পাতা:প্রবাসী (চতুর্বিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/২৭৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বঙ্গে সশস্ত্র বিদ্রোহবাদী ভারতবর্ষের রাষ্ট্রীয় লক্ষ্য-সম্বন্ধে প্রধানতঃ দুইরকম মত দেখা যায় –(১) ভারতবর্ষের সম্পূর্ণ স্বাধীন হওয়া উচিত ; (২) ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের অন্তর্গত থাকিয়া কানাডা প্রভৃতির মত স্বায়ত্ত-শাসনের অধিকার ভারতবর্ষের পাওয়া উচিত। যাহারা দ্বিতীয় মতাবলম্বী, তাহার কেহু কেহ বা সকলেই এবম্বিধ ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক স্বায়ত্তশাসনকেই চরম রাষ্ট্রয় লক্ষ্য মনে করেন কি না, জানি না। কারণ কেহ কেহ এমন আছেন, যে, আপাততঃ ঐরূপ স্বরাজই চান, কিন্তু উহাকে সোপান-স্বরূপ করিয়া পরে সম্পূর্ণ স্বাধীন হইতে চান। আমাদের নিজের মত আমরা এইরূপ বলিয়া আসিতেছি, যে, পূর্ণ স্বাধীনতাই চাই, কিন্তু তাহা যদি ঔপনিবেশিক স্বরাজের পথ দিয়া হয়, তাহাতে আপত্তি নাই। ভারতবর্ষকে কি উপায়ে স্বাধীন করা যাইতে পারে, সে-বিষয়ে প্রধানতঃ দুইপ্রকার মত দেখা যায়। এক মত এই, যে, আমাদের স্বাধীনতালাভের বিরোধীদের রক্তপাত না করিয়াও ভারতবর্ষকে স্বাধীন করা যাইতে পারে। র্যাহারা এই মত পোষণ করেন, তাহারা ইহাও বলেন, ষে, প্রয়োজন হইলে স্বাধীনতাকামীদিগকে কিন্তু নিজের রক্ত নিজের ধনপ্রাণ সবই স্বাধীনতার জন্ত বলি দিতে হইতে পারে। দ্বিতীয় মত এই, যে, অন্ত্রবল ও অস্ত্রব্যবহার ব্যতিরেকে আমরা স্বাধীন হইতে পারিব না। মাঝামাঝি রকমের একটা মতও এই আছে, যে, অহিংসার পথে থাকিয়া চেষ্টা করাই ভাল ; তাহাতে ফল না হইলে অস্ত্রপ্রয়োগের চেষ্টা করিতে হইবে, এবং তাহ করা উচিত। র্যাহারা অস্ত্রবলে বিশ্বাস করেন, তাহার ইতিহাস বর্ণিত নানাদেশের স্বাধীনতা-সংগ্রামের মত কিছু করিu LLLu MBBDD u Bu HuS L HH নিৰ্মাণ ও নিক্ষেপ, রিভলভার সংগ্রহ ও তারা খুন, এবং “রাজনৈতিক ডাকাতি” ও খুন, এইসকলের সংবাদ খবরের কাগজে পড়িয়াছি বটে। এইসকল উপায়ে দেশকে স্বাধীন করা যাইতে পারে, আমরা বিশ্বাস করি না। কিন্তু দল যথেষ্ট পুরু এবং আয়োজন যথেষ্ট প্রচুর থাকিলে গবৰ্ণমেণ্ট কে কতকটা ব্যতিব্যস্ত করা যায় বটে। “ভদ্র’লোকদের দ্বারা সশস্ত্র ডাকাতি এবং তৎসম্পর্কে খুনের বিষয়ও খবরের কাগজে পড়িয়াছি। এইগুলি সমস্ত বা অধিকাংশই “রাজনৈতিক’ কি না বলিতে পারি না ; কিন্তু ইহার মধ্যে কেবলমাত্র রোজগারের জন্ত ডাকাতিও অনেক আছে—সে-বিষয়ে আমাদের সন্দেহ নাই। “ভদ্র’লোকদের দ্বার ডাকাতি এদেশে বা কোন দেশেই নূতন নহে । ইউরোপের জাৰ্ম্মানী, ইংলও প্রভৃতি দেশে অভিজাত ব্যারন প্রভৃতির ডাকাতি করিত, ইহা ইতিহাস ও উপন্যাসে প্রসিদ্ধ। এখনও পাশ্চাত্য কোন কোন দেশে শিক্ষাপ্রাপ্ত ও “ভদ্র” লোকের রাহাজানি, ব্যাঙ্ক লুট, মোটরডাকাতি, প্রভৃতি অপকৰ্ম্ম করিয়া থাকে। আমাদের দেশের অনেক বনিয়াদী ঘরের পূর্বপুরুষেরা ডাকাতের সর্দার ছিল । অবশু আমাদের দেশের ও বিদেশের সাবেক ও আধুনিক “ভর” ডাকাতরা সকল স্থলে কেবলমাত্র রোজগারের জন্যই যে, ডাকাতি করিত ও করে, তাহা নয়। দুঃসাহসের কাজ করিবার দিকে ঝোক মানব-প্রকৃতিতে নিহিত আছে। যাহারা অপেক্ষাকৃত নিৰ্ভীক, তাহাদের মধ্যে কেহ কেহ অন্ত উপায়ে এই প্রবৃত্তি চরিতার্থ করিতে না পারিলে, ডাকাতি প্রভৃতি গৰ্হিত কাজও করে। যাহারা গায়ে স্বাচড় লাগাইতে রাজী নহে, তাহারা ইতিহাসে,পন্যাসে, খবরের উকাগজে দুঃসাহসিকতার গল্প পড়িয়াই নিজেদের ঐ প্রবৃত্তিকে চরিতার্থ করে । যাঙ্গ ভউক, রাজনৈতিক উদ্দেশ্রে ডাকাতি একটাও হয়