পাতা:প্রবাসী (চতুর্বিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/২৩০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

২য় সংখ্যা ] করেছি, দ্বিতীয় অধ্যায়ে সেট। স্মরণ রাখলে বোধ হয় অনেক দুঃখ অতিক্রম করতে পারব।” আর কোনও কথা না বলিয়া বিমান দেওয়ালে অবস্থিত রাজপথ্য-চিত্রাবলীর দিকে একদৃষ্টে কিছুক্ষণ চাহিয়া রহিল। বোধ হয় সে সেই সুযোগে তাহার উদ্যত উদ্বেল হৃদয়কে শাস্ত করিয়া লইবার চেষ্টা করিতে লাগিল “মাধবী !” “কি বলুন।” মাধবীর কম্পিত-আৰ্বস্বরে চমকিত হইয়া বিমান চাহিয়া দেখিল, মাধবীর নেত্রপ্রান্ত অশ্রুসিক্ত ! সে কিন্তু তাহার কোনও উল্লেখ না করিয়া বলিল, “মাধবী, আমাকে তোমাদের এই রাজপথের পথিক করে” নেবে ? আমি তোমাদের পথের আবর্জন। পরিষ্কার করব ।” বিমানবিহারীর এ-কথায় মাধবীর মুখে মৃদু হাস্য দেখা দিল। সে বলিল, “পারবেন ? সে যে ভারি শক্ত কাজ !” অপ্রতিভ হইয়া বিমান বলিল, “তা বটে ! নিজের ক্ষমতার মানটা আমি পদে-পদে ভূল করি বলে আমার এত পদস্খলন হয় ।” বিমানবিহারীর দুঃখ প্রকাশে ব্যথিত হইয়া মাধবী বলিল, “না, না, আমাকে ক্ষমা করবেন বিমানবাবু, আমার ও-কথাটা বলা অন্যায় হয়েছে । কারণ আমার মনে হয় যে, রাজপথের অনেক কাজই আপনি করতে পারেন ।” ক্ষণকাল মাধবীর দিকে নিঃশব্দে চাহিয়া থাকিয়া বিমানবিহারী বলিল, “এ তোমার মনের বিশ্বাস ?” “হ্যা, আমার মনের বিশ্বাস ।” প্রসন্নমুখে বিমান বলিল, “তোমার কথা শুনে আমার মনে আশী হচ্ছে, মাধবী ! মনে হচ্ছে, আমার জীবনের দ্বিতীয় অধ্যায়ট প্রথম অধ্যায়ের মতন নিষ্ফল না হ’তেও পারে!” রাজপথ ૨૨૪ এ-কথার কোনও উত্তর না দিয়া মাধবী নতনেত্রে দাড়াইয়া রহিল । তাত-ঘরে সমস্ত দ্রব্যাদি দেখিয়া প্রস্থান করিবার সময়ে বিমান মাধবীকে বলিল, “স্থমিত্রার বিষয়ে অনেক কথাই তোমাকে আজ বললাম মাধবী, কিন্তু আসল । কথাটাই এখনও বলা হয়নি। মুরেশ্বর জেল থেকে বা’র হবার আগেই মুমিল্লার সঙ্গে স্বরেশ্বরের বিয়ের সমস্ত ব্যবস্থা বরে' রাখতে হবে। অবশ্য এ বিষয়ে আমি এক দিকের সমস্ত ভার নেব—কিন্তু তোমার সহায়ত৫৪একান্তভাবে চাই ।” ; মাধবীর মুখ সহসা আরক্ত হইয়া উঠিল । সে অথচ শাস্ত ভাবে বলিল, “আমাকে ক্ষমা করবেন বিমানবাবু, আমি এ বিষয়ে বিছুমাত্র সহায়তা করতে পারব না।”

  • কেন ?" "কেন, তা জেনে ত আপনার কোনও লাভ নেই।” “তুমি কি চাও না যে, স্বরেশ্বরের সঙ্গে স্থমিত্রায়; বিয়ে হয় ?” *. “আমি কি চাই অথবা চাইনে—আমাকে ক্ষম, করবেন—আমি সে-কথা আপনাকে জানাতে भाद्रव." না! আমি কি করতে পারব না, সে কথা আপনাকে । জানিয়েছি।” ! একটা নিবিড় অন্ধকারে বিমানবিহারীর মুখমণ্ডা! আচ্ছন্ন হইয় গেল। ক্ষণকাল সে নীরবে কি চিৰাষ্ট্র করিল, তাহার পর “আচ্ছ, তা হ’লে থাক। এখন আমি’। চললাম।” বলিয়া ধীরে-ধীরে প্রস্থান করিল। o মাধবীর একবার মনে হইল যে, একট। কথা বিমানকে : ডাকিয়া বলে, কিন্তু পাছে সেই একটা কথাকে উপলক্ষা করিয়া একাধিক কথা আসিয়া পড়ে, সেই আশঙ্কায় চুপ করিয়া রহিল ।

( ক্রমশ: )