পাতা:প্রবাসী (চতুর্বিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৩৪৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

S●● প্রবাসী—পৌষ, ১৩৩১ ' [ ২৪শ ভাগ; ২য় খণ্ড বাঁকুড়ার উন্নতি-শীর্ষক প্রবন্ধ ভ্ৰষ্টব্য। সেই প্রবন্ধে ঐযুক্ত প্রবাসী-সম্পাদক মহাশয় এইসকল সমিতির উপকার-সম্বন্ধে যাহা বলিয়াছেন, বীরভূমের সম্বন্ধে তাহা সৰ্ব্বথ। প্রযোজ্য ৷ ” বিশ্বভারতী হইতে প্রকাশিত "ভূমিলল্পী” পত্রিকার আশ্বিনের সংখ্যায় বীরভূম জেলা-বোর্ডের চেয়ারম্যান এবং এই জেলার জল-সেচন-প্রচেষ্টার . প্রধান কৰ্ম্মী রায় অবিনাশচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায় বাহাদুর, এই বিষয়ে একটি প্রবন্ধ লিথিয়াছেন। উহা পাঠ করিলে জানা যায় যে, ১৯১৮ সালে, জেলার তদানীন্তন কলেক্টর শ্ৰীযুক্ত গুরুসদয় দত্ত, আই-সি-এস, মহাশয়ের যত্নে বীরভূমে এই আন্দোলনের স্বচনা হয় । তথন সমবায়-সমিতি ( cooperative Socioty ) গঠনের পদ্ধতি অবলম্বন করা হয় নাই। যে-সকল কুযকের জমিতে জল-সেচন হয়, তাহারাই চাদ তুলিয়া পঙ্কোদ্ধারের ব্যয় বহন করিত। ঐ বৎসর দত্ত-মহাশয় ও র্তাহার সহকৰ্ম্মীগণের চেষ্টায় প্রায় ৪৭••• টাকা ব্যয়ে ৪১১টি পুকুরের পঙ্কোদ্ধার হয়। এই প্রণালীতে কিছু দিন কাৰ্য্য করিবার পর, দেখা গেল যে, পঙ্কোদ্ধারের ব্যয়ের টাকা কৃষকদের নিকট সংগ্ৰহ করিবার আইনসঙ্গত ও বাধ্যতা-মূলক ব্যবস্থা না থাকিলে চলে না। এইজন্তই, জল-সেচন-সমবায়-সমিতি (Co-operative Irrigation Society) 213so I গত ১৯২২ সালে এই পদ্ধতি-অনুসারে বীরভূম জেলায় প্রায় ৫টি সম্মিতি গঠিত ও রেজিী হইয়াছিল। ইহাদের মধ্যে অনেক সমিতি পঙ্কোদ্ধারের কাজ শেষ করিয়াছে। goto, Toto-fi stol (co-operative department) মাত্র একজন ইনস্পেক্টর এই জেলায় এই কাৰ্য্যের জন্ত নিযুক্ত ছিল। সেইজন্ত যথেষ্ট কাজ হইতে পারে নাই। সম্প্রতি গভর্ণমেণ্ট, এই প্রচেষ্টার প্রয়োজনীয়তা উপলন্ধি করিয়া আরও দুই জন ইনস্পেক্টর ও তাঁহাদের অধীনে কয়েকজন স্থপারভাইজার নিযুক্ত করিয়াছেন ; কিন্তু এই জেলার যে সহস্ৰ-সহস্র বাধ-পুকুর নষ্ট হইয়া গিয়াছে, তাহার জন্ত আরও অধিক লোকের প্রয়োজন । কিন্তু কেবল সরকারী কর্মচারীগণের চেষ্টায় এই কাজ সম্পূর্ণভাবে সফল হইতে পারে না। দেশের লোক দিগকে এই আন্দোলনে যোগ দিতে হইবে, এবং গ্রামেগ্রামে নিরক্ষর কৃষকগণকে একতাস্থত্রে বন্ধ করিয়া সমবায়-সমিতি গঠন করিতে হইলে জেলার সকল শিক্ষিত লোকের সাহায্য করিতে হইবে। এই বিষয় বৈশাখের প্রবাসীতে বাকুড়ার উন্নতি-শীর্ষক-প্রবন্ধে আলোচিত হইয়াছে। বাধ ও পুকুর পক্ষোদ্ধার ও মেরামত হইলে কেবল ষে ধান ও অন্তান্ত ফসল জন্মিবার স্ববিধা হইবে তাহা নহে, ইহাতে স্বান ও পানের জন্য যথেষ্ট জল পাওয়া যাইবে । বীরভূমের মতন জলহীন স্থানে ইহাও কম স্ববিধা নহে। যে-সকল বাধ ও পুকুর আছে তাহার মেরামত ও পঙ্কোদ্ধার করিলেই যে জেলার সর্বত্র চাষের জন্য যথেষ্ট জল পাওয়া যাইবে তাহা নহে। পূৰ্ব্বে বলিয়াছি যে, বাকুড়া অপেক্ষ বীরভূম জেলায় ভূমির উচ্চ-নীচতা কম এবং বাধ-পুকুরের সংখ্যা অনেক কম। স্বতরাং এমন অনেক অংশ আছে যেখানে যথেষ্ট বাধ বা পুকুর নাই এবং সেচনের জন্য বাধ দিবার উপযুক্ত স্থানও নাই। সেইসকল স্থানে ছোট-ছোট নদী বা র্কাদড় বাধিয়া সেই জলে পাশ্ববর্তী জমিতে অনায়াসে সেচন হইতে পারে। এযাবৎ এইপ্রকার তিনটি ছোট-ছোট বাধের কাজ শেষ হইয়াছে। দাদপুর বঁাধে ৫৮২-২, বাহিরা বাধে ১৫০-২ ও জেমরান্দ মইসে ২৭••২ টাকা ব্যয় হইয়াছে। বর্তমানে আরও কয়েকটি বাধ দিবার চেষ্টা হইতেছে। তাহা ছাড়া, বক্রেশ্বর নদে বাঁধ দিয়া আন্দাজ ২৫০০০ হাজার বিঘা জমিতে জল-সেচনের ব্যবস্থার জন্ত জরীপ চলিতেছে। রামপুরহাট মহকুমার অন্তর্গত বাললই নদে বাধ দিবার প্রস্তাব হইয়াছে ; কিন্তু এখানে এখনও জরীপ আরম্ভ হয় নাই। এইসকল বড়-বড় কাজে স্থানীয় লোকের আগ্রহ থাকিলেও, গভর্ণমেণ্টের সাহায্য ব্যতীত সফলতা লাভ করা কঠিন। আধুনিক বিজ্ঞানে কৃষি-জগতে যুগান্তর উপস্থিত হইয়াছে। বাঙ্গালা দেশের অন্যান্য স্থানের ন্যায়, বীরভূমের কৃষকগণ কৃষি-বিজ্ঞানের কিছুই জানে নী। কৃষিকার্ধ্যে, পৃথিবীর অন্যদেশীয় কৃষকদের সহিত প্রতি