পাতা:প্রবাসী (চতুর্বিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/২৫২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

২য় সংখ্যা ] প্রথমে ভয় হইয়াiছল বুঝি বা অৰ্দ্ধচন্দ্র কপালে আছে ; কিন্তু লোকটির চেহারা দেখিয়া আমার সে ভয় একবারেই গেল । আসিয়াই আমাদিগকে অভিবাদন করিয়া তিনি বলিলেন, “বাবুরা বড়ই কষ্ট পাইয়াছ। আজকাল ঝড়জলের সময়, বিকেলে আসাটা অস্তায় হইয়াছে। যাক, তোমাদিগকে দেখিয়া আমার বড়ই আহলাদ হুইয়াছে— রাত্রে খাওয়া-দাওয়ার কি জোগাড় করিব ?” चाभांश्न भूक्ष श्३८ङ कथा वा श्ब्रि इ३८ङ नो श्हेटङद्दे স্বব্রাহ্মণ সব-ইনস্পেক্টার-বাৰুটি বলিলেন, "মোল্লা-সাহেব, আমাদের জন্য চিন্তিত হইবেন না ; আমরা কিছুক্ষণ বিশ্রাম করিয়া বৃষ্টি একটু থামিলেই – বাঙ্গলায় যাইব ।” “বাৰু, তাও কি হয় ? আমার অতিথি তোমরা আমি কি করিয়া তোমাদিগকে কিছু না খাওয়াইয়া ছাড়িয়া দিব ? তাহা হইতেই পারে না।” আবার চট্‌ করিয়া সব-ইনস্পেক্টার-বাৰু বলিয়া ফেলিলেন—“দেখুন মশায়, আমরা হিন্দুৱাহ্মণ আপনাদের গ্রামে আমাদের জন্ত ব্যবহার করিবার জলই মিলিবে না ; কি করিয়া আমরা আহার করি বলুন ?” আমি মনে-মনে বলিলাম, “আবাগের বেটা ভূত, তোমার পাল্লায় পড়িয়া আজ অনাহারে রাত্রিটা কাটাইতে হইল !" যাহা হউক মধ্যান্ধুে আহারটা কিছু গুরুতররকমের হইয়াছিল বলিয়া আহারের ইচ্ছাটা বড় ছিল না —স্বতরাং আমি আর দ্বিরুক্তি করিলাম না। মুসলমান ভদ্রলোকটি শুনিয়া বলিলেন, “ই বাবু, তুমি যাহা বলিলে, তাহা সত্য –কি করিব, এই দুর্যোগে অন্ত উপায় আপাততঃ দেখিতেছি না। তবে তোমরা যদি অভুক্ত থাক, তবে আমরা স্ত্রী-পুরুষ কিছুই আহার করিব না। আমাদের ধৰ্ম্মে বলে, অতিথিকে না খাওইয়া খাইও না। কিন্তু বাবু আমার একটি অনুরোধ—আজ রাত্রে আর যাইও না, কাল সকালে আমার সহিত দেখা না-হওয়া পৰ্য্যন্ত থাকিও । বুড়োর এই অমুরোধটি রাখিও ।” আমার দিকে তাকাইয়। বৃদ্ধ এই কথাগুলি বলিলেন । আমি তাহাতে সন্মতি দিলাম। এই ভীষণ ছর্বোগে রাত্রিকালে বাহির হইবার ইচ্ছাটা আমার মুসলমানের অদ্ভুত আতিথেয়তা ২৪ ৩ একেবারেই ছিল না। বৃদ্ধ আমার আশ্বাস পাইয় বড়ই আনন্দিত হইলেন। আবার জিজ্ঞাসা করিলেন, “আমাদের অন্তকোন জিনিসপত্রের দরকার হইবে কি না ।” আমি বলিলাম, “যদি দুইখানি শুষ্ক কম্বল দেন, তাহা হইলে বড়ই বাধিত হই।” বৃদ্ধ কম্বল আনিয়া দিয়া কিছুক্ষণ আমাদের নিকট বসিয়া নিজের স্থখ দুঃখের কথা বলিতে লাগিলেন । তাহার পুত্র নাই, একটি বিধবা কন্যা ঘরে আছে । চাষ-বাস করিয়া বৃদ্ধ অনেকগুলি ধান পান তাহাতেই তাহাদের সামান্য অভাব মোচন হয় । বাড়ীতে দুই তিনটি দুগ্ধবতী গাভী আছে ও হালের বলদওচার-জোড়া আছে। সে-রাঞিতে গোয়াল-ঘরটি আমাদিগকে ছাড়িয়া দিয়া বৃদ্ধ অন্য স্থানে তাহার গরুগুলি রাখিবার বন্দোবস্ত করিয়াছেন। রাত্রি ১১০ টার সময় বৃদ্ধ আমাদের নিকট বিদায় লইয়া গৃহাভ্যন্তরে চলিয়া গেল। আমরাও শুষ্ক কম্বল বিছাইয়া শয়নের উদ্যোগ করিলাম এবং কিছুক্ষণ পরেই নিদ্রিত হইলাম। রাত্রি তখন প্রায় দুষ্টট । মেঘ কাটিয়াছে। বৃষ্টিও নাই। চারিদিক নিস্তব্ধ। এমন সময় বাহিরে একটা কোলাহুলের ধ্বনি শুনিতে পাইলাম। ভয় হইল বুঝি ডাকাত পড়িয়াছে। চাপরাসীকে উঠাইয়া দিয়া বলিলাম, “দেখ ত বাহিরে কিসের শব্দ ?” সে উত্তর-পশ্চিম দেশীয় লোক ; গায়ে বল ত ছিলই, সাহসও ছিল। সে অবিলম্বে দরজা খুলিয়া বাহিরে গেল এবং আধঘণ্টার মধ্যে ফিরিয়া আসিয়া বলিল, “বাৰু, আপনাদের জন্য একটা কুয়া হচ্ছে । তাই লোকজনের এত শব্দ। সেই মুসলমানটি রাত্রেই গ্রামান্তরে গিয়া কতকগুলি হিন্দু মজুর লইয়া আসিয়া কুয়া খুঁড়িতে আরম্ভ করিয়া দিয়াছে।” অবগু এখানে বলিয়া রাখা উচিত, যে ঐ জিলায় ৫৬ হাত খুড়িলেই কুয়ার জল পাওয়া যায় । আমি ত শুনিয়া অবাকু । হিন্দু-ব্রাহ্মণের পানীয় জলের বন্দোবস্ত করিয়া দিবার জন্ত রাত্রি দুই প্রহরের সময় উঠিয়া বৃদ্ধ গ্রামান্তরে গিয়া · হিন্দু মজুর সংগ্ৰহ করিয়া আনিয়াছেন । ঢের আতিথেয়তার কথা শুনিয়াছি, কিন্তু এরকমের অতিথি-সংকারের কথা ত কখনও শুনি নাই। ধন্য মুসলমান বৃদ্ধ, তুমিই ধন্য ! শাস্ত্ৰে শুনিয়া আসিতেছি