পাতা:প্রবাসী (চতুর্বিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/১৪১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

vరిNు তাহারা তাহাদের পূৰ্ব্বজ অধৃষ্টীয়ান রোমানদের সাহিত্যাদি ও সভ্যতার আদর করে ও তাহাতে গৌরব বোধ করে । তাহাদের ধৰ্ম্ম প্যালেষ্টাইন হইতে আসিয়াছে বলিয় তাহারা আপনাদিগকে ইটালী অপেক্ষ প্যালেষ্টাইনের সঙ্কিত নিকটতর সম্বন্ধযুক্ত বলিয়া মনে করে না । স্কুলের ছাত্রেরাও জানেন, ইংলণ্ডে আগে ব্রিটন নামধেয় সেণ্ট জাতীয় লোকদের বাস ছিল । তাহার পর রোমানেরা উহা জয় করে । তাহার পর ঐদেশ অ্যাংঙ্গল, স্যাক্সন ও জুটের জয় করে । তাহার পর ডেনরা জয় করে । সৰ্ব্বশেষে ফ্রান্সের নম্যাণ্ডি প্রদেশবাসী নর্মানরা জয় করে । এইসব বিজেতাদের বংশধরেরা কিন্তু কেণ্ঠই, ভাহাদের পূর্বপুরুষদের দ্বারা পরাজিত দেশের সভ্যত। বলিয়া, ইংলণ্ডীয় সভ্যতার অনাদর করে না ; বরং তাহাতে গৌরব বোধ করে। ডেন ও নর্মানদের বংশধর ইংলণ্ডের অধিবাসী যাহার, তাহার পুরাতন অ্যাংলোস্যাক্সন সাহিতাকেও নিজেদের সাহিত্য মনে করে । বিজেতাদের বংশধরেরা কেহ বর্তমানে ডেনমার্ক, নর্মাণ্ডি প্রভৃতির সঙ্গে ইংলণ্ডের সহিত অপেক্ষ ঘনিষ্ঠতর সম্বন্ধ স্থাপন করিয়া গৌরবান্বিত হইতে চেষ্টা করে না । আধুনিক ইংলণ্ডের ধৰ্ম্ম খৃষ্টীয় , উছার উৎপত্তি প্যালেষ্টাইনে । কিন্তু তাবলিয়া কোন ইংরেজ ইংলণ্ড অপেক্ষ প্যালেষ্টাইনকে হৃদয়ে উচ্চতর স্থান দেয় না । প্রাচ্য মহাদেশ এশিয়ার দিকে দৃষ্টিপাত করিলে দেখিতে পাই, চীন-দেশে কোটি-কোটি বৌদ্ধের বাস । তাহাদের ধৰ্ম্ম ভারতবর্ষ তাহারা পাইয়াছে । কিন্তু তাহার। অবৌদ্ধ চীনদের মতই চীনদেশকে ও চীন সাহিত্য, শিল্প ও সভ্যতাকে ভালবাসে, শ্রদ্ধা করে, এবং ভদ্বারা আপনাদিগকে গৌরবান্বিত মনে করে । চীনদেশে লক্ষ-লক্ষ লোক মুসলমান-ধৰ্ম্মাবলম্বী। তাহারাও স্বদেশী অন্য লোকদের মত চীন সাহিত্য, শিল্প, দশন সভ্যতা আদির প্রতি শ্রদ্ধান্বিত ও অতুরাগী । জাপানে যে-সকল বৌদ্ধ ও মুসলমান জাপানী আছে, তাহারাও চীনদেশীয় বৌদ্ধ ও মুসলমানদের মত নিজ হইতে প্রবাসী—কাৰ্ত্তিক, ১৩৩১ [ ২৪শ ভাগ, ২য় খণ্ড দেশের ও তাহার সভ্যতা-আদির প্রতি শ্রদ্ধাম্বিত ও অকুরাগী । ভিন্ন-ভিন্ন দেশের যে-সকল বৌদ্ধ, খৃষ্টীয়ান ও মুসলমানের কথা বলিলাম, তাহারা তাহাদের ধৰ্ম্ম যেসব দেশ হইতে পাইয়াছেন, তাহাকে অবজ্ঞা করেন না, তাহাকেও ভালবাসেন । কিন্তু সাহিত্য, দর্শন, শিল্প ও সাধারণতঃ সভ্যতায় সম্পর্কে নিজের দেশের যাহা তাহার প্রতি তাচ্ছিল্য, উদাসীনতা, বা অবজ্ঞা প্রদর্শন করিয়া ভারতবর্ষকে, প্যালেষ্টাইনকে বা আরব দেশকে ও তত্তদেশের সভ্যতাদিকে অধিকতর আপন মনে করেন না । ভারতবর্গের প্রতি দৃষ্টি নিক্ষেপ করিলে দেখিতে পাই, ইহাকে এবং ইহার প্রধান সাহিত্য ও সভ্যতাআদিকে ভারতীয় মুসলমানের সে-চক্ষে দেখেন না ও তাহার খবর রাখেন না, ধে-চক্ষে চীনের ও জাপানের মুসলমামেরা তাহদের দেশী প্রাচীন সাহিত্য ও সভ্যতাআদিকে দেখেন ও তাহার খবর রাখেন। গ্রীস ও ইটালীর বর্তমান খৃষ্টীয়ান অধিবাসীরা তাহাদের অখুষ্টীয়ান পুৰ্ব্বপুরুষদের সাহিত্য-আদির যেরূপ আদর ও চর্চা করেন ও তাহাতে গৌরব বোধ করেন, ভারতীয় মুসলমানেরা ভারতের প্রাচীন সভ্যতা এবং সংস্কৃত ও পালি সাহিত্যের সেরূপ আদর ও চর্চা করেন না ও তাহাতে গৌরব বোধ করেন না ও বিধৰ্ম্মীদিগের সাহিত্য ও সভ্যতা বলিয়া ভারতীয় সাহিত্য ও সভ্যতার অনাদরের কারণ নাই। কেননা, প্রাচীন গ্রীক ও রোমক সাহিত্য ও সভ্যতাও গ্রীস ও ইটালীর বর্তমান খৃষ্টীয়ান অধিবাসীদের পক্ষে বিধৰ্ম্মীর সাহিত্য ও সভ্যতা। চীন ও জাপানের মুসলমানদের পক্ষেও ঐ দুই দেশের প্রাচীন সাহিত্য ও সভ্যতা বিধৰ্ম্মীর সাহিত্য ও সভ্যতা । তা ছাড়া, বিদেশী অহিন্দু অবৌদ্ধ খৃষ্টীয়ানেরাও ভারতীয় সাহিত্য ও সভ্যতার আদর ও অনুশীলন করেন ; আরব দেশের অনেক মুসলমান-রাজা সংস্কৃত বহুগ্রন্থের অনুবাদ করাইয়াছিলেন, ও ভারতীয় গণিত, রসায়ন ও আয়ুৰ্ব্বেদ হইতে আহরণ করিয়া নিজ জাতিকে অনেক বিষয় শিখাইবার ব্যবস্থা করিয়াছিলেন ; এবং