পাতা:প্রবাসী (চতুর্বিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/১৪০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

১ম সংখ্যা ] বিবিধ প্রসঙ্গ— ভারতবর্ষকে আমরা কি চোখে দেখি J& এবং ইহাতে ছবি থাকে, এবং রাজনীতি ছাড়া অন্ত অনেক বিষয়ে স্বনিৰ্ব্বাচিত স্বপাঠ্য ছোট-ছোট লেখা থাকে। অবশ্য ইংরেজী কিম্বা ভারতীয় কোন ভাষায় এরূপ কোন কাগজ চালান ব্যয়-সাপেক্ষ ; কিন্তু যাহা হইতে মহৎ উপকারের প্রত্যাশা করা যায়, এমন কোন কাজ সহজে হইতে পারে ? বলা বাহুল্য ভাল সংবাদপত্র এবং পুস্তক-পুস্তিক দ্বারা দেশের লোকের চিন্তা ও ভাবের গতি পরিবর্কিত করিতে হইলে শিক্ষার বিস্তারও আগে আবশ্যক। তাই। অবখ্য সময় সাপেক্ষ । কিন্তু অমঙ্গল দীর্ঘকাল ধরিয়া পুঞ্জীভূত হইয়াছে, খুব অল্পকালের মধ্যে তাহার বিনাশসাধন সম্ভবপর মনে হয় না । যে সকল লোক দিল্লীতে আস্থত হইয়াছেন, র্তাহাদিগকে উপদেশ দিবার জন্য আমরা কোন কথা লিখিতেছি না ; – ত:হার নিজ নিজ কৰ্ত্তব্য নিজ-নিজ জ্ঞান-বুদ্ধিঅনুসাবে করিবেন। নেতৃ-স্থানীয় না হইলেও সম্পাদকদিগকে সাময়িক প্রধান-প্রধান বিষয়ের আলোচনা করিতে হয় ; আমরা তাহাই করিতেছি । ভারতবর্ষকে কি চোখে আমরা দেখি কথন কখন কাহারও-কাহারও মনে এ-কথার উদয় হইয়াছে, যে, ভারতবর্ষের সব লোক যদি মুসলমান হইয়া যায় বা অন্য কোন একটা ধৰ্ম্মসম্প্রদায়ভুক্ত হইয়া যায়, তাহা হইলে সাম্প্রদায়িক বিরোধ বা শ্রেণী:ত-শ্রেণীতে ঝগড়ার অবসান হয় । কিন্তু ভারতবর্ষে যে কোন কালে কেবল মুসলমান ধৰ্ম্ম বা অন্য কোন ধৰ্ম্মমত মামুষের হৃদয়-মনের উপর একাধিপত্য করিবে, আমাদেরও এরূপ মনে হয় না। আর যদিই বা তাহা হয়, তাহাতেও ত ঝগড়ার বিরাম হইবে না। ইউরোপে ভিন্নভিন্ন খৃষ্টীয় সম্প্রদায়ের বিবাদের জন্য কতই না রক্তপাত হইয়াছে। ভারতবর্ষে শিল্প ও স্বস্লিদের মধ্যে দাঙ্গ৷ হইয়া থাকে। ভিন্ন-ভিন্ন হিন্দু জাতের মধ্যে মারামারি হয়। আরবদেশে সম্প্রতি মুসলমান ওয়াহাবী সম্প্রদায়ের নেতা ইবন সাদ হেজাজের রাজা হোসেনের রাজত্ব আক্রমণ ও দখল করিয়াছেন। স্বত্তরাং ধৰ্ম্ম-বিশ্বাস ঠিক্‌ এক হইয়া গেলেই সকলের মধ্যে সম্ভাব স্থাপিত হইবে ও মিলন হইবে, এই আশায় ভবিষ্যৎ কোন স্বদিনের প্রতীক্ষায় বসিয়া থাকিলে চলিবে না। ধৰ্ম্ম-বিশ্বাসের ভিন্নতা থাকা সত্ত্বেও যাহাতে সস্তাব স্থাপিত হয় ও মিলন হয়, তাহারই চেষ্টা করিতে হুইবে । ইহার এক উপায়, ভিন্ন ভিন্ন ধৰ্ম্ম-সম্প্রদায়ের মত, বিশ্বাস ও আচরণের কোথায় মিল আছে, তাহ আবিষ্কার করা ও তাহারই উপর অধিকতম গুরুত্ব আরোপ করা । দেখিতে পাওয়া ধাইতেছে, যে, সব ধৰ্ম্ম-সম্প্রদায়ের লোকেই ঈশ্বর বঁাচাইয়। রাপিয়াছেন, সকলকেই তাহাদের কাৰ্য্য- ও শ্রম-আহসারে ফল দিতেছেন, সকল সম্প্রদায়ের দ্বারাই জগতের কোন-না-কোন হিত সাধিত হইয়াছে, এবং সকল সম্প্রদায়েই সাধু মানব-প্রেমিক লোক জন্মগ্রহণ করিয়াছেন, ইহা মনে রাখিলে সকল সম্প্রদায়ের প্রতি শ্রদ্ধা ও উদারত অবলম্বন করিবfর প্রবৃত্তি জন্মে । তদ্ভিন্ন, প্রত্যেক সম্প্রদায়ের লোক-হিতকর চেষ্টা ও কার্য্যে যদি অন্যান্য সম্প্রদায়ের লোকেরা , নিজনিজ সাধ্য-অনুসারে সহায়তা করেন, মিলনের একটা উপায় হয়। ভারতবর্ষকে আমরা কে কি চোখে দেখি, তাহার উপরও সাম্প্রদায়িক মিল অনেকট নির্ভর করে। অন্য নানা দেশের দৃষ্টান্ত-দ্বারা ইহা বুঝিবার চেষ্টা করিতে হইবে । প্রাচীন গ্রীসের লোকেরা বহু-দেববাদী ছিল, খৃষ্টীয়ান ছিল না । তাহাদের সাহিত্য, দর্শন, বিজ্ঞান, নানা ললিতকলা, খৃষ্টীয় ধৰ্ম্ম ও সভ্যতার ফল নহে। গ্রীসের বৰ্ত্তমান অধিবাসীরা খ্ৰীষ্টয়ান ও বহু দেবতা-পূজার বিরোধী ; তাহাদের ধৰ্ম্ম এশিয়া মহাদেশের প্যালেষ্টাইন হইতে আসিয়াছে। কিন্তু তাহারা তজ্জন্য প্রাচীন গ্রীকৃসাহিত্য-আদির এবং প্রাচীন গ্রীকু সভ্যতার অনাদর করে না ; প্রত্যুত আদর করে, তাহার অনুশীলন করে ও তাহাতে গৌরব বোধ করে ; এবং তাহারা গ্রীস অপেক্ষা প্যালেষ্টাইনের সঙ্গে নিজেদের বেশী সম্পর্ক আছে মনে করে না । ইটালীর লোকেরা বর্তমান সময়ে ধৃষ্টীয়ান ; কিন্তু তাহা হইলেও