পাতা:প্রবাসী (চতুর্বিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/১৬৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

২য় সংখ্য। ] পাশে কবাটের অন্ধকারে দাড়াইয়া লজ্জায় সে যেন একেবারে মাটির সঙ্গে মিশিয়া গেল। রতনমণির বুকের ভিতরটা তখন টিপ চিপ, করিতেছিল। সামান্য একটুখানি উঠানের পরেই হাত-দুই চওড়া একটি বারান্দা, তাহার পরেই থাকিবার মত পাশাপাশি দুইখানি ঘর। উঠানের বঁাদিকে আর-একটা ঘরে রান্না চলে । সোজা কথায় ইহাকেই বাঙালী ষ্টেশন মাষ্টারের ‘বাংলো” কহে । যে-ঘরে হরিপদ ও শু্যামাপদর ভয়ঙ্করভাবে পাঠাভ্যাস চলিতেছিল, রতনমণিকে লইয়া অভ্যস্ত শশব্যস্ত হইয়া নিকুঞ্জবিহারী সেই ঘরে গিয়া ঢুকিলেন । বলিলেন, মাদুরটা ছেড়ে ওঠ, ওঠ, আজ আর পড়তে হবে না, ওঠ —দেখ, কে এসেছে— _ হরিপদ তাড়াতাড়ি উঠিয়া আসিয়া রতনমণির একটা হাতে ধরিয়া হাসিতে-হাসিতে বলিল, কখন এলেন জামাইবাৰু? এখ খুনি ? বিবাহের পর রতলমণি মাত্র দুইবার আসিয়া সপ্তাহখানেক এখানে থাকিয়া গিয়াছেন, কাজেই স্যামাপদ প্রথমে তাহাকে ভালো চিনিতে পারে নাই । এইবার চিনিতে পারিয়া বইগুলা সরাইয়া দিয়া সেও লাফাইয়া উঠিল। —বসো বাবা, বসে। —বলিয়া রতনমণিকে সেইখানে সাইয়। রাখিয় নিকুঞ্জবিহারী রান্নাঘরে গিয়া উপস্থিত ইলেন । দেখিলেন, জলস্ত উনানের উপর ভাত চড়াইয়া দয়া তাহারই একধারে বসিয়া প্রভাবতী নিতাস্ত অন্তমনস্কগবে তরকারী কুটিতেছে । বলিলেন, ঘি, ময়দা সব মাছে ত মা ? প্রভা তেমনি হেটুমুখেই ঘাড় নাড়িয়া বলিল, হঁ্যা । —৪ কি—আমাদের ভীত চড়িয়েছিস নাকি ? -ई]] । —তা বেশ, আমাদের জন্তে না হয় ভাতই হোক । কদেউএর বেী আসেনি ? বঁটির উপর প্রভা আর-একটা আলু কাটিতে-কাটিতে রে-ধীরে ৰলিল, এসেছিল। উনোন ধরিয়ে, জল-টল জামাতা বাবাঞ্জীউ >や> আচ্ছা, আমি আবার ডেকে দিচ্ছি । ময়দা মেখে’ লুচিগুলো বেলে-টেলে দিক। দেখিল মা, আজ একটু দেখে’-শুনে রাধিস্—বলিয়া নিকুঞ্জবিহারী আর সেখানে দাড়াইলেন না, তাড়াতাড়ি বাহিরে আসিয়া ষ্টেশনখালাসী শুকদেবের বাসার দিকে চলিয়া গেলেন। কুলীনের ঘরে আজ জামাই আসিয়াছে, আজ তাহার আনন্দের দিন, কিন্তু কাহাকে লইয়া আনন্দ করিবেন ? পাঁচ বৎসর পূৰ্ব্বে র্তাহার স্ত্রী চলিয়া গিয়াছেন, সেই সঙ্গে আনন্দ বলিতে র্তাহার যাহা-কিছু সবই ফুরাইয়াছে। মেয়েটা বড় হইয়াছে, বিবাহ দিয়াছেন, ছুদিন বাদে সেও পরের বাড়ী চলিয়া যাইবে,—থাকিবে ওই ছেলেদুটে । তাহাদের মানুষ করিয়া দিতে পারিলেই তাহার ছুটি --- হঠাৎ তাহার মৃত পত্নীর মুখখানি মনে পড়িয়া গেল। সজলচক্ষু দুইটা জামার আস্তিনে মুছিয়া লইয়। তিনি শুকদেবের দরজায় গিয়া ডাকিলেন, শুকদেউ ! ডাকিব মাত্র শিকে-ঝোলানো একটা কেরোসিনের ল্যাম্প হাতে লইয়া শুকদেব ও তাহার স্ত্রী বাহির হইয়া আসিল । শুকদেব বলিল, আপনি নিজে কেন এলেন বাবু, আমরাই যাচ্ছিলাম । শুকদেবের স্ত্রীর হাতের দিকে তাকাইয়া নিকুঞ্জ জিজ্ঞাসা করিলেন—তোমার হাতে ওটা কি বোঁ । শুকদেব উত্তর দিল । বলিল, ও কিছু না বাবু, সেই বাচ্ছ পাঠাটা আজ কেটে দিলাম। জামাইবাৰু এলেন, খাওয়াবেন কি বাৰু ? নিকুঞ্চবিহারী বলিলেন, তাই ত রে শুকদেউ, মেয়েট কি আর এত সব রাধতে পারবে ? শুকদেব ঈষৎ হাসিয়া তাহার স্ত্রীর দিকে একবার মুখ ফিরাইয়া বলিল—আমার বহু যে পাকা রাধুনী আছে বাবু, উহি সব দেখিয়ে দিবে। বাবুর দরজা পৰ্য্যস্ত তাহাদের পৌছাইয়া দিয়৷ শুকদেব বলিল,—আমি ইষ্টিশানে যাই বাবু, ছোটবাবু এসেছেন, আপনি ঘরে থাকুন। শুকদেব কিয়দ্ধর চলিয়া গিয়াছিল, এমন সময় ছুটিতেছুটিতে নিকুঞ্জবিহারী তাহার পশ্চাতে গিয়? তাতায় স্থtr=