পাতা:প্রবাসী (চতুর্বিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৩১৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

vôе о ফাকি । কিন্তু পুরুষের সংসারে সত্যকার মেয়ে ত কেবলমাত্র চোখের দেখার নয়, সে ত ধ্যানের জিনিষও বটে। সে যে শরীরী অশরীরী দু’য়ে মিলিয়ে, পৃথিবী যেমন নিজের মাটি খুলে এবং নিজের চারদিকের অসীম আকাশ ও বায়ুমণ্ডগ মিলিয়ে। মেয়ের যা অশরীরী তা ষে শরীরী মেয়েকে ঘিরে’ আছে,—তার ওজন নেই কিন্তু তার বর্ণ আছে, ভঙ্গী আছে ; তা ঢাকে অথচ তা প্রকাশ করে । পাশ্চাত্য সভ্যতায় যারা উন্নতির বড়াই করে, তারা বলবে এই মেয়েলির প্রতি অসহিষ্ণুতায় চলার উৎসাহ প্রকাশ পায়। আমার মনে হয় এটাই থামবার পূর্ব লক্ষণ। চলার ছন্দই থাকে না যদি স্থিতির সঙ্গে তার সমস্ত আপোষ একেবারে মিটে যায় । চলচে, সারথিও চলচে, যাত্রীরাও চলচে, গাড়ির জোড় খুলে গিয়ে তার অংশ প্রত্যংশগুলোও চলচে, একে ত চলা বলে না, এ হচ্চে মরণোন্মুখ চলার উন্মত্ত প্ৰলাপ, সাংঘাতিক থামার ভূমিকা। মেয়েরা সমাজের চলাকেই স্থিতির ছন্দ দেয়—সে ছন্দ স্বন্দর। একদল মেয়ে বলতে স্বরু করেচে যে, “মেয়ে হওয়াতে আমাদের অগৌরব, আমাদের ক্ষতি। অর্থাৎ আমাদের আত্মপ্রকাশের ধারায় পুরুষের সঙ্গে প্রভেদটাতে পীড়া পাচ্চি ” এর থেকে বোধ হচ্চে একদিন যে পুরুষ সাধক ছিল এখন সে হয়েচে বণিক। বণিক বাইরের দিকে যদিবা চলে, অন্তরের দিকে আপনার সঞ্চয়েব বোঝার কাছে সতর্ক হয়ে পুড়ে আছে। তার স্থিতি সারবান কিন্তু স্বন্দর নয়। তার কারণ মানুষের সম্বন্ধকে হৃদয়মাধুর্ঘ্যে সত্য করে পূর্ণ করে তোলা তার স্থিতির ধৰ্ম্ম নয়। ধনসঞ্চয়ের তলায় মানুষের সম্বন্ধকে চাপা দিয়ে চ্যাপট করে’ দেওয়াই হয়েচে তার কাজ স্বতরাং সে যে কেবল চলে না তা নয়, আপন স্থিতিকে ভারগ্রস্ত নীরস নিৰ্ম্মম অম্বন্দর করে। অঙ্কের কোঠার মধ্যে যাকে ধরে না তা’কে সে আবর্জনার মধ্যে ফেলে’ দেয় । পুরুষ একদিন ছিল mystic, ছিল অতল রসের ডুবারি, ছিল ধ্যানী। এখন সে হয়েছে মেয়েদের মতই সংসারী। কেবল প্রভেদ এই যে, তার সংসারে আলো প্রবাসী—পৌষ, ১৩৩১. গাড়িটার ঘোড়াও [ २8न छांग, २ग्न थ७ নেই, বাতাস নেই,আকাশ নেই ; বস্তুপিণ্ডে সমস্ত নিরেট। সে ভারি ব্যস্ত। এই ব্যস্ততার মধ্যে সেই আকাশ সে পায় না ষে-আকাশে আপন কল্পনাকে রূপে রসে মুক্তি দিতে পারে । আজকালকার কবি আপন কাব্যে, শিল্পী আপন কাকতে অনিৰ্ব্বচনীয়কে স্বন্দরকে অবজ্ঞা প্রকাশ করতে আরম্ভ করেচে। এটা কি পৌরুষের উন্টে নয় ? পুরুষই ত চিরদিন স্বন্দরের কাছ থেকে আপন শক্তির জয়মাল্য কামনা করেচে। Mystic পুরুষ তার ধ্যানশক্তিতে, তার ফলাসক্তিবিহীন সাধনায় বাস্তবের আররণ একটার পর একটা যতই মোচন করেচে ততই রসের লোকে, শক্তির লোকে, অধ্যাত্মলোকে সে ভূমার পরিচয় পেয়েচে । আজ কেবলি সে থলির পর থলির মুখ বাধচে, সিন্ধুকের পর সিন্ধুকে তাল লাগাচ্চে,—আজ তার সেই মুক্তি নেই ষে-মুক্তির মধ্যে স্বন্দর আপন সিংহাসন রচনা করে। তাই তার মেয়েরা বুলচে, আমরা পুরুষ সাজ ব, তাই তার কাব্যসরস্বতী বলচে, বীণার তারগুলোকে যত্ন করে না বাধলে যে স্বরটা ঝনঝন করতে থাকে সেইটেই খাটি বাস্তবের স্বর, উপেক্ষার উচ্ছম্বল দুরন্তপনায় রূপের মধ্যে যে-বিপৰ্য্যয়, যে-ছিন্নভিন্নত ঘটে সেইটেই আর্ট । দিন চলে’ গেল। ভুলে ছিলুম যে সমুদ্রে পাড়ি দিয়ে চলেচি। মন চলেছিল আপন রাস্তায়,—এক ভাবনা থেকে আরেক ভাবনায়। চলেছিল বললে বেশি বলা হয়। উট যেমন বোঝা পিঠে নিয়ে মরুর মধ্যে পথ আন্দাজ করে চলে, এ তেমন চলা নয়,—এ যেন পথের খেয়াল না রেখে ভেসে যাওয়া, কোনো বিশেষ ঘাটের কাছে বায়ন না নিয়ে শুধু শুধু বেরিয়ে পড়া ; কথাগুলোকে নিজের চেষ্টায় চালনা না করে', দিকের হিসেব না রেখে, তাদের আপনার ঝোকে চলতে দেওয়া । তার স্থবিধে হচ্চে এই যে, কথাগুলো নিজেরাই হয় বক্তা, আর মনটা হয় শ্রোতা । মন তখন অন্তকে কিছু দেবার কথা ভাবে না, নিজের কাছ থেকে নিজে পায়। মনের ভূগোলে অনাবিষ্কৃতের আর অস্ত নেই। সেসব জায়গায় পৌছে দেবার পথগুলো সবই নদীর মত, অর্থাৎ সে পথ নিজে চলে বলে’ই চালায় ;– তারই স্রোতে মন আপনাকে ভাসিয়ে দিতে পারলে