পাতা:প্রবাসী (চতুর্বিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৩৩৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

سوالاكا প্রবাসী—পৌষ, ১৩৩১ [ ২৪শ ভাগ, ২য় খণ্ড হাসি তার মাথায় দুলছে—মেঘের বুকের বিদ্যুতের রেখার মতন। কিন্তু অন্ধকার তা’তে কিছুমাত্র দুর হয়নি। তরুণী ধরণীর পায়ের ওপর সমুদ্র আছড়ে পড়ছে ফেনার ফুলের মালার অর্ঘ্য নিয়ে। একবার মনে হ’ল সমুদ্রের কল্লোলের ভেতর দিয়ে বঁাশী বাজছে—”সখি জাগো জাগে৷ ” চারিধারে স্বপ্নের সরণী গড়ে উঠেছে। তারি ভেতর দিয়ে পথ কেটে চলেছি কি জানি কোথায় !—জায়গা মনে পড়ছে না । কিন্তু তবু চলেছি। আকাশ জ্যোংস্কার চন্দ্ৰা তপ মেলে’ দিয়েছে স্বপ্নের একখানা আবরণের মতন । পাশে সমুদ্রের ঢেউগুলোর ফাকে-ফাকে মায়াপুরার রাজপথ কোন অজানা রহস্তের দ্বেরে গিয়ে পৌছেচে । পায়ের তলায় বালুবেলায় ফেনার ফুলের কোলে-কোলে শুক্তির মুক্ত ছড়ানো । মন দুলছে—ধাশী বাজছে—সখি জাগো জাগো ।” হঠাৎ জেগে দেখলুম সেই লাল বাড়াটার দরজায় এসে দাড়িয়েছি। মায়া-পুরীর পথ এরি মধ্যে ফুরিয়ে গেল ! ফুরোক কিন্তু তার নাম জেনে নিয়েছি- "অলক”—আর আজ সমস্ত রাত জেগে ডায়েরিতে লিখছি—“অলক— অলক g আকাশের গায়ে আলোকের পূর্বাভাস জেগে উঠেছে । অরুণের আলো উষার অলকে আবীর মাখিয়ে দিয়ে বলছে— —”সখি জাগে৷ ” ( وه ) 2 ৩০শে আশ্বিন— ১৩২৮ কয়েকটা দিন জল-হার মেঘের মতন হান্ধ ভাওয়ায় উড়ে গেল । যে শ্রাস্তি এসে পড়েছিল মনের কোণে আঞ্জ তার কোনোই সন্ধান পাচ্ছিনে। মন তাজা হ’য়ে উঠেছে, প্রাণের ভেতর তপ্ত তরুণ শোণিতের ধারা দুলছে । অলকের সঙ্গে বালুতটের উপর খেলা নিয়ে মত্ত আছি, ঘরনীড়হার পক্ষীশাবকের মতন। চলার বিরাম নেই, তবু পায়ের তলায় ক্লাস্তি অনুভব করছিনে। চলছি তবু মনে হচ্ছে—‘ইহার চেয়ে হতেম যদি আরব বেদুইন ? চরণ-তলে সমুদ্রের বিশাল পাথার পড়ে রয়েছে ঠিৰ . মরুভূমির নতোল্পত বিস্তারের মতন। শূন্যে অপরিমাণ ব্যোম মদের মতন মেঘের ফেনায় ফুলে উঠেছে । মনের বেদুইন তা’কে পান করে নিঃশেষ করতে পারছে না। সমুদ্রের বুকের ওপর রৌদ্র বf-ঝ করছে। একটা ঝাউ গাছের গোড়ায় হেলান দিয়ে অলক বাঁশী বাজাচ্ছিল--- 娜 ‘সময় হয়েছে নিকট এখন বৰ্ণধন ছিড়িতে হবে ।” ছলছল উচ্ছল জলের তালে-তালে তার মর কাপ্পার মতন ক’রে আমার কানে এসে বাজল । আজ ক'দিন হ’তেই অলককে উন্মনা বলে মনে হচ্ছে । আমি তার হাতে ধরে বললুম—থামাও গো বন্ধু, তোমার কান্নার স্বর থামাও । আমার হাতের ভেতরে হাতটা ছেড়ে দিয়ে অলক বললে—কান্নার যে সময় এসেছে অসিতা । আমার আহবান এসেছে অজানা পথের প্রাস্ত হ’তে নিরদেশ যাত্রার জন্যে । আমি বিদায় নিতে চাই । বিদায় –কথাটা বুকের ভেতর কাটার মতন খচ, করে বিধ েেতই আমি মুখ ফিরিয়ে নিলুম। তবু চোখের জল ভার দৃষ্টি এড়াল না । সে দুহাতে আমার মুখটা টেনে তার দিকে ফিরিয়ে নিয়ে বললে— অনেক চোখের জল আমার মনের মরুভূমিতে পড়ে’ আপনি শুকিয়ে গেছে । কিন্তু এ যে বন্যার প্লাবন ! তোমার চোখের জল আমার মনকে যে দুলিয়ে দিচ্ছে অসিত ! আমি বল্লুম—তবে বলে, ধাওয়ার কথা কখনো বলবে না। দুপুরের যে রোদম সাগরের জলে অবগাহন কবুছিল, ভারি মতে স্নান হেসে অলক বললে—কিন্তু না গেলে যে চোখের জল আজ ফেলছ, তা আর কখনো শুকোবার অবকাশ পাবে না। অামার ইতিহাসটা শোনে । একটু চুপ ক’রে থেকে, হঠাৎ ধন্থকের মতন ৰাকা চোখের পাতা দুটো টেনে তুলে একটা উদাস-বিহ্বল দৃষ্টির বাণ আমার মুখের ওপর নিক্ষেপ ক’রে অলক বলতে স্বরু করলে—বাংলার বিপ্লব-যুগে যারা ধ্বংসের যজ্ঞানলে