পাতা:প্রবাসী (চতুর্বিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/১৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

૨૦ পাকাইয়া সিধা হইয়া দাড়াইয়া বলিল, “খবরদার, কার সঙ্গে কথা কইছিস্ মনে থাকে যেন । তোদের সব কাণ্ড-কারখানা দেখে আর ছেলেগুলোর ব্যবহারে আমার নিজের মনেরই ঠিক নেই, এর ওপর যদি মাতলামি করিস আমার সামনে—” সুনরা দুষ্টমির হাসি হাসিয়া বলিল, “মাত লামি ? শিউলি যদি তালের রস খাইয়ে বলে মাত লামি করিসনে, তবেই ত গেছি। আজ সকাল থেকে আমি তোর নেশীয় ভরপুর হয়ে আছি লছিয়া—ধৰ্ম্ম জানেন, আর কোন নেশা করিনি—তোর ভাবনার রস থেয়েছি, তোর গানের রস থেয়েছি, তাই বলছি তোর কথার রস খাইয়ে আমায় আর বেসামাল করিসনে—” লছিয়া রাগে চীংকার করিয়া উঠিল, বলিল, “যদি এখনও মুখ ন। সামলাস ত তোর উপযুক্ত শিক্ষা দেওয়াবে, আমি এক্ষুনি লোক জড় করে’ তোর যে-দশা আজ পৰ্য্যন্ত হয়নি তাই করাবো—” স্বনর শাস্তভাবে বলিল, “দেখ লছিয়া, আমাদের দু-জনের মধ্যে যে ঝগড়, তাতে কি লোক ডাকা উচিত ? আপোষ করে” নেওয়াই—” লছিয়া রাগে অন্ধপ্রায় হইয়া গিয়াছিল ; কিছু না পাইয়া উন্মাদের মত গালাগালি করিতে-করিতে কলের মাথার উপর হইতে স্বনরার পিরানটা টানিয়া ফাং ফাৎ করিয়া চিড়িয়া দিল এবং তাহাতেও তুপ্তি না হওয়ায় নিজের কলসীটা কলের শানের উপর আঁছাড় দিয়া চীৎকার করিয়া কাদিতে কাদিতে বাড়ীমুখে হইল । মুনরা ছেলেটাকে আজ ভুতে পাইয়াছিল –নিজের ছেড়া জামাট একবার চোখের সাম্নে মেলিয়া দেগিল, ভাঙা কলসীটার দিকে চাঙ্গিল, তাছার পর ছুটিয়া গিয়া রোরুদ্যমান লছিয়ার হাতটা ধরিয়া নিতান্ত বেদন-মিনতির স্বরে বলিল, “লছিয়া, ঢের ত হয়েছে, মাফ, কবু ; ফিরে’ চল, তোর কলসট কিনে’ দিই—” কথাট। হাবশ্ব সমস্ত শোনানো গেল না, কারণ হাত ধরিতেই লছিয়া গলা চিরিয়া চীৎকার করিয়া উঠিল এবং ঝণকি দিয়া ছাড়াইয়া লইয়া সজোরে স্বনরার গালে বিরাশি-শিক্কার একটা চড় বসাইয়া দিল, লাথি ছুড়িল প্রবাসী—কাৰ্ত্তিক, ১৩৩১ [ ২৪শ ভাগ, ২য় খণ্ড এবং রাগের আধিক্যে আর ‘পাদমপি চলিবার সামথ না থাকায়, রাস্তার মাঝে বসিয়া চুল ছিড়িয়া জাঃ কাড়িয়া এক কুরুক্ষেত্র-কাও বাধাইয়া দিল । স্বনরা হতভম্ব হইয়া দাড়াইয়া ছিল, এমন সময় কানে কাছে গুরুগম্ভীর আওয়াজ হইল, “ইসব কৌ—ন বাত বা ?” এবং সুনরা নিজে ফিরিয়া দেখিবার পূৰ্ব্বেই বৰ দৃঢ়মুষ্টিতে তাহাকে ফিরাইয়া পুনরপি প্রশ্ন করিল, “ম্বন্দর ইসব কৌন বাত বা ? ভালা আদমি কহলাবতাড় না ? অর্থাৎ ভদ্ধর লোক বলে’ তোমাকে সবাই জানে ত —তবে কি এ কাণ্ড-কারখানা ? মুনরা দেখিল, কলতলায় খানিকট ভিড় জমিয় উঠিয়াছে এবং সেটা তাহার দিকে অগ্রসর হইয়া আসি তেছে ; তাহার প্রশ্নকারী স্বয়ং হলুমান মাহতো–তাহাদে ‘মানজন’ অর্থাৎ মোড়ল । লছিয়া তেমনি জোর গলায় চীৎকার করিতেছিল “সাজা দাও ওকে, ও ভদর-লোকের মেয়ের গায়ে হাত দিয়েছে, কলসী ভেঙে দিয়েছে ; ওকে দেশ থেকে তাড়াও হারামজাদাকে । আমি আর এদেশে থাকৃতে চাইনে এখানকার ‘মানজনের মুখে ছাই দিয়ে, সমাজের মূ:ে ছাই দিয়ে, আর ও-হারামজাদার মুথে হুড়ে জেলে আজই এদেশে ঝাড় মেরে চলে যাবে আমি আর সেই হতভাগা বুড়ে মড়াটারও একটা ব্যবস্থা ক{ যে নিজের মাতনীর ইজ্জৎ রাখতে পারে মা— ।” কথাগুলোয় বৃদ্ধ হলুমান মাহতে স্থির গাম্ভীৰ্য্য হইতে হঠাৎ সপ্তমে চড়িয়া উঠিল ; স্থনরাকে একটা জবরদ ঝাকানি দিয়া বলিল, “ঠিক কথাই ত ; দাড়া এখাে তুই, উপযুক্ত সাজা তোকে দেওয়া হবে।” ছেলেমেয়ে গুলো বেজায় ঠাট্টা-গালাগালি লাগাইয়া দিয়াছিয় ত।তাদের বলিল, “এ’কে ঘিরে দাড়া, ধেম পালায় না।” মুনরা পালাইবার কোন লক্ষণ না দেখাইয়া গম্ভীর ভাবে দাড়াইয়া ব্লছিল। হলুমান রাগে কঁাপিতে-কঁাপিতে ধাইয়া লছিয়াকে লইয়া স্নেহভরে তাহাকে একবার বুৰে চাপিল, তাহার ধুলা ঝাড়িয়া দিল এবং তাঙ্গর কাপড় জামাগুলা গুছাইয়া দিয়া মুন্নার বাসার দিকে চলিল পিছন ফিরিয়া স্বনরাকে বলিল, “চল, এগে, আৰু