পাতা:প্রবাসী (চতুর্বিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/১৫৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

২য় সংখ্যা ] সম্পদ মানুষ কেবল আপনার মধ্যে বদ্ধ করে' রাখতে পারে না । যে-জ্ঞান সকলের জন্যে উৎসর্গ-করা সেই জ্ঞানই জ্ঞান, যে মুক্তি সকলের বন্ধন মোচন করে, সেই মুক্তিই মুক্তি । মুক্তির নামে যে-শক্তি পরকে দাসত্বে উদালকের ব্রহ্মবাদ X8% বাধে সে-মুক্তি দাসত্বের জন্মভূমি—তাতে কারো কোন কল্যাণ হ’তেই পারে না । পুথিবীতে অনেক বড়-বড় সাম্রাজ্য ও ঐশ্বৰ্য্য এই ছদ্মবেশী দাসত্বের কাধে ভব দিয়ে রসাতলে নেমে গিয়েচে । উদালকের ব্রহ্মবাদ মহেশচন্দ্র ঘোষ উদালক আরুণি উপনিষদের একজন খ্যাতনাম ঋষি । ইগর পুত্রের নাম শ্বেতকেতু । উদালক শ্বেতকেতুকে ব্রহ্মবিদ্যা-বিষয়ে ধে উপদেশ দিছিলেন, তাঙ্গ ছান্দোগ্য উপনিষদের ষষ্ঠ অধ্যায়ে বিবৃত হইয়াছে। অদ্য আমরা তাঙ্কারই আলোচনা করিব । পিতার প্রশ্ন শ্বেতকেতুর বয়স যখন ১২ বৎসর, তখন পিতা তাহাকে গুরু-গৃহে প্রেরণ করিয়াছিলেন। শ্বেতকেতু বার বৎসর বেদ অধ্যয়ন করিয়া গুরু-গৃদ্ধ হইতে তখন পি ভ] তাহাকে বলিলেন— বেদ- আপ্যমুনের জন্ত প্র ষ্ট্যাগমন করিল। *শ্বেতকেতো ! তুমি ত মহামনা, পাণ্ডিত্যাভিমানী ও অবিনীত হইয়া ফিরিয়া আসিয়াছ । কিন্তু তুমি কি সেই উপদেশের বিষয় জিজ্ঞাসা করিয়াছিলে, ঘাহা দ্বারা অশ্রুত বিযয় শ্রত হওয়া হয়, অ-মত বিষয় মনন করা যায় এবং অজ্ঞাত বিষয় জ্ঞাত হওয়া যায় ?” শ্বেতকেতু বলিল—“ভগবন! প্রকার ?” সে উপদেশ কি পিতার উত্তর পিতা বলিলেন—“হে সৌম্য ! যেমন একটি মৃৎপিণ্ড জানিলেই সমুদয় মৃন্ময় বস্তু জানা যায়, বিকার বাক্যের অবলম্বন মাত্র, একটি নাম মাত্র ; কিন্তু মৃত্তিকাই সভ্য ; হে সৌম্য ! যেমন একটা স্ববর্ণ পিগু ভানিলেই সমুদয় স্ববর্ণময় বস্তু জানা যায় ; বিকার শব্দমূলক, নাম মাত্র ; কিন্তু স্ববর্ণই সত্য বস্তু –হে সৌম্য । যেমন একটি নখনি ক্লন্তন ( অর্থাৎ নরুণ ) জানিলেই সমুদয় লৌহময় বস্ব জানা যায় ; বিকার শব্বাত্মক, নাম মাত্র ; কেবল লৌহই সত্য,--হে সেীমা ! এই উপদেশ৪ সেষ্ট-প্রকfব !” ছ:ি ৬১ ৷ ব্যাখ্যা উদালক খাহা বলিলেন, তাহ সহজবোধ্য নহে ; এইজন্য ইহার কিছু ব্যাখ্য। অবশ্যক । তিনটি দৃষ্টান্তই একশ্রেণীর ; মুত্তিক এবং আমকুম্ভাদি একই বস্তু। কুম্ভ-শরাবাদি মুত্তিকাই । তবে যে কোন দ্রব্যকে কুম্ভ, কোন দ্রব্যকে শরাব বলা হয় তাহার কারণ ভাষা। ভাষার জন্তই ইহাদিগের ভিন্ন স্ন বোধ হইয়াছে। নতুবা এ-সমুদয়ের মধ্যে কোন পার্থক্য নাই । মুত্তিক এবং ইহার বিকার কুম্ভ-শরাবাদি, পুখঞ্চ বস্তু নঙ্গে, ইগরা একই বস্তু। স্ববর্ণ ও লৌহের দৃষ্টান্ত দ্ব রাও ঋষি এইরূপ কথাই বলিয়াছেন । ইহার পরে উদfলক ধfহা বলিলেন, তাহার অর্থ এই :--- জগতে নানা-শ্রেণীর বস্তু রহিয়াছে এবং প্রত্যেক শ্রেণীতেই অসংখ্য বস্তু । কিন্তু এইসমুদ্রায়ের কয়টি বস্তুর বিষয় আমরা জানিতে পারি। এক-এক করিয়া যদি প্রত্যেক বস্তুকেই জানিতে হইত, তাহা হইলে আমাদিগের পক্ষে জগতের জ্ঞান লাভ করা অসম্ভব হইত। কিন্তু জানিবার অন্ত একটি উপায় আছে । জগতে অসংখ্য কুম্ভ রহিয়াছে, প্রত্যেক কুম্ভের জ্ঞান লাভ করা অসম্ভব এবং এ-প্রকার চেষ্টা করাও অনর্থক । কিন্তু কুম্ভ মৃত্তিকারই একটি রূপ ।