পাতা:প্রবাসী (চতুর্বিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/১৪২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

১ম সংখ্যা ] ভারতবর্ষেরই অনেক মুসলমান নৃপতি প্রাচীন ও র্তাহীদের সমসাময়িক ভারতীয় সাহিত্যের প্রতি অনুরাগ ও শ্রদ্ধা প্রদর্শন করিয়াছিলেন । এখন একট। আপত্তি এই উঠিতে পারে, যে, গ্রীস ও ইটালীর খৃষ্টৱানে r যে নিজ-নিজ দেশের প্রাচীন অধৃষ্টীয় সাহিত্য ও সভ্যতার অাদর, চর্চা ও গৰ্ব্ব করে, চীন ও জাপানের বৌদ্ধ ও মুসলমানের ধে নিজ নিজ দেশের অবৌদ্ধ ও অমুসলমান প্রাচীন সাহিত্য ও সভ্যতার আদর, অতুশীলন ও গৰ্ব্ব করে, তাহ নিজ-নিজ পূৰ্ব্বপুরুষদের বলিয়াই করে ; কিন্তু ভারতবর্যের প্রাচীন সাহিত্য ও সভ্যতা ত ভারতীয় মুসলমানদের পূর্বপুরুষদের সাহিত্য ও সভ্যতা নহে । তাহার। বিদেশ হইতে আসিয়া ভারত জয় করিয়াছিল । ভুল এইখানেই । ভারতবর্বের অপেক্ষাকৃত অল্পসংখ্যক মুসলমান ধে বিদেশী মুসলমানদের বংশধর তাহাতে সন্দেহ নাই । কিন্তু ইহা ও নিঃসন্দেহে বলা যাইতে পারে, যে, অধিকাংশ ভারতীয় মুসলমানের পূৰ্ব্বপুরুষেরা এই দেশেরই লোক ছিলেন, মুসলমান ধৰ্ম্ম গ্রহণ করিয়াছিলেন । ইতিহাস এই সিদ্ধান্তের পোষকতা করে, নৃতত্ত্ব বিজ্ঞানও ইহার সমর্থন করে । মুসলমান-ধৰ্ম্মে হিন্দু ধর্মের মত জাতিভেদ না থাকায়, র্যtহারা মোগল আরব প্রভৃতির বংশধর তাহারাও খাটি মোগল আরব প্রভূতি নহেন ; রক্তের মিশ্রণ ঘটিয়াছে ; যেমন মোগল বাদশাহদের পরিবারে পর্য্যন্ত ঘটিয়াছিল । অতএব ইহা নিশ্চিত, ঘে, ভারতবর্ষের প্রাচীন সাহিত্য ও সভ্যতার গৌরব করিবার যে অধিকার ভারতীয় হিন্দু জৈন ও বৌদ্ধদিগের আছে, অধিকাংশ ভারতীয় মুসলমানেরও সেই অধিকার আছে । কিন্তু যদি ইহা স্বীকার করা যায়, যে, সমুদায় বা অধিকাংশ মুসলমান বিদেশী মুসলমানদের বংশধর, তাহা হইলেও অন্যান্য দেশের দৃষ্টান্ত হইতে বুঝা যায়, যে, ভারতীয় মুসলমানদের ভারতীয় প্রাচীন সাহিত্য ও সভ্যতা প্রভৃতির আদর ও অনুশীলন করা কৰ্ত্তব্য । আমরা পূৰ্ব্বেই বলিয়াছি, যে, ইংলণ্ড-বিজেতা ডেন ও নম্যানদের বংশধরেরা ইংলণ্ডের প্রাচীন সাহিত্য ও বিবিধ প্রসঙ্গ—ভারতবর্ষকে আমরা কি চোখে দেখি ృ99 সভ্যতার অসুশীলন ও আদর করেন । চীনদেশে কয়েক বংসর হইল সাধারণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হইয়াছে। তাহার পূৰ্ব্বে মাধু বংশের সম্রাটের রাজত্ব করিত। এখনও তাঙ্গাদের বংশধৰ ভূতপূৰ্ব্ব সম্রাটু জীবিত আছেন । এই মাধু বংশীয় সম্রাটের ও তাহদের অনুচরেরা মাঞ্চুরিয়া হইতে আসিয়া চীন জয় করিয়াছিল । কিন্তু কালক্রমে মাঞ্চুঃ পূঃ সীন হইয়া যায় ; যেমন ইংলণ্ডবিজয়ী ডেন ও নরম্যানদের বংশধরেরা পূৰ্ণ ইংরেজ হইয়া গিয়াছে। মাধুরা বহু শতাব্দী হইতে, চীনদেশের অন্তন্তি অধিবাসীদিগের ন্যায় চীন সাহিত্য দর্শন ও শিল্প-আদির অনুশীলন করিয়া আলিতেছে । তাহাদের এখন আর স্বতন্ত্র কোন সাহিত্য ও সভ্যত নাই । o ইহা ঠিক কথা, যে, ভারতবর্ষে জাতিভেদ থাকায় ঔদ্বাহিক আদান-প্রদান দ্বারা অন্য অনেক দেশের মত একটা সম্মিলিত জাতির উদ্ভব হইতে পায় নাই । কিন্তু ভারতবর্যের প্রাচীন সভ্যতার জ্ঞান লাভ করিবার পক্ষে তাঙ্গতে কোন বাধা দেখিতেছি না । হিন্দুদের ভিন্নভিন্ন জা’তের মধ্যেও ত বৈবাহিক আদানপ্রদান চলে ন। কিন্তু নানা জাতের হিন্দুর মধ্যে প্রাচীন সংস্কৃত ও পালি সাহিত্যের রসজ্ঞ পণ্ডিত ব্যক্তি দেখিতে পাওয়া १iध्र । ভারতীয় মুসলমানদের যেমন প্রাচীন ভারতীয় সভ্যতার সহিত পরিচিত হওয়া কৰ্ত্তব্য, তেমনি ভারতীয় অ-মুসলমানদেরও মুসলমান সভ্যতার সহিত পরিচিত হওয়া উচিত । তাহার জন্য অবশ্য ফারসী ও আরবী জানিলে ভাল হয় । কিন্তু তাই ন জানিলেও অসুবাদের সাহায্যে প্রভূত জ্ঞানলাভ করা যায়। মুসলমানেরাও সংস্কৃত ও পালি না জানিলেও অনুবাদের সাহায্যে প্রাচীন ভারতীয় ধৰ্ম্ম, সাহিত্য ও সভ্যতার সহিত পরিচিত হইতে পাবেন । ভারতের খুব প্রাচীন ধৰ্ম্ম, সাহিত্য ও শিল্প প্রভৃতির কথা ছাড়িয়া দিলে দেখা যায়, যে, পরে সভ্যতার নানা শাখায় ও অঙ্গে হিন্দু ও মুসলমান উভয়ের প্রভাব আসিয়া পড়িয়াছে। ভারতীয় সঙ্গীত, চিত্রক লী, স্থাপত্য, প্রভূতিতে হিন্দু-মুসলমান উভয়ের কৃতিত্ব আছুে। মধ্যযুগের ও