পাতা:প্রবাসী (চতুর্বিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/১৪৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

১ম সংখ্যা ] প্রভৃতি উচ্চপদস্থ কৰ্ম্মচারীদের বেতন যদিও ভারতবর্ষ দেয় এবং যদিও তাহাদের কেহ-কেহ নামে দেশী মন্ত্রীদের র্তাবেদার, তথাপি তাহাদের নিয়োগ, বরখাস্ত, বেতনের হ্রাসবৃদ্ধি, ইত্যাদি বিষয়ে দেশেব কাহারও এমন-কি ভারত গবৰ্ণমেণ্টেরও, চূড়ান্স কিছু করিবার ক্ষমতা নাই । ৰিলাতে বসিয়া ভারতসচিব এইসব করেন । ইহা অসঙ্গত ব্যবস্থা । লী কমিশন ইহা কায়েম রাখিতে চান। মানে এই, যে, এখন যেমন সিবিলিয়ানরা নামে পাব্লিক্ সার্ভেণ্ট বা সৰ্ব্ব-সাধারণের সেবক হইলেণ্ড কার্যতঃ তাহদের প্রত্ব, ভবিষ্যতেও তাহাই থাকিবে । আমরা যত শীঘ্র সম্ভব এরূপ ব্যবহারের উচ্ছেদ সাধন করিতে চাই । ইংরেজ জাতি নিজেদের বাড়ীর থোরাকের জন্য অনেক জিনিষ রাখিয়া দেয়। যেমন, ইংরেজী সাহিত্যে স্বাধীনতার ভূয়সী প্রশংসা দুষ্ট হয় ! এই স্বাধীনতাটি তাহীদের নিজের ভোগ্য বস্তু ; তাহাদের অধীনস্থ “রঙীন" আদমীদের ভোগ্য নহে। তেমনি ইংরেজী একটি প্রবাদ বাক্য আছে, যে, সানাই-বাজনদারকে যে পয়সা দেয়, স্বরের ফরমাইস্টা করিবার অধিকারও ভাইfর । এটাও ইংরেজদের নিজের ভোগ্য বস্তু । ভারতীয়দের জন্য নিয়ম এই যে, ইংরেজ ঢাকী যে স্বরে ইচ্ছ। আমাদের পিঠের চামড়ার উপর ঢাক বাজাইবে, এবং তাহার মজুরীটা আমাদিগকে দিতে হইবে। যদি সিবিলিয়ানরা এখনকারই মত দেশের প্রভু থাকে, তাহাদিগকে বাগে আনিবার ভারতবর্ষের কাহারও কোন ক্ষমতা না থাকে, তাহা হইলে প্রাদেশিক আত্মকত্ত্বং, স্বরাজ্য প্রভৃতি কথার কোন মানে থাকে না । ভারতীয় ব্যবস্থাপক সভা লী কমিশনের নির্দেশসমূহ অগাহ করিলেও, গবর্ণমেণ্টের তৎসমুদয়ের অনুধায়ী ব্যবস্থা করিবার ক্ষমতা আছে, এবং সম্ভবতঃ সেইরূপ ব্যবস্থা হইবেও । অতএব দেশী প্রতিনিধিদের জয়কে শাব্দিক জয় বলা যাইতে পারে। - সংশোধিত ফৌজদারী আইনের এক অংশ রদ সংশোধিত ফৌজদারী আইনের এক অংশ-অনুসারে গবর্ণমেণ্ট, যে কোন সভা-সমিতিকে বে-আইনী বলিয়া ঘোষণা করিতে এবং উহার সভ্যদিগকে গ্রেপ্তার করিতে পারেন। এই আইন-অমুসারে কংগ্রেসের স্বেচ্ছাসেবক দলকে বেআইনী বলিয়া ঘোষণা করা হইয়াছিল, এবং শ্ৰীযুক্ত চিত্তরঞ্জন দাশ, পণ্ডিত মোতীলাল নেহরু প্রভৃতি স্বেচ্ছাসেবকদিগকে কারারুদ্ধ করা হইয়াছিল । সংশোধিত ফৌজদারী আইনের এই অংশ রদ করিবার বিবিধ প্রসঙ্গ—সকল দলের সম্মিলিত কংগ্রেস্ Ᏹ8© জন্য ডাঃ হরিসিং গৌড়ের প্রস্তাব ভারতীয় ব্যবস্থাপক সভায় গৃহীত হইয়াছে। ইহার রদ হইলেও গবর্ণমেণ্টের বিরাগভাজন লোকদিগকে জবা করিবার উপায় গবর্ণমেণ্টের হাতে অনেক থাকিবে । সকল দলের সম্মিলিত কংগ্রেস সকল দলের সম্মিলিত কংগ্রেস হওয়া আমরা খুব বাঞ্ছনীয় মনে করি । ইহার জন্য মিসেস বেসান্ট খুব চেষ্টা করিতেছেন। তাঙ্গার কারণ, বোধ হয়, তিনি বিলাতে স্বরাজ্য লাভের দরবার করিতে গিয়া বুঝিয়া আধিয়াছেন, যে, ছোট-ছোট এক-একটা দলের মতের প্রভাব বিলাতের লোকদের উপর আশানুরূপ বেশী হয় না। সম্মিলিত জাতির মতের প্রভাব বেশী । মহাত্মা গান্ধী বলিয়াছেন, যে, কংগ্রেস চবুকায় স্থতা কাটা,অস্পশু তা-নিবারণ,এবং হিন্দুমুসলমান প্রভৃতি সকল সম্প্রদায়ের মিলন-স্থাপন, এই কয়টি কাজ লইয়া থাকিবেন, এইরূপ সৰ্ত্তে তিনি সম্মিলিত কংগ্রেস করায় রাজী আছেন । তা ছাড়া তাহার ইহাও একটি মত, ঘে, “পরিবর্তনবিরোধী”রা অর্থাৎ যে-সব অসহযোগী এখনও আদালত-আদি সৰ্ব্ববিধ বর্জনের পক্ষপাতী তাহারা কৌন্সিলে প্রবেশের বিরুদ্ধে কোন আন্দোলন করিতে পারিবেন না । কংগ্রেসের বাহিরে সে-দলের ঘেরূপ ইচ্ছা তাহারা তদ্রুপ রাজনৈতিক আন্দোলন ও অন্যবিধ চেষ্টা করিতে পারিবেন । মিসেস বেসান্ট, চরকায় স্থত। কাটিতে রাজী গুইয়াছেন। চরকার সপক্ষে, আমাদের মতে, যাহা কিছু বলা যায়, তাহা আমরা একাধিক বার বলিয়াছি। কিন্তু চবুকাকে একটা জাদুঘন্ত্র বা জাদুমন্ত্রে পরিণত করিতে আমরা অনিছুক । যেভাবে ও ধে-কারণেই হউক, চরকা ঘুরাইলেই স্বরাজ্য কিম্বা জাতীয় সমৃদ্ধি লব্ধ হইবে, ইহা আমরা মনে করি না । তিব্বতী বৌদ্ধ লামারা এক-একটি প্রার্থন। চক্র ( প্রেয়ার হুঈল) হাতে লইয়া ঘুরায় । তাহার ভিতরে “ওঁ মণিপদ্মে হুম্‌” ইত্যাদি মন্ত্র লিখিত থাকে। পড়িয়াছি, যে, মঙ্গোলিয়ায় জললোতের শক্তি দ্বারাও বৃহৎ আকারের এইরূপ প্রার্থনা-চক্র খুরান হয় । এইরূপ ধান্ত্রিক উপায়ে মুক্তিলাভ হয় বলিয়া বিশ্বাস করা যায় না ; মুক্তি আত্মিক জিনিষ। সেইরূপ স্বরাজ্য ও জাতীয় ঐশ্বৰ্য্য লাভ জাতীয় প্রাপবত্তার দ্বারাতেই হইতে পারে। জাতির লোকদের আত্ম। অবশ্য বাহ নানা উপায় অবলম্বন করিতে পারে,নানা যন্ত্রের সাহায্য লইতে পারে ; কিন্তু ভিতরে স্বাধীন প্রবুদ্ধ আত্ম, স্বাধীন জাগ্ৰত প্রাণ চাই। তাছা থাকিলে, চরকা অবলম্বিত হইতে পারে, কিম্বা আর-কিছু অবলম্বিত হইতে