পাতা:প্রবাসী (চতুর্বিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/২৯৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

২য় সংখ্যা ] হইতেছে ; তদ্ভিন্ন দৈহিক, আধ্যাত্মিক, নৈতিক এবং মানসিক অবনতিও হইতেছে। মহাত্মা গান্ধীকে তাহার বিশেষ অন্তরঙ্গ এক বন্ধু আমাদের সব তথ্য ও যুক্তি শুনাইয়াওছিলেন ; কিন্তু আমাদের লেখাটা অকাট্য বলিয়াই হউক, কিম্বা নিতান্ত অসার ও অবজ্ঞেয় বলিয়াই হউক অথবা আমাদের পশ্চাতে বৃহৎ ( বা ক্ষুদ্র ) কোন রাজনৈতিক দল নাই বলিয়াই হউক আমাদের যুক্তি ও সংগৃহীত তথ্যের খণ্ডন চেষ্ট হয় নাই। সমগ্র ভারতীয় ও প্রাদেশিক ব্যবস্থাপক সভায় সব কাজ, কংগ্রেসের পক্ষ হইতে এবং কংগ্রেসের একটি অঙ্গস্বরূপ, করিবার ভার পাইলেন স্বরাজ্যদল । ব্যবস্থাপক সভায় তাহীদের কাজ স্বরাজ্যদল আগে হইতেই করিতেছিলেন, নূতনত্ব এই হইল, যে, তাহারা কংগ্রেসের একটি অঙ্গ ও মুখপত্ররূপে তাহা করিবেন । অসহযোগীদিগের ইহা বলিবার স্বাধীনতাও কি রঙ্গিল না, যে,"আমিরা ব্যবস্থাপক সভার সহিত লেশমাত্র ও সম্পর্ক রাখিলাম না, মতরাং কেহ আমাদের পক্ষ হইতে উহাতে কোন কাজ করিতেছে, ইহা সম্পূর্ণ অস্বীকার করি ?” অসহধোগা ছাড়া অন্য যে-সব রাজনৈতিক দলকে কংগ্রেসে যোগ দিবার সুবিধা দিবার জন্য এই রফা-নাম প্রস্তুত হইয়াছে বলিয়া ঘোষিত হইয়াছে, তাহারা স্বরাজ্য দলকৈ ব্যবস্থাপক সভায় আপনাদের লেভ ও মুখপাত্র এবং সম্মিলিত কংগ্রেসের মুখপাত্র বলিয়া স্বীকার করিবে বলিয়া আমাদের মনে হয় না । রফাতে বলা হইয়াছে, ধে, অভিজ্ঞতায় দেখা গিয়াছে যে সাৰ্ব্বজনীন ( য়ুনির্ভস্যাল) চবুক-কাটা ভিন্ন ভারতবর্ষ নিজে নিজের কাপড় জোগাইতে পারিবে না। এরূপ কোন অভিজ্ঞতার অস্তিত্ব আমরা অবগত নহি । রফ| নামায় স্বাক্ষরকারী:দিগকে, এই অভিজ্ঞতা কোথায় কবে কি-প্রকারে লব্ধ হইল, তাহার বিবরণ ও প্রমাণ দিতে আহবান করিতেছি । ভারতবর্ষে যখন ইংরেজ রাজত্ব স্থাপিত হয় নাই ও বিলাতী স্থতা ও কাপড়ের আমদানি হইত না, তখন চরকায় স্থত৷ কাটা সাৰ্ব্বজনীন ছিল না। প্রথমতঃ, ইহা পুরুষজাতির কাজ বা পেশা ত ছিলই না ; দ্বিতীয়তঃ, স্ত্রীলোকেরাও সকলে স্থত কাটিতেন না । বিবিধ প্রসঙ্গ—অসহযোগী ও “স্বরাজ্য”-দলের রফ ২৮৩ মহাত্মা গান্ধী, টাকায়চাদা দেওয়া অপেক্ষা শ্রমের দ্বারা চাঁদা দেওয়ার শ্রেষ্ঠত্ব ইয়ং ইণ্ডিয়ায় প্রতিপন্ন করিতে এই সেদিনও চেষ্টা করিয়াছেন। আর আজ ঠিক ভtহার উণ্টাটাও সত্য হইল! টাকা দিয়া স্থত। কিনিয়া তাহাও চাদা-স্বরূপে দেওয়া চলিবে, নিজে স্থত না কাটিলে প্ৰ চলিবে, নিয়ম এইরূপ হইল । রাজনৈতিক রফার খাতিরে মূল নীতিটাই বদলাইয়া গেল । - যদি ধনী দরিদ্র শিক্ষিত অশিক্ষিত সবাই হাতে সুতা কাটিত ও খদ্দর পরিত, তাহা হইলে বুঝিতাম, যে, সকল শ্রেণীর মধ্যে একটা সত্যকার প্রাণের যোগ ( "bond bo tween the masses and congress men and women” ) স্থাপিত হইয়াছে । কিন্তু পয়সা দিয়া কাঢ়নীর নিকট হইতে স্থতা কিনিলে তাহার দ্বারা কি যে নূতনতর একটা হৃদয়ের যোগ ও প্রাণের বাধন স্পষ্ট হইবে, তাহ আমরা বুঝিতে অসমর্থ। গরীব লোকের যে-কোনরকম জিনিস ( স্থত। ব৷ অন্য কিছু ) শ্রমের দ্বারা উৎপন্ন করে, তাহা সম্পন্ন লোকেরা কিনিলে সেটুকু যোগ বা বঁধনের অস্তিত্ব বুঝায়, তাহা ত চিরকালই আছে ; স্থতা কিনিয়া কংগ্রেসে চাদ দিলে তাহাতে শুভ নতু কি ইষ্টল ? ছোটবড় সবাই চর্ক চালাইলে তবু বুঝিতাম, যে দৈহিক শ্রমটার অবজ্ঞেয়তা কাৰ্য্যতঃ দূর হইতেছে, এবং ছোটবড় সকলের মধ্যে সমকৰ্ম্মিতার একটা ধোগ স্থাপিত হইতেছে। উপদেশ, যুক্তি, ও নিজ-নিজ দৃষ্টান্ত দ্বারা এই অবস্থা আনয়নের বিরোধী আমরা কখনও ছিলাম না, নিয়ম দ্বারা ইহা করার বিরোধী ছিলাম । যাহা হউক, স্বত কিনিয়। চাদ দিবার নিয়মে যদি অধিকতর-সংখ্যক কার্টুনীর আরও বেশী অন্ন হয়, তাহাতে আমরা আহলাদিত হইব । কংগ্রেস ও তাহার অস্তুগত সভা-সমিতিতে উপস্থিত হুইলার সময়, তৎসমুদয়ের কাজ করিবার সময় খন্দর পরিয়া করিতে হুইবে, এই নিয়ম হইয়াছে ; অন্য সময়ে পরা না-পরা স্বেচ্ছাধীন, ইহা বোধ হয় উহ্য আছে । ইহাতে যদি খদ্দর বিক্রী কিছু বাড়ে, তা মন্দ নয়। কিন্তু ইহাতে পরিচ্ছদের পোষাকী ও আটপৌর্যে এই দুই ভাগে বিভাগ যেমন হইবে, তেমনি লোক-দেখান এবই