পাতা:প্রবাসী (চতুর্বিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/১৬০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

২য় সংখ্যা ] করিয়া জিজ্ঞাসা করে, তুমি কি আমাকে চেন ? তুমি কি আমাকে চেন ? তাহার বাকু যতক্ষণ মনে লীন না হয়, মন প্রাণে লীন না হয়, প্রাণ তেজে লীন মা হয় এবং তেজ পরম দেবতাতে লীন না হয়, ততক্ষণ সেই পুরুষ তাহাদিগকে চিনিতে পারে। পরে যখন বাকু মনে লীন হয়, মন প্রাণে লীন হয়, প্রাণ তেজে লীন হয় এবং তেজ পরম দেবতাতে ( অর্থাৎ সৎ স্বরূপ পরব্রহ্মে ) লীন হয়, তখন সেই পুরুষ তাহাদিগকে চিনিতে পারে না । এই যে স্বল্পতম বস্তু ইহাই এই সমুদয় জগতের আত্মা, তিনিষ্ঠ সত্য, তিনিই আত্মা । হে শ্বেতকেতো ! তুমিই তিনি। ছা ৬।১৫। বাকু, মন ও প্রাণ এসমুদয় আত্মা নহে । এসমুদয়ের উৎপত্তিও আছে, বিনাশও আছে । মৃত্যুকালে বাক্ মনে লীন হয়, মন প্রাণে লীন হয়, প্রাণ তেজে লীন হয় এবং তেজঃ সৎস্বরূপে লীন হয় | ঋষি বলিতেছেন, সৰ্ব্ববস্তু যাহাতে লীন হয়, তাহা আত্মাই এবং মানবাত্মাই এই আত্মা । সৰ্ব্বশেষে উদালক শ্বেতকেতুকে বলিলেন—ঙ্গে সৌম্য! যদি কোন পুরুষের হস্ত বন্ধন করিয়া আনা হয় এবং বলা হয় এ-ব্যক্তি চুরি করিয়াছে, এব্যক্তি অপহরণ করিয়াছে, ইহার জন্য পরশু উত্তপ্ত কর—সে যদি চুরি করিয়া থাকে তাহা হইলে সে আপনাকে অসত্য বলিয়া প্রতিপন্ন করিবে । সেই অসত্যমন! অসত্যদ্বারা আপনাকে আচ্ছাদন করিয়া তপ্ত পরশু গ্রহণ করিবে. দগ্ধ হইবে এবং অবশেষে বিনাশপ্রাপ্ত হইবে । কিন্তু সে ব্যক্তি যদি সে কাৰ্য্য না করিয়া থাকে, তাহ হইলে সে আপনাকে সত্য বলিয়া প্রতিপন্ন করিবে, সেই সত্যাভিসন্ধ পুরুষ আপনাকে সত্যদ্বারা আচ্ছাদন করিবে, সে দগ্ধ হইবে না এবং অবশেষে মুক্তি লাভ করিবে । সেই ব্যক্তি যেমন এই স্থলে দগ্ধ হয় না এবং সে মুক্ত হয়, (তেমনি সত্যপরায়ণ یا به e : উদালকের ব্রহ্মবাদ >Q○ ব্যক্তি মৃত্যুর পর পাপে দগ্ধ হয় না, কিন্তু মুক্তি লাভ করে এবং সৎস্বরূপকে প্রাপ্ত হয় )। এই ষে স্বক্ষতম বস্তু, ইহাই সমুদয় জগতের আত্মা, তিনিই সত্য, তিনিই আত্মা । হে শ্বেতকেতো ! তুমিই তিনি । ছাঃ এস্থলে ঋষি বলিতেছেন, যে ব্যক্তি অসত্যাভিসন্ধ, সে মুক্তি লাভ করিতে পারে না। ষে ‘সত্যাভিসন্ধ’ সেই ব্যক্তিই সংস্বরূপকে লাভ করে । সেই সংস্বরূপ কে ? ঋষি শ্বেতকেতুকে বলিতেছেন, ‘তুমিই তিনি “তত্ত্বমসি’ অদ্য আমরা যে ব্ৰহ্ম-বাদের আলোচনা করিলাম, তাহার সারাংশ এই – (১) একটি সৎ বস্তু আছে, যাহা নিত্য ও অবিনাশী । ইহাকেই পণ্ডিতগণ ব্ৰহ্ম বা পরব্রহ্ম বলিয়া থাকেন । (২) উদালক পরিণামবাদী বা বিকারবাদী। যাহা কিছু আছে তাহা ব্রহ্মেরই বিকার বা পরিণাম । এই জগৎ ব্ৰহ্ম হইতে উৎপন্ন হুইয়াছে এবং ব্রহ্মেই লীন হইবে । (৩) বাকু, মন এবং প্রাণ বিকার বস্তু ; এসমুদয়ের উৎপত্তি আছে, বিনাশও আছে । (৪) জীবাত্মা বাগাদি হইতে পৃথক্ । জীবাত্মার উৎপত্তিও নাই, বিনাশও নাই । ইহা অবিকৃত সত্তা । (৫) স্বযুপ্ত অবস্থায় জীবাত্ম স্বরূপ প্রাপ্ত হয়। ইহাই ব্ৰহ্মত্ব-প্রাপ্তি বা ব্ৰহ্মাবস্থা । (৬) আত্মাই ব্ৰহ্ম। আত্মা ও জীবাত্মা একই বস্তু । জীবাত্মাই যে সৎস্বরূপ পরব্রহ্ম, ইহা বুঝাইবার জন্ত উদ্ধালক নয়টি দৃষ্টাঙ্গ দ্বারা নয় বার বলিয়াছেন, “তত্বমসি” তুমিই ব্ৰহ্ম। (৭) অজ্ঞানতাবশতঃই মানব ঝিতে পারে না ধে, “আমিই ব্ৰহ্ম ।” (৮) যখনই মানব বুঝিতে পারে যে ‘আমিই ব্ৰহ্ম', তখনই ধে মুক্তিলাভ করে । দেহাস্তে সে স্বরূপ প্রাপ্ত হয়। ইহাকেই লোকে বলে ব্ৰহ্মলাভ । ৬l ১৬ }