পাতা:প্রবাসী (চতুর্বিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/১৫৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

>8や জলে স্থলে আকাশে বিস্তৃত হচ্চে। মাটির উপর দিয়ে চলায় তারা থামূল না, মহাসমুদ্রেং পথে চিহ্নহীন পথে--মহাকায় জাহাজ ভাসালে । মামুষের পাখা নেই, তবু পশ্চিমের মানুষ বললে আমার পাখা চাই—সে আকাশপথে উড়ল । এখনও শেষ হয়নি আর কোন দিন যেন শেয না হয় । এই অন্তহীন জানার পথে, পাওয়ার পথে পশ্চিমের মাচুৰ্য আপনার জ্ঞানমাহাত্ম্য লাভ করেচে। এই মাহাত্মাই তা’কে বিশ্বশক্তির ক্ষেত্রে মহা অধিকার দিয়েচে । কিন্তু এই অধিকার বাহিরের সঞ্চয়কে আশ্রয় করার অধিকার নয়, সঞ্চয়কে নিভ্য অতিক্রম করার অধিকার । পশ্চিম কিন্তু এই কথাই আজ ভুলতে বসেচে। তার পাওয়ার মধ্যে আজ আপনাকে পাওয়ার থেকে অন্য জিনিষ পাওয়ার লোভ বেশি ঢুকেচে । সেই লোভের ধূলোয় আজ পশ্চিম তার উচ্চ শির লুটিয়েচে । সে আপনার সঞ্চয়ের মধ্যে বদ্ধ হ’ল । তার বাহিরের লোভ অস্তরের লাভের চেয়ে বড় হ’ল । পশ্চিম চলৎশক্তির দ্বারা ধনী, শক্তিশালী হ’য়ে উঠেছে, কারণ, চলৎশক্তিতেই আত্মার শক্তি, আত্মার মুক্তি ; অন্যদিকে সে তার গৃধু তার দ্বারা দুৰ্ব্বল হয়েচে, বদ্ধ হযেচে । চিরকালই সকল দেশেই বিষয়লোভ মানুষের কিছু-কিছু রয়েচেই। পাছে সেই লোভে আত্মার মহত্ব থেকে, মুক্তি থেকে সে বঞ্চিত তার ধৰ্ম্মসাধনায় তা’কে এই লোভের বিরুদ্ধে লড়াই করতে বলেচে। শত্রুপক্ষ যখন অত্যন্ত প্রবল ছিল না তথন লড়াই করা সঙ্গজ ছিল । আজ মানুষ নিজের জ্ঞানমাখাত্ম্যের সাহায্যেই বিষয়সংগ্রহকে অত্যন্ত প্রকাণ্ড করে’ তুলেচে । তার লোভের সামগ্ৰী এত নিরতিশয় প্রবল হ’য়ে উঠেচে যে, এই লোভ তার আত্মার জয়যাত্রাকে অবরুদ্ধ করেচে–-মনুষ্যত্ব আপন সত্য থেকে ভ্ৰষ্ট হ’য়ে পীড়িত হচ্চে, পীড়া বিস্তার কবৃচে । যে-আলোতে মন্দিরকে আলোকিত করার কথা ছিল সেই আলোকে পশ্চিম তার প্রমোদ-ভবনের আলো করে তুলেচে । যে-ব্রহ্মাক্সের দ্বারা সে বন্ধন ছেদন করবে কথা ছিল, সেই অস্ত্র নিয়ে সে আজ নিজেকেই মারতে বসেচে। হয়, এইজন্যেই প্রবাসী—অগ্রহায়ণ, ১৩৩১ ২৪শ ভাগ, ২য় খণ্ড চলতে-চলতে আমরা পাই, আবার ছেড়ে দিতেদিতেই আমরা অগ্রসর হু’তে পারি। পাওয়া এবং দেওয়া এই দুইয়ের সামঞ্জস্তেই আমাদের কল্যাণ। পাওয়ার মধ্যে দোষ নেই । যে অকিঞ্চন পাওয়া থেকে বঞ্চিত, সে কৃপাপাত্র । যে পায় কিন্তু রাপে না, দিয়ে দেয়, সেই মুক্ত । মাতুষকে আপনার সংগ্রহ থেকে বাচাতে হবে । কৰ্ম্মের অভ্যাসও মানুষের পক্ষে সংগ্রহ হ’য়ে উঠতে পারে । এইজন্যেই গীতায় আছে নিরাসক্ত হ’য়ে কৰ্ম্ম করতে হবে। অর্থাৎ কৰ্ম্ম থেকে যা পাই, তাতে যেন বদ্ধ না হই । ভারতবর্ষে আমরা দুৰ্ব্বলভাবে এই সত্যের বিরুদ্ধাচরণ করচি, আর পশ্চিম কবৃচে প্রবলভাবে । তাক্ট, সমস্ত পৃথিবী অrজ মরণের বিযে, অসত্যের বিষে জর্জরিত, কেননা, সংগ্রহে সত্য নয়। যে শক্তি আত্মার, পশ্চিম সেই শক্তি দ্বারা আত্মহত্য। কবৃচে । যে - শক্তি নিত্য অসীমের অভিমুখে প্রবহমাণ, তার অশেষ দুৰ্গতি হচ্চে। ভারতবর্যে তার প্রতি অবিশ্বাস, তাই অামাদের অন্ধকার আর যায় না । পশ্চিম সংগ্রহের পথে চলে একদিকে এগিয়েচে ; কিন্তু অন্যদিকে রিপু এসে তা’কে বেঁধেচে। ভারত আগে কোনদিন বলেনি দেশকে ধনী, ক্ষমতাশালী করলেই তার মুক্তি। ভারত বলেচে আত্মা যখন সবদিকে বন্ধনমুক্ত, তখনই যথার্থ মুক্তি ; কেবল অন্নবস্ত্রে মুক্তি বা রাজসিংহাসনে মুক্তি নেই । আজ ভারতবর্ধ পশ্চিমের মিথ্যা মুক্তির দিকে সলোভ দৃষ্টি করূচে আর ভাব চে ওদেব মত মুক্ত হওয়াটাই বুঝি বড় জিনিষ। কিন্তু পশ্চিম ধে মুক্তি লাভ করেচে সে ত যথার্থ মুক্তি নয় । সত্যই যে মুক্ত, সে অন্তকেও মুক্তি দেয়। যে দীপ আলোকিত সে দীপ সকলকেই আলোক বিতরণ করে । পশ্চিম যদি মুক্ত হ’ত, সে সকলকে মুক্তি দিত। ইংরেজ যাকে স্বাধীনতা বলে সেই স্বাধীনতার লুন্ধতায় সে পরাধীনতার নিগড়ে দেশবিদেশকে বাধ চে। সমস্ত পৃথিবীতে সে আজ দাসত্ব বিস্তার করে দিলে, সে যদি যথার্থ স্বাধীন হ’ত তা হ’লে এ কিছুতেই সম্ভব হ’ত না । কোন যথার্থ