পাতা:প্রবাসী (চতুর্বিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/২৭৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

২য় সংখ্যা ] বিবিধ প্রসঙ্গ-নূতন বিগ্রহ-আইনের আবশ্যকতা ২৬৭ কাগজে স্থলসৈন্ত ও নৌসৈন্তদিগকে নাকি সরকারী হুকুম অমান্ত করিতে প্ররোচিত করা হয়। উহু কমু্যনিষ্ট দলের কাগজ। এইদল রুশিয়ার বলশেভিকৃদের মত রাজনৈতিক মতাবলম্বী। এই কাগজটির সম্পাদক মিঃ ক্যাম্বেলকে প্রথমে ফৌজদারী সোপর্দ করা হয়। পরে শ্রমিক গবর্ণমেন্টের আদেশে,তাহার বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলিয়া লণ্ডয়া হয়। ইহার বিরুদ্ধে পালেমেণ্টে একটি প্রস্তাব ধার্ঘ্য হওয়ায় শ্রমিক গবর্ণমেণ্টের পতন হয়। এই কারণে শ্রমিকদলের বিরোধীরা তাহাদের বিরুদ্ধে বলিবার এই একটা কথা পায়, যে, শ্রমিকরা রুশীয় বিপ্লবীদের সদৃশমতাবলম্বী বিলাতী কমু্যনিষ্টদের বন্ধু । শ্রমিকদের দ্বর্তাগ্যক্রমে এই সময়ে রুশিয়া হইতে লিখিত একটা চিঠি প্রকাশিত হয়, যাহাতে বল-প্রয়োগ দ্বারা বর্তমান বিলাতী শাসন তন্ত্রের পরিবর্তে রুশিয়ার মত শাসনতন্ত্র স্থাপন করিতে উপদেশ দেওয়া হয়।-এই চিঠি জাল হইতে পারে, না হইতেও পারে। যাহা হউক, শ্রমিক গবর্ণমেণ্ট রুশিয়ার সহিত একটা সন্ধির মত ব্যবস্থা আগেই করিয়াছিলেন বলিয়া এই চিঠিটার দোষও শ্রমিকদের বিরোধীরা শ্রমিকদের ঘাড়ে চাপায় । অধিকন্তু ভারতবর্ষে শ্রমিক গবর্ণমেন্ট দৃঢ়তা দেখাইতে পারে নাই, এই অভিযোগ, নিৰ্ব্বাচন-উপলক্ষ্যে, আবার খুব জোরের সহিত বলডুইন, কার্জন প্রভৃতি বলিতে থাকেন। স্বতরাং নির্বাচনের সময় শ্রমিক গবর্ণমেণ্ট কে তাহাদের বিরুদ্ধে উত্থাপিত সমুদয় অভিযোগের জবাব দিতে বাধ্য হইতে হয়। নতুবা তাহাদের যথেষ্ট-সংখ্যায় নির্বাচিত হইবার সম্ভাবনা থাকিবে না। অন্ত অভিযোগগুলি-সম্বন্ধে তাহার: কি করিয়াছিল, এখানে বলা অনাবশ্যক। ভারতবর্ষ-শাসনসম্বন্ধে তাহাদের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ হইয়াছিল, তৎসম্বন্ধেই কিছু বলা এখানে দরকার। ভারতবর্ষে ষে তাহার খুব দৃঢ়তা অবলম্বন করিতে পারে, তাহা দেখাইবার জন্য, নিগ্রহ-নীতিমূলক যে-সব নিয়ম-প্রবর্তনে এবং ধর-পাকড়ে আগে শ্রমিক গবর্ণমেণ্ট মত দেয় নাই, এখন তাহাতে মত দিল । কিন্তু এখন এই “মরণকালে হরিনাম” করিয়া যে কোন ফল হইল না, তাহা সকলেই জানেন—শ্রমিকদল পরাজিত হইয়াছে, এবং রক্ষণশীলদলের জিত হইয়াছে। ভারতগৰৰ্ণমেণ্ট, রোলটু আইন রদ করিতে বাধ্য হইয়াছিলেন । তাহার পর আবার গবর্ণমেণ্টের প্রবল বিরোধিতা-সত্বেও সংশোধিত ফৌজদারী কাৰ্য্যবিধি আইনের দ্বিতীয় ভাগ রদ করিবার জন্ত ভারতীয় ব্যবস্থাপক সভায় এক বিল পাস হইয়াছে। এখনও অবশু গবর্ণমেণ্টের হাতে সন্দেহভাজন ও বিরক্তিভাজন লোকদিগকে জবা করিবার জন্তু যথেষ্ট ক্ষমতা ও অস্ত্র আছে । কিন্তু তাহা হইলে কি হয় ; আরো যে অধিক ক্ষমতা ছিল, তাহার লোপের দুঃখ গবর্ণমেণ্ট সহ করিবেন কেমন করিয়া ? লর্ড লিটনের আমলে ব্যবস্থাপক সভাকর্তৃক গবর্ণমেন্ট পক্ষের পরাজয় অনেকবার হইয়াছে। তাহাতে ক্ষুব্ধ হওয়া স্বাভাবিক। আলিপুরে ও শিয়ালদহতে ছ’টা মোকদম ফাসিয়া যাওয়াতেও বাংলা গবর্ণমেণ্ট, ক্ষুব্ধ হইয়া থাকিবেন। দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাশ একাধিকবার বিপ্লব-চেষ্টার ব্যাপকতা-সম্বন্ধে প্রকাগু উক্তি করায় গবর্ণমেণ্টের নিগ্রহ-নীতি অবলম্বনের স্থযোগ মিলিয়াছে। তা ছাড়া, ইহা সকলেই জানে, যে, বড়লাট ও ছোটলাট যিনি যখনই হউক এবং তাহদের মতি-প্রকৃতি যেরূপই হউক,ইংরেজ সিবিলিয়ানদের মতামতই বড়লাট-ছোটলাটআদিকে চালিত করে ; এবং এই ইংরেজ সিবিলিয়ানরা বরাবর জবরদস্ত হাকিম ও শাক্ত-শাসনের ভক্ত । এবম্বিধ নানা ঘটনা ও অবস্থার সমাবেশে নিগ্ৰহ-নীতি প্রবর্তিত হইয়াছে বলিয়া আমাদের ধারণা । নূতন নিগ্রহ-আইনের অনাবশ্যকতা অর্ডিন্যান্স, যখন জারী হয় নাই, তখনও ত এই সেদিন পর্য্যন্ত সন্দেহভাজন বিস্তর লোককে গ্রেফতার করিয়া জেলে বন্ধ করা এবং তাহাদের বাড়ী থানা-তন্ত্রাস করা হইয়াছে। বিপ্লবীরা জুরর ও আসেসবৃদিগকে ভয় দেখায়, সাক্ষীদিগকে ভয় দেখায়, এই কারণে অপরাধীদের শাস্তি হয় না, প্রভৃতি ওজুহাতে নূতন নিগ্ৰহ আইন জারী করা ঠিক হয় নাই। কারণ জুরর প্রভৃতিকে ভুয়-দেখানর কথা অনেক বিখ্যাত আইনজীবী