হ’লে যে, সর্বস্ব গেল । প্রবাসী—কাৰ্ত্তিক, ১৩৩১ [ ২৪শ ভাগ, ২য় খণ্ড অবশ্য এত কথা কেহ ভাবে না, সকলে ভাবতে পারেও না। অভিমান অবশ্য চাই, কিন্তু অভিমান প্রেমের ঈর্ষা, তাতে রোষ থাকে না । এই কথা বুঝতে না পেরে নব্য নারী ভাবছে, সে স্বামীর দাসী নয়, সমান । যখনই সাহিত্য-পত্রে নারীর অধিকার আলোচিত হ’তে দেখি, স্বামী-স্ত্রীর অধিকার ভাগ ভাগি করতে দেখি, তখনই বুঝি প্রেমের অভাব । “স্বামীর সেবা কেন করবে ?” কারণ, সেবাতেই তোমার আনন্দ, সেবা না করে তুমি থাকতে পার না, তোমার ইচ্ছা হয়, তাই সেবা কর । তেমনই যে-স্বামী স্ত্রীর সেবা আদায় করে, সেখানেও বুঝতে হবে মিলনে দোষ আছে, সে স্ত্রীর দাস হতে পারছে না। এরূপ ঘটনা কোনও সমাজে বিরল নয়। কোন আচারে কত, তা গ’ণ বারও নয়। কোন কোনও সমাজে স্বামী-স্ত্রীর মনান্ত হ’লে স্থানান্তরের বিধি আছে। পূর্বকালে হিন্দু সমাজেও ছিল। সে যা হ’ক, দেখা যাচছে, প্রেমের বিরোধ প্রণয় কলহ, মিলন তার ফল। অপ্রেমের বিরোধে মিলন হয় না, আপোষ হ'ভে পারে । বঙ্গে উচ্চ ও নিম্নে যে বিরোধ আরম্ভ হয়েছে, যারা গ্রামে থাকেন, তাদের দুশ্চিস্তার কারণ হয়েছে। কোনও পক্ষের শান্তি নাই। নিম্ন বলছে, “আমি উচ্চ, আমায় উচ্চ মনে রেখে আমার সহিত ব্যবহার করবে।” উচ্চ ব’লছে, “তুমি এতকাল নিম্ন আসনে বসতে, অীজ তোমায় উচ্চ আসন দিতে গেলে সকলের আসন বদলাতে হয়, আমার সে শক্তি কোথায় ?” নিম্ন বলছে, “যদি তোমার শ ভক্ত নাই, দেখ আমার শক্তি আছে কি না। আমি তোমার কোনও কাজ করব না।” ফলে ঘ’টুছে এই, পরস্পরের সাহায্য হ’তে পরস্পর বঞ্চিত হ’য়ে উভয়ে কষ্টে কাল কাটাচ্ছে। পশ্চিম দেশে ধৰ্ম্মঘট হয় বেতন. বৃদ্ধির অভিপ্রায়ে। এদেশে তাও আছে, আর নূতন হচছে ‘বড় প্রমাণ করতে গিয়ে । যারা গ্রামের মধ্যবিত্ত, র্যার ‘ভদ্রলোক’ বল্যে গণ্য, তাদের দুর্দশ বাড়ছে। কুষিজাত শস্য র্তাদের একমাত্র ভরসা। কিন্তু কুষাণ অভাবে জমি পতিত থাকৃছে, কিংবা কুষাণের করতলগত হ’চছে। নিম্ন তার শক্তি বুঝছে, উচ্চ ‘হা অস্নে'র দল বাড়াচছে ; এক
পাতা:প্রবাসী (চতুর্বিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/১৩৫
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।