পাতা:প্রবাসী (চতুর্বিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৩২৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

woebe পুরে ও রাজত্ব করিতেন। তিনি অতি পুণ্যাত্মা ছিলেন। নিৰ্ব্বাসনকালে রামচন্দ্র সমশ্রেণীর বন্ধুরূপে তাহার আতিথ্য গ্রহণ করিয়াছিলেন । ( অযোধ্যাকাও, ৪৬ অঃ, ২০, ৪৭, ৯-১২ } কায়ব্য ক্ষত্রিয়ের ঔরসে নিষাদ-রমণীর গর্ভজাত । পূৰ্ব্বে ইনি মৎস্যজীবী ছিলেন। অসাধারণ অধ্যবসায়-বলে ইনি 'মহাসিদ্ধি লাভ করিয়াছিলেন। শেষে রাজ্য লাভ করিয়া প্রজাপালন করিয়াছিলেন। ইনি নিষাদ-জাতি হইয়াও বেদপারগ (শ্রতবান ) হইয়াছিলেন (মহাভারত)। মহাভারতের নিষাদরাজ হিরণ্যধন্থর পুত্র একলব্যের কথা সৰ্ব্বজনবিদিত ( আদিপৰ্ব্ব, ১৩৪ অঃ, ৩১ শ্লোক ) । ঐকৃষ্ণের পিতৃঘসা শ্রতদেব নিষাদরাজকে বিবাহ করেন (হরিবংশ, e৩৫, ১৯৩e ) । এসময়ে ইহাদের অবস্থা বেশ উন্নত হইয়াছিল বলিয়া বোধ হয়। হরিবংশে পাওয়া যায় নিষাদরা সাধারণতঃ সমুদ্রে মুক্ত তুলিত ও নাবিকের কাজ করিত। আর্য্যরা যেমন জয় করিতেকরিতে অগ্রসর হইতে লাগিল, নিষাদরাও হটিতে-হটিতে মধ্য-ভারতের পাহাড়ে, জঙ্গলে গিয়া বাস করিতে লাগিল । তখন তাহারা সেইসমস্ত স্থানের নিম্নতম জাতিদের সঙ্গে মিলিয়া মিশিয়া যায় । ইহার পর নিষাদরা খুব নীচু হইয়া পড়িলেও মধ্যেমধ্যে তাহাদের শৌৰ্য্য-বীর্ষ্যের পরিচয় পাওয়া ধাইত । খৃষ্টীয় অষ্টম শতকের পরে তাহাদের বীরত্বের নিদর্শন এখনও আবিষ্কৃত হয় নাই। নন্দিবমর্ণর উদয়েন্দিরম্ (উদয়চন্দ্রমঙ্গলম্) অনুশাসনে একজন নিষাদরাজের উল্লেখ আছে। ইহার নাম পৃথিবীব্যাজ্য। ইনি অশ্বমেধ যজ্ঞ করিতেছিলেন। উদয়চন্দ্র তাহার অনুসরণ করিয়া তাহাকে পরাস্ত করেন এবং বিষ্ণুরাজ প্রদেশ হইতে র্তাহাকে বিতাড়িত করিয়া দেন। এই বিষ্ণুরাজ পল্লবদেশের উত্তরে সংস্থিত। নদিবমর্ণ পশ্চিম চালুক্যরাজ দ্বিতীয় বিক্রমাদিত্যের সমসাময়িক । বিক্রমাদিত্য ৭৩৩—৩৪ হইতে ৭৪৬–৪৭ পর্য্যন্ত রাজত্ব করিয়াছিলেন।+ নন্দিবমর্ণ পূৰ্ব্বচালুক্যরাজ তৃতীয় বিষ্ণুবৰ্ধনেরও প্রবাসী—পৌষ, ১৩৩১

  • কাহারও মতে শৃঙ্গবেরপুর বেরারে, কেহ বলেন মির্জাপুর জেলার নিকট ইহা অবস্থিত ; কাহারও সিদ্ধাৰ, ইহা বর্তমান বঙলুৱ’।

† Epigraphia Indica, vol. VII, p. 2. Table, [ ২৪শ ভাগ, ২য় খণ্ড সমসাময়িক। ডক্টর ফ্লিট্ ( Dr. Fleet) ৭•৯ হইতে ৭৪৬ খৃষ্টীজের মধ্যে ইহার রাজ্যকাল স্থির করেন। • স্বতরাং নিষাদরাজ পৃথিবীব্যাজ খৃষ্টীয় অষ্টম শতকের প্রথমার্থেই বর্তমান ছিলেন বলিতে পারা যায়। এতক্ষণ যে নিষাদদের কথা বলা হুইল ইহাদের বংশে কৈবৰ্ত্তগণ উৎপন্ন। কৈবৰ্ত্ত ও চণ্ডাল মন্থর সঙ্কর-জাতির ভিতর স্থান পাইয়াছে। এই দুই জাতির সংখ্যাও খুব বেশী। বাঙ্গালায় কৈবর্তের সংখ্যা, বাঙ্গালার সমগ্র হিন্দুর সংখ্যার অষ্টাংশ। কৈবৰ্ত্তদের শারীরিক গঠন প্রায় একরকমের । ইহারা খুব পবিভ্ৰমী ও সহিষ্ণু । চারি আনা কৈবৰ্ত্ত বঙ্গের দক্ষিণ-পশ্চিম কোণে অর্থাৎ মেদিনীপুর, হুগলী ও হাওড়া জেলায় এবং ২৪ পরগণা, নদীয়া ও মুর্শিদাবাদে বাস করে। আর্ষ্যগণ বঙ্গদেশে আসিবার পূৰ্ব্বে কতকগুলি আদিম জাতি এখানে বাস করিত। কৈবর্তের ইহাদেরই একজন। এক সময়ে ইহাদের প্রতাপও খুব বেশী ছিল। ইহার স্বসভ্য জাতি দ্বারা বিজিত হইয়া তাহাদের ভাষা, সভ্যতা ও ধৰ্ম্ম গ্রহণ করে । সমগ্র বঙ্গদেশে ইহাদের সংখ্যা •••••• পাচ লক্ষেরও অধিক । হাওড়া জেলার কৈবৰ্ত্তরা সকলের চেয়ে ভালো কৃষক—খুব পরিশ্রমী। এখানকার কৈবর্ভর মিতব্যয়ী—তাহারা তাহ+ দের শস্তজাত উপযুক্ত পরিমাণে ঘরে মজুত রাখে । ইহাদের মেয়ের ধান সিদ্ধ করে। ইহার খাল, বিল ও ধান-ক্ষেতে মাছ ধরে । মহাজনের নিকট ইহারা বড় একটা ধার করে না। যাহারা নিতান্ত গরীব তাহারা জাত-ভাইদের কাছে হাত পাতে। দরকার হইলে ইহারা সহরে ও কারখানায় কাজ করে । 蠱 যশোহরে প্রায় ৫০,• • • কৈবৰ্ত্ত আছে । ইহাদের চৌদ্দ আন চাষী-কৈবৰ্ত্ত। নদীয়া জেলার কৈবৰ্ত্তর প্রধানতঃ চাষ করে, মাঝে-মাঝে মাছও ধরে । তেহাটা, দৌলতপুর ও দামুর হাটায় ইহাদের সংখ্যা খুব বেশী । তেহাটয় শতকরা ২০ জন কৈবৰ্ত্ত। নদীয়ার সকল থানায় কিছু-না-কিছু কৈবৰ্ত্ত আছেই। পূর্ণিয়া জেলার মধ্যস্থলে কোহ, কাটিহার, পূর্ণিয়া,

  • Indian Antiquary. Wol. XX, pp. 99 and 283.