পাতা:প্রবাসী (চতুর্বিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/২০১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ువెచ్చి বাহির বাড়ীতে স্বখেন্দুর নিকট খবর পাঠাইলেন। রাগে দুঃথে তাহার আপাদমস্তক জলিতেছিল। কানাইলাল অত্যন্ত অপ্রস্তুত হইয়া পড়িয়াছিল । এবং কেহ বলিবার পূৰ্ব্বে চোরের মত একপার্শ্বে যাইয়া দাড়াইয়া ছিল । সে যখন দেখিল, স্বখেন্দুর নিকট খবর গেল, তখন তাহার অন্তরাত্ম ভয়ে কঁাপিয়া উঠিল । না জানি বলাই এর কতগুণ শাস্তিই আজ তাহাকে গ্রহণ করিতে হইবে । কিন্তু সে একটুও নড়িল না । সেইখানে মানমুখে একভাবেই দাড়াইয়া রহিল। খবর পাইয়া ব্যস্ত হইয়া স্বখেন্দু আসিয়া উপস্থিত হইলেন । শৈলবালা কহিল, "দেখ ছেলেটা আর নেই, হাতখানা একেবারে গুড়ো-গুড়ো করে দিয়েছে।” স্বথেন্দু বিরক্তিপূর্ণশ্বরে জিজ্ঞাসা করিলেন, “কে দিলে ?” শৈলবাল কহিল, “আর কে দেবে ? যে দেবার সেই দিয়েছে।” তার পর সমস্ত ঘটনা ব্যক্ত করিয়া কহিলেন, “নিতাইএর ছেলে ত! প্রজ-মনিব সম্বন্ধ, কাহাতক এসকল বরদাস্ত করা যায় ?” সুখেষু রোষপূর্ণ-দৃষ্টিতে একবার কানাইলালের দিকে চাহিলেন । কিন্তু কিছুই বলিলেন না । শাস্তির দিকে ফিরিয়া কহিলেন, "মাকে একবার ডেকে আনবি— যা ত ?” o মহেশ্বরী নিজের ঘরে বসিয়া ময়নার সহিত কথা বলিতেছিলেন । বৃষ্টির শব্দে তিনি এসকল কিছুই শুনিতে পান নাই । শাস্তি ভীতমুখে গিয়া কহিল, “বড়-মা ! বাব। ডাকৃছেন ।” মহেশ্বরী বলিলেন, “কেন রে ?” কিসের একট। আশঙ্কায় তাহার মন চঞ্চল হইয়া উঠিল। শান্তি কেবল বলিল, “তুমি, শীগগির করে’ এস— দেখবে। শাস্তি সেই পায়ে ফিরিয়া গেল। : মহেশ্বরী চঞ্চলপদে আসিয়া দেখিলেন, বলাই তাহার মাতার ক্রোড়ে ঢলিয়া পড়িয়াছে। শৈলবালা চুণ ও হলুদ গরম করিয়া তাহার হাতে লাগাইয়া দিতেছেন। প্রবাসী—অগ্রহায়ণ, ১৩৩ [ ২৪শ ভাগ, ২য় খণ্ড কানাই জড়সড় হইয়া নিতান্ত অপরাধীর স্তায় এক-পাশ্বে দাড়াইয়া আছে। মহেশ্বরীর বুঝিতে বাকী রহিল না যে, তাহার অশান্ত ছেলেটিই এই দুর্ঘটনা ঘটাইয়াছে। স্বখেন্দু বিরক্তিপূর্ণ-স্বরে কহিলেন, “মা ! কানাইটে বড় বেড়ে উঠেছে। ওকে আর একমুহূৰ্ত্তও এখানে রাখা যায় না। আমি এখনিই নবীনকে আনতে লোক পাঠাচ্ছি।” মহেশ্বরী যেন অনায়াসেই কহিলেন, “ত পাঠাও— নিয়ে যাক এসে। এখন ত সেয়ান হয়েছে—আপদবালাই নেই।” তার পর কানাইএর এক-গোছ চুল ধরিয়া জিজ্ঞাসা করিলেন, “দিব্যি ভালোমানুষের মতন দাড়িয়ে আছিস যে ! বলি এ হয়েছে কি?” এই বলিয়া চুল ধরিয়া একটা ঝাকুনি দিলেন। কানাই আৰ্ত্তম্বরে কহিল, "আমার শিলটে নিলে কেন ?” বলাই তাহার বেদনা ভুলিয়া গিয়া বলিয়া উঠিল, "ওর বুঝি ? আমি আগে ধর্লাম না ?” মহেশ্বর চুলে আর-একটা বাকুনি দিয়া কহিলেন, “হতভাগা কোথাকার,—আমার শিলটে নিলে কেন ?— আকাশ থেকে তোর নাম লিখে পাঠিয়েছিল—নয় ?” মহেশ্বরী তখন বলাইকে তাহার মাতার ক্রোড় হইতে নিজের ক্রোড়ে লইয়া বসিলেন । এবং বেদনার স্থানে আগুনের সেক দিতে লাগিলেন । স্বখেন্দু কহিলেন, "শেষটা একদিন একটা প্রাণ নষ্ট করে বসবে ] কি বলে মা ? সে-কথার উত্তর না দিয়া মহেশ্বরী বলিলেন, “বললাম যে নবীনকে ডেকে পাঠা ! নিয়ে যাক না যেখানকার আপদ সেইখানে ৷” মার মত আছে বুঝিয়া স্বখেন্দু তখন নবীনকে আনিবার জন্ত লোক পাঠাইলেন । মহেশ্বরী আপনার ঘরে আসিয়া বাক্স খুলিয়া কানাইএর কাপড়, জামা, জুতা যেখানে যাহা ছিল খুজিয়া-খুজিয়া বাহির করিতে লাগিলেন। বলিলেন, “নে—তোর জিনিস-পত্তর কোথায় কি আছে দেখে’-শুনে নে ৷” জিনিস-পত্রগুলি গোছাইয়া লইয়া বেঁচেকা বাধা যে