পাতা:প্রবাসী (চতুর্বিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৩৪৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বীরভূমের উন্নতি কোনও জাতি বা সম্প্রদায়ের আধ্যাত্মিক ও নৈতিক উন্নতির কথা ছাড়িয়া দিয়া, কেবলমাত্র পার্থিব উন্নতির বিষয় বিবেচনা করিলে, ইহা প্রথমেই উপলব্ধি করা যায় যে, শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও ধন-সম্পত্তি এই তিন বিষয়ে উন্নতির প্রয়োজন। এবং ইহাও উপলব্ধি হয় যে, এই তিন বিষয়ে উন্নতি পরস্পরের উপর নির্ভর করে । শিক্ষা ব্যতীত স্বাস্থ্য ও অর্থাগমের ব্যবস্থা হয় না ; শরীর স্বস্থ ও নীরোগ না হইলে, শিক্ষা-লাভ ও অর্থোপার্জন করা চলে না ; এবং দরিদ্র ও ধনহীন ব্যক্তিগণ নিজেদের শিক্ষা ও স্বাস্থ্যের ব্যবস্থা করিতে পারে না। কাৰ্ত্তিকের প্রবাসীতে বীরভূম জেলার বর্তমান শোচনীয় অবস্থার সম্বন্ধে . আলোচনা হইয়াছে এবং একথা বলা হইয়াছে যে, এই অবনতির প্রকৃত কারণগুলি নির্ণয় করিয়া উন্নতির উপায় অবলম্বন করা কর্তব্য । প্রথমতঃ এই জেলাবাসী লোকের ধন-সম্পত্তির কথা বলিব । গত সংখ্যায় বলা হইয়াছে যে, এই জেলায় শতকরা ৭৭ জন লোক কৃষিজীবী। বড় কারখানা এখানে নাই বলিলেও অত্যুক্তি হয় না। সরকারী রিপোর্টে প্রকাশ যে, ১৯২১ সালে এখানে ৪টি কয়লার খাদ ছিল ; তাহাতে ৩৫০ জন পুরুষ এবং ৬৮ জন স্ত্রীলোক কাজ করিত। ২টি রেশমের কারখানায় ৭০ জন পুরুষ এবং ২২ জন ; স্ত্রীলোক নিযুক্ত ছিল। ২টি তেলের কল এবং ৫টি চাউলের কলে মোট ২৫৪ জন মজুর কাজ করিত। চাউলের কলের সংখ্যা ক্ৰমশঃ বাড়িতেছে। এই মুষ্টিমেন্থ শ্রমিকগণগুণতি অল্পসংখ্যক। চাকুরী ও ব্যবসায়জীবী লোকগণকে ছাড়িয়া দিলে, জেলার অধিকাংশ লোক, হয় নিজের চাষ করে, নতুবা জমিদার- ও পত্তনিদারস্বরূপে উৎপন্ন শস্তের অংশ ভোগ করে । স্বতরাং দেখা যাইতেছে যে, কৃষকদিগের ক্ষেত্রে ভালরূপ শস্ত না জন্মিলে কেবল্প কৃষিজীবীগণ নহে, আরও অনেকের ঘরে অন্নাভাব ঘটে । وینس-------8 কৃষি পশ্চিম-বঙ্গের অন্তান্ত স্থানের স্তায় এখানে পাটের চাষ নাই। ধানই এখানকার ফসল। কতক জমিতে আক, গম, আলু প্রভৃতি মূল্যবান ফসল জন্মে। ইহাকে এখানে "দো"-জমি বলে । ইহাতে প্রথমে আগু ধান্তেরঞ্জ আবাদ হয় ; আশ্বিন মাসে তাহা কাটিয়া পুনরায় আবাদ করা হয়। বীরভূম জেলার অধিকাংশ জমি অসমতল, সুতরাং বৃষ্টির জল মাঠের উপর দাড়ায় না, এবং বস্তার পর পলি পড়িয়া মাঠের উর্বরতার বৃদ্ধি হয় না। বৃষ্টির অল্পক্ষণ পরেই জল গড়াইয়া নদী-নাল দিয়া বাহির হইয়া যায় ; অতএব অনাবৃষ্টির সময় ধান-রক্ষার জন্ত জল-সেচনের ব্যবস্থার প্রয়োজন ; এবং শীতকালে যেসকল মূল্যবান ফসল আবাদ হইতে পারে, তাহার জন্তও জল-সেচনের প্রয়োজন । এই হিসাবে বীরভূম ও বাঁকুড়ার অবস্থা প্রায় সমান। তবে প্রভেদ এই যে, বীরভূমের অনেক অংশে বাকুড়া অপেক্ষ জমির উচ্চ-নীচতা কম ও মোটের উপর জল-সেচনের পুকুর-বাধের সংখ্যা বাকুড়ায় বেশী। বঁকুড়ার স্কায় এখানেও জল-সেচনের অধিকাংশ বঁধি-পুকুর নষ্ট হইয়া গিয়াছে। বহু বৎসরের পাক জমিয়া পুকুরের “গাবা’ পাশ্ববর্তী জমির সহিত সমতল হইয়া গিয়াছে। মেরামতের অভাবে পাড় ভাঙ্গিয়া গিয়াছে। স্বতরাং তাঁহাতে পূর্বের স্কায় জল ধরে না এবং অনেক স্থলে স্বার্থান্ধ জমিদার সামান্ত লাভের আশায় এইসকল বঁধের গাবা ধান চাষের জন্ত বন্দোবস্ত করিয়া ভবিষ্যতে তাহাদের উন্নতির পথ বন্ধ করিয়া দিতেছেন । বাকুড়ার ন্যায় এখানেও এইসকল বাধ-পুকুরের পক্ষোস্বারের চেষ্টা হইতেছে এবং এই উদ্দেশ্নে কয়েকটি সমবায় wn-co-offs (Co-operative Irrigation Society) গঠিত হইয়াছে। এই বিষয়ে বৈশাখের প্রবাসীতে