পাতা:প্রবাসী (চতুর্বিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/১৮৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

২য় সংখ্যা ] ফুলি মাছ বেচিতে লাগিল । কিন্তু একদিন গ্রামের পুরোহিত কেনারাম চক্রবত্তীর পুত্র খেলারাম, তাইদের বাগানের পথে ফুলিকে এক পাইয়া পপ, করিয়া অঙ্গর হাতখানা ধরিয়া ফেলিল । ফুলি এক ঝটুকায় তাহার হাত ছাড়াইয়া লইয়া বাড়ী আসিল । বাড়ী আসিয়া মাছের চব ডাঁট টান দিয়া দূরে ফেলিয়া দিয়া ঘরের কোণে মুখ গুজিয়া কাদিতে লাগিল । ফুলিকে কাদিতে দেখিয়। রামচরণ ব্যস্ত হইয়া জিজ্ঞাসা করিল। ফুলি ?” ফুলি কিছুই বলিন্তে পারিল না। স্বামীর আদরের স্বরে তাহার ক্রনদনের বেগ বাড়িয়া গেল । রামচরণ, তাহার পাশে বসিয়া, জুতি কোমল-স্বরে ললিল, “কি হয়েছে, বল না ?

  • *

“কি হয়েছে ,র তখন ফুলি ভাঙ্গার অপমুনের কথা রামচরণকে বলিল । রামচরণ শুনিয়া গম্ভীর হইয়া রহিল । তাঙ্গার মুখে একটি কথাও বাহির হইল না। প্রতিহিংসা তখন রক্তলোলুপ হইয় তাহাকে উন্মত্ত করিয়া তুলিতেছিল। খানিকক্ষণ দুইজনেই চুপ করিয়ু। রহিল। তাহার পর রামচরণ বলিল, “কাদিসনে, ফুলি, তুই আর মাছ বেচতে ফুiসনে ৷” স্বামীর কথায় ফুলি কোন সান্থন পাইল না। মাছ তাহাকে বেচিতেই হুইবে,কিন্তু এ-অপমান সে রোজরোজ সহিবে কি করিয়া ? লজ্জা, অপমান, দুঃখ ও দুর্ভাবনা তাহার অসহনীয় হইয়া উঠিল । রূপ ও যৌবন,—যাহার জন্য তাহার এত লাঞ্ছনা, পথে-ঘাটে যাহাকে বাহির হইতে হইবে, দশজনের সামনে ধাহাকে দাড়াইতে হইবে— ভগবান তাহাকে যে কেন দিয়াছেন, তাহা সে ভাবিয়া পাইতেছিল না। তীক্ষ্ণচঞ্চু শকুনীর মস্ত তাহার মন, প্রবল আক্রোশে দেহের রূপ ও যৌবনকে যেন টানিয়া ছিড়িতে লাগিল । রাত্রে ফুলি বলিল, “কাল হ’তে শ’শের দিদির সঙ্গে বেরুব । সেও পাড়ায় ফেরি করে । দু’জনে এক পাড়ায় গেলে, বিক্রির তেমন স্থবিধে হয় না, তাই যেতাম না ।” রামচরণ কেবল বলিল, “তাই যাস ।” ফুলি ծԵ-ծ ( 8 ) ভোরে ঘরের কাজ সরিয়া ফুলি শশের দলির সঙ্গে বাহির হইয় গেল । তাহার একটু পরেই রামচরণ, একখান; মা হাতে করিয়া, কেনারাম চএবত্তীর বাগানের দিকে চলিল । বাগানের মাঝ দিয়া একটা সরু পথ গিয়াছে । জায়গাট: বড় নিরিবিলি । রামচরণ সেই পথ দিয়া চলিল । থানিকট। যাইতেই সে দেখিল, খেলারাম ও তাহার বন্ধু নদের-চাদ দু’জনে পথের মধ্যে দাড়াইয়া বিড়ি টানিতেছে । তাহাদের দেখিয়াই রামচরণ বুঝিতে পারিপ তাইfরা ফুলির অপেক্ষাতেই দ। ডাইয়! সেদিন পথে আছে । ফুলি আসে নাই, কিন্তু বন্ধুদ্বয় প্রতিমুহূর্চে ফুলির আগমন আশা করিতেছিল। কিন্তু ফুলির পর্বত্তে খোড় রামচরণকে দেখিয় দুইজনে একটু গা টেপটিপি করিয়া হাসিল । তার পর থেলারাম, রামচরণকে বলিল, “কি রে গোড়া কোথা যাচ্ছিস ?” রামচরণ তপন ঠিক থেলারামের পাশে আসিয়া উপস্থিত হইয়াছে। ইঠাং সে দা দিয়া খেলারামের ঘাড়ে একট। কোপ বসাঈয়া দিয়া বলিল “এই ভোমারি কাছে।” রামচরণের ডান হাতখান ধেমন অকৰ্ম্মণ্য, বা হাতথানা তেমনি সবল । স্বতরাং কোপ টা এত গুরুতর হইল যে, থেলারামের তৎক্ষণাং মৃত্যু হইল। নদের-চাদ “খুন” “খুন” বলিয়া চাংকার করিতে-করিতে খেলারামের বাড়ীর দিকে ছুটিল । তাহার চীৎকারে অনেক লোক আসিয়া জটিল । ঘটনা দেখিয়া সকলে শিহরিয়া উঠিল । রামচরণ পলাইবার কোন চেষ্টা করিল না । সকলে দখন তাহাকে ধরিয়া বধিয়া ফেলিল, তখনো সে উপরে আক্রমণের চেষ্টা করিল না । তৎক্ষণাং থানায় খবর দেওয়া হইল। রামচরণ যেজন্য থেলারামকে খুন করিয়াছে তাহা সকলেঙ্গ জানিতে পারিল । কেহ বলিল, “বেশ করেছে।” কেহ বলিল, “গায়ের দশ জনকে বললেষ্ট এর বিহিত হ’ড । এখন ঝুলুক্‌ ফাসিতে !" ংবাদ ছড়াইয়া পড়িতেই ফুলির কানে ৫ তাহ ঘাইয়া পৌছিল । সে তাহার মাছের চুবড়ি ফেলিয়া দিয়া, ছুটিয়। সেখানে আসিয়া উপস্থিত হইল । সে রামচরণকে কাহারে