পাতা:প্রবাসী (চতুর্বিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/১৬৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

XV2e রতলমণি তাঙ্গাই চার পয়সার কিনিয়া ফেলিল । ভাবিল, বৰ্দ্ধমান কিংবা অগুলে এক পেয়ালা চা এবং কিছু মিষ্টি থাইয়া লইলেক্ট চলিবে! গাড়ী ছাড়িয়া দিল । তৃতীয় শ্রেণীর সস্থা যাত্রীর বস্তার ঠেলাঠেলির চোটে এক কোণে জড়পু টুলি হইয়া রতনমণি যে পরম মুখকর চিস্তায় বিভোর হইয়া পড়িল, সে-কথা না বলাই ভালো । যাহাই হউক, সহধৰ্ম্মিণীর কোষ্ঠী চিন্তার সঙ্গে-সঙ্গে তাঙ্গর পেটের চিস্তাও চলিতে লাগিল । এক-একটি করিয়া বাদাম ছাড়াইয়া কেiনবার গোসার পরিবর্তে বাদাম, আবার কখনও বা বাদমের পরিবর্তে থোপা মুখে দিয়া চিবাইতে-চিবাইতে ক্ষণে-ক্ষণে তাহার মনে হইতে লাগিল, সে যেন এই তিন নম্বরের কুলি-গাড়ী ছাড়িয়া কোথায় কোন-একটি স্থসজ্জিত বাড়ীর ভিতর প্রিয়ভমার রূপস্বধা গোগ্রাসে গিলিবার চেষ্টা করিতেছে । যাহা হউক, স্বপ্ন তাহfর আংশিক সত্যে পরিণত হইল, তাহার পরের দিন । সমস্ত রাত্রি এবং পরদিন সমস্ত দিনের বেলাটা কোন রকমে কাটাইয়া দিয়া রতনমণি ধখন সেই ইসমাইলপুরের ছোট ষ্টেশনে আসিয়া নামিল, সন্ধ্যা তখন প্রায় সাতটা । ট্রেণ হইতে নামিয়াই প্ল্যাটফরমের অন্ধকারে সে একবার তাহার কেঁাচার খুঁট দিয়া জুতা জোড়াটা ঝাড়িয়া লইল । তাহার পর মুখখানি একবার ঘষিয়া লইয়া সেইখানেই মিনিটকয়েক চুপ করিয়া দাড়াইল । পাচ-ছয়জন হিন্দুস্থানী ধাত্রী লোটা-কম্বল পুঁইয়া গাড়ী হইতে নামিল । জনদুই লোক, গাড়ীতে চডিবার জন্য ট্ৰেণ আসিবার পূর্ব হইতেই প্ল্যাট্রফরমের উপর ছুটাছুটি করিতেছিল। অদূরে একটা মিট্‌মিটে কেরোসিনের ‘ল্যাম্প-পোষ্টের কাছে দাড়াইয়া ধুতি-পর একজন ভদ্রলোক মাথায় কালোরঙের একটা টুপি পরিয়া টিকিট আদায় করিতেছিলেন। অন্ধকারে হয়ত কোনও আসামী টিকিট না দিয়াই তার ডিঙাইয়া ভাগিয়া পড়িবার মতলব করিতেছে ভাবিয়া রতনমণির দিকে তাকাইয়া তিনি গম্ভীর কণ্ঠে স্থাকিয়া উঠিলেন, এয়, তোম উধারসে মৎ যাও। গলার আওয়াজ শুনিয়া এবং চেহারা দেখিয়া রতনমণি এইবার তাহার শ্বশুর মহাশয়কে বেশ চিনিতে পারিল। প্রবাসী—অগ্রহায়ণ, ১৩৩১ . বেশ, বেশ, বাড়ীর সব মঙ্গল ত ? [ ২৪শ ভাগ, ২য় খণ্ড কাছে আসিয়া একটি প্রণাম করিতেই নিকুঞ্জবিহারী আনন্দাতিশধ্যে একেবারে লাফাইয়া উঠিলেন ; বিনাটিকিটের আসামী ভাবিয়া এখনই যে কি কাও করিয়া বসিয়াছিলেন তাহার ঠিক নাই,—সেজন্য তিনি একটুখানি অপ্রস্তুত হইয়াক্ট ভাড়াতাড়ি বলিতে লাগিলেন. এস, বাবাজী, এস, এস। আমি ত ভাবলাম বুঝি ব1– দেখ ছ ত বাবা, আমার এই কাজ, একদণ্ড ছুটি পাবার উপায় নেই । আমিই ধেতাম, নিজে গিয়ে নিয়ে আসব ভেবেছিলাম, কিন্তু—আরে শুক্দেউ ! না, থাক্ থাক, আমিই যাচ্ছি । এস বাবা রতন । বলিয়া ষ্টেশনের গোল-কঁাচ দেওয়া বাতিটা হাতে লইয়। তিনি বাসার দিকে চলিতে লাগিলেন । লাল কঁাকরের রাস্তার পাশেই ‘রেলওয়ে কোয়াটার", -ষ্টেশন হইতে বেশী দূরে নয়। - দরজার কড়া নাড়িয়া নিকুঞ্জবিহারী তাহার বড়ছেলের নাম ধরিয়া ডাকিলেন, হরিপদ ! হরিপদ ! তিন-ভাই-বোনে ঝগড়া করিতেছিল । এমন অসময়ে পিতার ডাক শুনিয়া তাহাদের বাগ বিতও হঠাৎ থামিয়া গেল। হরিপদ খুব জোরে-জোরে জ্যামিতি মুখস্থ করিতে লাগিল,---ক প সরল রেখাকে যদি সমদ্বিখণ্ডে বিভক্ত করিতে হয় তাহা হইলে—এ্যা, এ্যা—উ, শ্যামাপদ তাঙ্গার ছোট । দাদাকে টেক্কা দিয়া মিহিগলায় সেও চেঁচাইয়া উঠিল, মৃষিক-ব্যাঘ্র । বয়ে য ফলা আকার, ঘয়ে র-ফলা, - ব্যাঘ্ৰ, ব্যাঘ্র । মহাউপা নামে এক মুনি ছিলেন । একদিন তাহার আশ্রমের নিকট একটা কাক একটা ছোট ইন্দুর ধরিয়াছিল । নিকুঞ্জবিহারী আবার ডাকিলেন, শুনতে পাচ্ছি - নে হরে ! শুনতে পাবে কেন ? দাড়াও তোমাদের দুষ্টুমি বার করছি । বাবা ! বলিয়া তাহার কন্যা প্রভাবতী ছুটিয়া আসিয়া দরজা খুলিয়া দিল । কিন্তু দরজা খুলিয়াই বেচারা এমন বিপদে পড়িয়া গেল যে, না পারিল কোনও কথা বলিতে, না পারিল ছুটিয়া পলাইতে । মাথার কাপড়টা ভাড়াতাড়ি টানিয়া দিয়া দরজার এক