পাতা:প্রবাসী (চতুর্বিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৩১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

WOe


SMMMS SSSSSSS SSAS SSAS SSAS SSAS SSAS SSAS

চুলও নেই, একটি খোপা করেছে আর লাল জামা আর সবুজ শাড়ী পরেছে। গলায় একটা লম্বা সোনার হার আর কাণে সোনার দুল, কি চমৎকার যে দেখাচ্ছিল তাকে ! আমি চাইলাম ভার দিকে, সেও চাইলে । কি স্নিগ্ধ চোখ-দুটি ! গাড়ী চলে’ গেল আমিও শুয়ে পড়লাম । বিকালে আজ আয়নায় দেখলাম তাকে, কতকগুলি চুল উড়ে মুখে এসে পড়েছে, ভারি ভালো লাগল তাকে অনেক দিন পরে দেখে । আজ অনেকটা লিখে’ রাখলাম। এমুনি করেই দিন চলেছে, আবার গরমের ছুটি এল বলে । কাল ছুটি হবে । আমি আজ জোর করে জানলার পাশে গিয়ে বসেছি। গাড়ী এল । সে ষেন আজ একটু উৎসুক হয়েই তাকালে আমার দিকে। গাড়ী চলল, তার পর যতক্ষণ দেখা গেল, চেয়ে রইল । ছুটিতে কোন কাজ নেই, সময় আর কাটুতে চায় না । সাম্নের মেসে যে-ছেলেটি গান কবুত, সেও বোধ হয় বন্ধে বোড়ী গেছে। এই গরমে আরও দমে গেলাম। আমার হাতের জোরও কমে আসছে আস্তে-আন্তে। বাণীওয়ালা আজ অনেকদিন পরে এসেছে আমি তাকে আজ ঘরে আনিয়েছি। আজ অনেকক্ষণ সে বঁাশী বাজালে, সেও কাল বাড়ী যাবে, সেখানে তার নাতির বড় অস্থখ । সেদিন যতীন-মার্ম আমার জন্তে অনেকগুলি লাল পদ্মফুল এনেছিলেন । বাশীওয়ালা যাবার সময় তাকে আমি কটা ফুল দিলাম, সে ফুলগুলি তার জামার ভিতর পূরে আমার মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে বললে, “চলি খোকাবাৰু, আবার এসে বঁাশী শোনাব আমি” । দরজার কাছে গিয়ে যতীনমামাকে কি জিজ্ঞাসা করলে, তার পর বোধ হ’ল, চোখ মুছে ঘর থেকে বেরিয়ে গেল । সেদিন আর রাস্তায় তাকে বঁাশী বাজাতে শুনলাম না। ছুটি কবে শেষ হবে, আমি কেবল দিন গুনছি। মণ্ট, কৃষ্ণার কাছে শুনেছিল কবে স্কুল খুলবে। হিসেব করে দেখলাম এখনো আঠার দিন বাকী। আমি গুয়ে-শুয়ে ভাবি ছুটিতে স্বধা কোথায় গেছে ? প্রবাসী—কাৰ্ত্তিক, ১৩৩১ [ ২৪শ ভাগ, ২য় খণ্ড


= س-------------------------------

  • হয়ত এখানেই রয়েছে । সেও কি দিন শুন:ে কবে স্কুল খুলবে ?

এই সময় যতীন-মাম তার এক বন্ধুর বাড়ী খেৰে একটা গ্র্যামোফোন নিয়ে এলেন । কতকগুলি চমৎকা বেহালার রেকর্ড রেখে বাকীগুলি আমি ফেরত দিলাম আমার ভারি ভালো লাগত বেহালার স্বরগুলি । সব চেয়ে ভাল লাগত “হিউমারেস্ক ’খানা। এখানা আমি এক সঙ্গে চার-পাচ বার করে বাজােতাম। এখানা বাজালেই আমার ইচ্ছা কবৃত বিছানা ছেড়ে লাফিয়ে উঠি, কিন্তু শরীর তখন আরও খারাপ হ’য়ে এসেছে। কয়েকদিন কেটে গেল। কাল স্কুল খুলবে। আজকের রাত আর কার্টুতে চায় না, সারারাত প্রায় জেগেষ্ট কাটুল। ভোরে একটু ঘুম আসচে এমন সময় শুনতে পেলাম সামুনের মেসের সেই ছেলেটি গাইছে— “পথ চেয়ে যে কেটে গেল কত দিনে রাতে আজ ধূলার আসন ধন্য করে বসবে কি মোর সাথে”। দশটা বাজে প্রায়, কোন রকমে জানলার ধারে গিয়ে বসেছি। স্বধাকে দেখলাম, তার হালি-হাসি চোখ আমায় দেখে’ই গম্ভীর হয়ে গেল । আমি তখন জানলার উপরে পদ্মফুলগুলি সাজাচ্ছিলাম, আমার নিজেরই মনে হ’ল আমার হাত কিরকম সাদা হ’য়ে গেছে । গাড়ী চলে’ গেল, আস্তে আস্তে সেখানেই বসে’ পড়লাম। এমনি করেষ্ট আস্তে আস্তে বর্ষাও কেটে গেল । তার পর থেকে ক্রমেই কাহিল হ’য়ে আসছি, আয়নাতেও আর ভাল করে দেখতে পাইনে কিছুই । এইবার একটু-একটু বুঝতে পারলাম্ আমার এ অস্থখ আর সাবৃবার নয়। মণ্ট কে একদিন বললাম, “মন্ট ভাই, তুমি আমার সব গল্পের বই নিও।” সে বললে, “কেন তুমি কোথায় যাবে দাদাভাই ?” আমি বললাম, “কোথায় জানিনে, কিন্তু সে অনেক দূরে।” মেসে তখন সেই ছেলেটি গাইছিল—“আমি চঞ্চল হে, আমি স্বৰূরের পিয়ালী”। আজকাল বিকাল-বেলাট বেশ স্বন্দর হয় আকাশটা। জানলা দিয়ে যতটুকু দেখতে পাই খুব ভাল লাগে। শরৎকাল এসে পড়ল।