পাতা:প্রবাসী (চতুর্বিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/২০২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

২য় সংখ্যা ] বামুন-বাগদী సిలి তাহার পক্ষে সম্বুপায় নহে, সে তাহা বুঝিতেছিল, এবং গালের মধ্যে একটি আঙ্গুল পুরিয়া দিয়া সজল-চক্ষে ভাইয়া ছিল। মহেশ্বরী একে-একে সকল বাক্সপেট্রা খুলিয়া, কোথায় কি আছে না আছে সকলই খুজিতে লাগিলেন। এবং যখন যে পরিচ্ছদটি বাহির হইতে লাগিল, অম্নি টান মারিয়া ছড়িয়া ফেলিয়া দিতে লাগিলেন। একবার বালকের দিকে মুখ ফিরাইয়া কহিলেন, "ই করে দাড়িয়ে রইলি যে ! দেখে নে না কোথায় কি আছে! আমাকে জালা'তে দু-একটা রেখে যাবি নাকি ?” কানাই এবার কথা বলিল । “কোথায় যাবো বড়-মা ?” মহেশ্বরী কহিলেন, “কেন, নবীনের কথা তোকে দু’শো দিন বলিনি ? তোর দাদা হয়। ডাকৃতে পাঠিয়েছে, এলে তা’র সঙ্গে চলে যা।” গাল ফুলাইয়া কানাই বলিল, “আমি যাবে না।” মহেশ্বরী জোর-গলায় কহিলেন, “যাবিনে—থাকবি কোথায় ? এবাড়ীতে তোর জায়গা হবে না।” স্বচ্ছন্দে সে বলিল, “কেন ?” “কেন তা এখনও বুঝতে পারিস্নি ? ও আমার কপাল! তুই লোকের হাত-পা খোড়া কবৃবি—চোখ কানা কববি—লোকে সইবে কেন ?” কানাই যুক্তিতে হারিবার পাত্র নয়। সে কহিল, “আমি ত তাদের কাছে থাকৃতে যাচ্ছিনে ?” মহেশ্বরী হাসিয়া ফেলিলেন । বলিলেন, "হারামজাদার জোর দেখ! তুই আমার ছেলেদের খুন কবি, আর আমি—”। মহেশ্বরীর ঠোঁটে আটুকাইয়া গেল । কিন্তু পরক্ষণেই মুখ দিয়া বাহির হইয়া পড়িল, "তোকে নিয়ে পড়ে থাকৃব ?” আস্তে-অাস্তে কহিল, কানাই সেইখানে বসিয়া পড়িল । বলিল, "আর করব না।" “সে-কথা আমার কাছে বললে কি হবে, তারা শুনবে কেন ?” মহেশ্বরী তখন কানাইলালের জিনিসপত্রগুলি একে একে পাট করিয়া তাহার টিনের বাক্সে পুরিয়া রাখিলেন। સ્વ: -૧ তার পর গুহের বাহির হইয়া গেলেন। র্তাহার জীবনের সায়াহ্নে এই যে একটা আকর্ষণ-নক্ষত্রের স্কায় ছিটুকাইয়া আসিয়া তাহার প্রাণের গোড়ায় বাধন ফেলিয়াছে, ইহাকে তিনি আর কিছুতেই ঠেলিয়া ফেলিতে পারিতেছিলেন না ; তিনি সেই পায় চাটুয্যেদের বাড়ী আসিয়া ডাকিলেন, “ক্ষ্যস্ত-দি নাকি বাপের বাড়ী যাবে শুনছিলাম ?” ক্ষান্ত তাড়াতাড়ি বাহির হইয়া আসিলেন। বলিলেন, "ই। ভাই এসে বসে’ রয়েছে, কাল যাবো ভাবছি।” মহেশ্বরী কহিলেন, “আমি ও ত ঘাবো-যাবে অনেক দিন থেকে মনে করছি। চল—তোমার সঙ্গেই গিয়ে দিনকতক বেড়িয়ে আসি।” ক্ষান্ত পুলকিত হইয়া কহিলেন, “বেশ ত! ভালোই হবে। দূরের পথ—দুই বোনে বেশ যাওয়া যাবে।” এইরূপে ক্ষান্তর সহিত পিতৃভবনে যাওয়ার বন্দোবস্ত করিয়া মহেশ্বরী গৃহে ফিরিলেন । নবীনের আসার পূর্বেই যে তাহার কোথাও-না-কোথাও বাহির হইয়া পড়া চাই। মহেশ্বরী গৃহে আধিয়া আবার বাক্স-পেটরা খুলিলেন ও নিজের জন্ম গোছ-গাছ করিতে লাগিলেন । শৈল সেসকল দেখিয়া জিজ্ঞাসা করিল, "এ কি হচ্ছে, মা ?” - মহেশ্বরী কহিলেন, “এক-জায়গায় মাটি কামূড়ে পড়ে থাকৃতে আর ভালো লাগছে না, দিন-কতক বেড়িয়ে আসি ৷” “কোথায় যাবে ?” “বাপের বাড়ীতেই যাই । সেই নৌকোতেই যাবো।” শৈলবালা আর কিছু বলিতে সাহস করিল না। সে স্বামীর নিকট যাইয়া সকল কথা বলিল । স্থখেন্দু মাতার ঘরে প্রবেশ করিয়া কহিলেন, “মা ! তোমার টাকা-পয়সার কি খুবই অভাব হয়েছে যে, ক্ষান্ত মাসীর নৌকোয় যাবে ? এমন ত কোন দিন যাও না।” মহেশ্বরী কহিলেন, “তা’তে আর হ’ল কি ? একজায়গার মেয়ে, পড়েছিও পাশাপাশি ঘরে, তাতে দোষ নেই।” ক্ষান্ত দিদি যাচ্ছেন,