পাতা:প্রবাসী (চতুর্বিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/২৮৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

২য় সংখ্য! ] বিবিধ প্রসঙ্গ—ভারতের হাওয়া ও নিমকের দোষ ՀԳd বেঙ্গল অর্ডিন্যান্সের অনিষ্টকারিতা নূতন বেঙ্গল অর্ডিন্যান্সের তর্জমা বাংলা দৈনিক ও সাপ্তাহিক নানা কাগজে বাহির হইয়াছে । মাসিক কাগজে তাহার সমুদয় দোষ পুঙ্খানুপুস্বরূপে দেখাইয়া দিবার প্রয়োজন নাই। দু-একটা কথা কেবল বলিব । দ্বাদশ ধারা-অনুসারে প্রাদেশিক গবর্ণমেণ্ট যুক্তিসঙ্গত কারণ দেখিলে যে-কোন ব্যক্তিকে তাহার বাড়ীর ঠিকানা ও ঠিকানার পরিবর্তন নির্দিষ্ট সরকারী কৰ্ম্মচারীকে জানাইতে বাধা করিতে পারেন, পুলিশের কাছে যথন যেস্থানে ও-প্রকারে ইচ্ছা হাজরী দিতে বাধা করিতে পারেন, যে-কোন প্রকারের কাজ করাইতে বা না-করাইতে বাধ্য করিতে পারেন, ব্রিটিশ ভারতের যে-কোন নির্দিষ্ট ভূখণ্ডে থাকিতে বা প্রবেশ না-করিতে বাধ্য করিতে পারেন, এবং জেলে বন্ধ করিতে পারেন । এইসব হুকুম অমান্য করিলে তিনবৎসর পর্য্যস্ত জেল এবং তদতিরিক্ত জরিমানা হইতে পারিবে । তা ছাড়া সন্দেহ-ভাজন ব্যক্তিকে বিনা ওয়ার্যাণ্টে গ্রেফতার করাইতে ও তাহার বাড়ী বা অন্য স্থান থানাতল্লাসী করাইrত পারেন। এই যে এতপ্রকারে মানুষকে দুঃখ দিতে ও তাহার স্বাধীনতা হরণ করিতে গবৰ্ণমেণ্ট পারেন, তাহার “যুক্তিসঙ্গত কারণ” যোগাইবে অবশ্য পুলিশ ও পুলিশের গোয়েন্দারা। পুলিশের মধ্যে ভাল লোক নাই এ কথা বলিতেছি না ; কিন্তু সাধারণতঃ পুলিশ বিভাগের যে-সব লোক ও যে সব গোয়েন্দা খবর জোগায়, তাহাদের বুদ্ধি-বিবেচনা ও বিশ্বাস-যোগ্যতায় দেশের লোকের ও আমাদের আস্থা নাই। তাহাদের কথার বা সংগৃহীত প্রমাণের উপর নির্ভর করিয়া মানুষকে এতটা লাঞ্ছিত ও উৎপীড়িত করা ভাল নয়। অতীত অভিজ্ঞতায় দেখা গিয়াছে, যে যখনই উক্তরূপ ক্ষমতা প্রাদেশিক গবর্ণমেণ্টের ও পুলিশের হাতে দেওয়া হইয়াছে, তখনই তাহার অপব্যবহার হইয়াছে এবং বিস্তর নিরপরাধ লোকের নিগ্ৰহ হইয়াছে। গবর্ণমেণ্টের বিশেষ হুকুম ব্যতিরেকেও এরূপ কোন ধুত লোককে পনের দিন আটক করিয়া রাখা চলিবে । বিশেষ হুকুম হইলে ত্রিশ দিনের অনধিক কাল আটক রাখা চলিবে । ধুত ও আবদ্ধ ব্যক্তির তথাকথিত বিচারও একটা হইবে। গবর্ণমেণ্টের নিযুক্তসেগুন জজ ও তজ্জাতীয় দু’জন লোকের কাছে অভিযুক্ত ব্যক্তি-সম্বন্ধে স্কুল স্কুল প্রমাণ, দলিলাদি (সব প্রমাণাদি নয় ) স্থাপিত হুইবে । ধুত ব্যক্তির বিরুদ্ধে অভিযোগ ও সে যদি কোন উত্তর দিয়া থাকে, তাহা হইলে তাছাও লিখিত আকারে ঐ জজদের নিন্ট উপস্থিত করা হইবে । এইসব বিবেচনা করিয়া জজের গবর্ণমেণ্টের নিকট রিপোর্ট করিবেন, এবং তাহার উপর গবর্ণমেণ্ট যেরূপ সঙ্গত ৪ ন্যায্য মনে করেন তদ্রুপ হুকুম দিবেন। অর্থাৎ জজের যদি বলেন, যে, ধুত ব্যক্তির বিরুদ্ধে যথেষ্ট প্রমাণ নাই, তথাপি গবর্ণমেণ্ট তাঙ্গকে খালাস দিতে বাধ্য থাকিবেন না। তাহার পর পরিস্কার করিয়া বলা হইতেছে, যে, অভিযুক্ত ব্যক্তি উকীল দ্বারা জজদের নিকট উপস্থিত হইতে কিম্বা ( আত্মপক্ষ সমর্থনার্থ কোন ) কাজ করিতে পারিবে না ; এবং ভজদের সমুদয় কাজ-কৰ্ম্ম ও রিপোর্ট গোপনীয় থাকিবে । অভিযুক্ত ব্যক্তি সরকার-পক্ষের সাক্ষীকে জেরা করিতে, নিজের সাফাই সাক্ষী দিতে, সমুদয় প্রমাণ দেখিতে-শুনিতে, দলিল পরীক্ষা করিতে, উকীল দিতে—কিছুই পরিবে না । গবর্ণমেণ্টও ধুত ব্যক্তি-সম্বন্ধে সংগৃহীত সব তথা জজদিগকে দিবেন না, বাছাই করিয়া কিছু-কিছু দিবেন, জঙ্গদের রিপোর্ট-অম্বুসারে কাজ করিতে বাধ্য থাকিবেন না, এবং জজদের রিপোর্ট ও কাৰ্য্যাবলী গোপনীয় থাকিবে । ইহাতে কিরূপ ন্যায় বিচার হইবে, তাহ" বলা বাহুল্য । ভারতের হাওয়া ও নিমকের দোষ ভারতবর্ষের বর্তমান বড়লাট লর্ড রেডিং আগে এক সময়ে ইংলণ্ডের প্রধান বিচারপতি ছিলেন । ভারতবর্ষে আসিয়া তিনি ঘোষণা করিয়াছিলেন, যে, তিনি দ্যায় বিচার প্রতিষ্ঠা করিবেন । র্তাহার আদেশ-অনুসারে যে অডিন্যান্স, জারী হইয়াছে, তাহাতে ন্যায়-বিচার কিরূপ হইবে, তাহার কিছু আভাস উপরে দেওয়া হইয়াছে । অথচ এই লর্ড রেডিংষ্ট যখন বিলাতে প্রধান বিচারপতি ছিলেন, তখন স্যার রজার কেসমেন্টের বিচার-কালে কি