পাতা:প্রবাসী (চতুর্বিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/২০৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

২য় সংখ্যা J. * > বামুন-বাগদী ఫె(t পরেশ বলিল, “দেশস্কন্ধ মন্তর পড়ে রয়েছে, মচ কঘার মস্তরটি তোমায় পেয়ে বসূল কেন ?” কানাই কিছু অসন্তুষ্ট হইয়। কহিল, “তুমি দেবে কিনা বলো ?” পরেশ কহিল, “দেবো না কেন ? বিনা পয়সায় কি হয় ? টাকা লুাগে।” কানাই ভাবিয়া কহিল, “ক’ টাকা ?” পরেশ বলিল, “চার টাকার কম হয় না, তুমি ছটাকা দিলে হবে ।” - কানাই আর কোন কথা না বলিয়া উঠিয়া গেল । সে জানিত মহেশ্বরীর বিছানার নীচে খরচপত্রের জন্য প্রায়ই দু-দশ টাকা থাকিত। সে চুপিচুপি গৃহে প্রবেশ করিয়া বিছানা তুলিয়া দেখিল, পাচটি টাকা রহিয়াছে। সে তাহা হইতে দুইটি টাকা লইয়া পরেশের নিকট আসিল । কতদিন কত টাকা-পয়সা তাহার চোখের উপর ছড়ানো থাকিত, সে একটি পয়সায়ও কোনদিন হাত দিত না । আজ সে তাংরি এক-পাপের প্রায়শ্চিত্ত করিতে আর-একটি পাপ করিয়া বসিল । পরেশের নিকট টাকা দুইটি রাখিয়া সে কহিল, “এই নাও-কিন্তু এই বেলার মধ্যে মুখস্থ করিয়ে দিতে হবে i* - টাকা দুইটি এবং বালকের তাড়াহুড়া দেখিয়া পরেশ কিছু আশ্চৰ্য্য হইল। যা হোক সে কোন উচ্চবাচ্য না করিয়া টাকা দুইটি তুলিয়া লইল এবং কানাইলালকে মন্ত্র শিক্ষণ দিতে লাগিল । কানাই বেশ মেধাবী ছিল। দু-দশবার আবৃত্তি করিতে তাহার অনেকটা আয়ত্ত হইয়া উঠিল । সে একবার ভীতভাবে জিজ্ঞাসা করিল, “মিথ্যে মিথ্যে শেখাচ্ছ না ত ?” পরেশ কহিল, “টাকা পেলাম, মিথ্যা কেন শেখাবো ?” তবু কানাই নিশ্চিন্ত হইল না। সকল সন্দেহ আগেই মিটাইম রাখিবার জন্য সে বলল, “আমায় দুয়ে বলছ ? থাটবে ত ? আমি কিন্তু আজই খাটিয়ে দেখব।” পরেশ কহিল, “তা দেখ, বালকের সঙ্গে কেউ মিথ্যে ব্যবহার করে ?” সত্য-সত্যই পরেশ কোন মিথ্যা আচরণ করিল না । সে ঝাড়-ফুক সবই ঠিক-ঠিক শিখাইয়া দিল। কানাই তখন হষ্টচিত্তে গৃহে ফিরিয়া আসিল । এবং কি সুযোগে বলাইএর ঘরে প্রবেশ করিতে পারা যায় তাহারই অনুসন্ধান করিতে লাগিল। থাকিলই বা জল— থাকিলই বা বড়-বাবুর খাবার-সামগ্ৰী—ভtহাকে আজ সে-ঘরে প্রবেশ করিতেই হইবে । না হয় জল নষ্ট হওয়ার জন্য সে আজ একটা শাস্তিই পাইবে। শাস্তিকে সে আজ ভয় করে না। সারাদিন সে বলাইএর গৃহপথের দিকে দৃষ্টি পাতিয়া রহিল। তার পর সে এক সময় দেখিল, ঘরে কেহই নাই—শাস্তিও না। বাহিরে আর-এক মুহূৰ্ত্তও কানাই দাড়াইতে পারিতেছিল না। চঞ্চল-চরণে এই অবকাশে সে গৃহ-মধ্যে প্রবেশ করিল। বলাইএর তখন একটু তন্দ্ৰা আসিয়াছিল। কানাই আস্তে আস্তে তাহার শিওরের কাছে বসিয়া স্ফীত স্থানটা টিপিয়া-টিপিয়া দেখিতে লাগিল। বলাই চমকিত হইয়া উঠিল। কানাইকে দেখিয়া সে চোখ রাঙাইয়া কহিল, “মাকে ডাকূব – আমার হাতে ব্যথা দিচ্ছ ” সস্তপণে হাত সরাইয়া কথায় স্নেহের স্বর ঢালিয়া কানাই কহিল, “ব্যথা দিইনি ত, দেখছিলাম। কমেছে ?” কানাইএর উপর আক্রোশটা বলাইএর মনে তখনও উদাম হইয়া ছিল । সে উদ্ধতভাবে বলিল, “তা শুনে? তোমার কাজ কি ? তুমি সরে যাও।” কানাই যে বলাইএর ঘরে প্রবেশ করিল, অন্ত ঘর হইতে স্বখেন্দু তাহ দেখিতে পাইলেন। তিনি মহেশ্বরীর নিকট আসিয়া বলিলেন, “দেখ গিয়ে মা ! ছোড়াটা ঘরে ঢুকে পড়েছে। সবই দেখছি ফেলে দিতে হবে।” জানিয়া-শুনিয়াও কানাই লুকাইয়া এঘরে ঢুকিল দেখিয়া মহেশ্বরীর মনে সন্দেহ জাগিল,—তিনি বুঝিলেন এ স্নেহের টান। তখন মাতা-পুত্র অধু-ঘরে ঢুকিয়া তাহদের কথা-বাৰ্ত্ত শুনিতে লাগিলেন। ব্যথিত কানাই কহিল, “রাগ করেছিল, ভাই ?” বলাই বলিল, “করব না রাগ ? তুমি ফেলে’ দিলে কেন ?” “তুই শিলটা ধৰ্বলি কেন ?”