পাতা:প্রবাসী (চতুর্বিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৩৫০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৩য় সংখ্যা ] বীরভূমের উন্নতি VIII আরম্ভ হইয়াছে। বীরভূম জেলা-বোর্ডের সভাপতি অবিনাশচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়ের চেষ্টায় । কয়েকজন শিক্ষক স্বকলে আসিয়া এই কার্ধ্যে শিক্ষাপ্রাপ্ত হইয়াছেন। সম্প্রতি তাহাঙ্গের সাহায্যে তাঁহাদের নিজ-নিজ গ্রামে এই পদ্ধতি অবলম্বন করিয়া ম্যালেরিয়া-নিবারণের চেষ্টা হইতেছে। পূর্বের প্রবন্ধে বলা হইয়াছে, চিকিৎসার ব্যবস্থা থাকিলে ম্যালেরিয়া কলেরা ইত্যাদি রোগে এত লোকের মৃত্যু হইত না। যে-সময় জেলার বিবরণী ( District Gazetteer) লিখিত হইয়াছিল তখন এই জেলায় সৰ্ব্বস্থদ্ধ নয়টি দাতব্য চিকিৎসালয় ছিল। তাহার মধ্যে সিউড়ীর লেডি কার্জন জেনানা হাসপাতালে মহিলা চিকিৎসকের দ্বারা স্ত্রীলোকগণের চিকিৎসার ব্যবস্থা আছে। স্বথের বিষয় যে,দাতব্য চিকিৎসালয়ের সংখ্যা ক্রমশঃ বাড়িতেছে । বৰ্ত্তমানে এইজেলায় ৩০টি দাতব্য চিকিৎসালয় আছে । জেলার আয়তন ১৭৫৩ বর্গ মাইল ; স্বতরাং প্রতি ৫৮ বর্গ মাইলে একটি চিকিৎসালয় আছে। ইহা যথেষ্ট নহে। মুখের বিষয় এই যে, দাতব্য চিকিৎসালয়ের সংখ্যা ক্রমশঃ বাড়িতেছে এবং অনেক গ্রাম্য-সমিতি ( Union Board ) এইবিষয়ে উৎসাহ প্রকাশ করিতেছেন । এইসকল সমিতির চেষ্টায় মোল্লারপুর, বাতিকার, হাসান, বালিজড়ী, পাইকর ও কুন্তলা এই ছয়টি গ্রামে দাতব্য চিকিৎসালয় স্থাপিত হইয়াছে। অন্য সকল গ্রাম্য-সমিতিতে এইপ্রকার উদযোগ বাঞ্ছনীয়। ১৯২১ সালের মানুষ-গুস্তিতে এখানে ৪৫১ জন পুরুষ ও ছয় জন স্ত্রীলোক চিকিৎসা-ব্যবসায়ী বলিয়া লিখিত হইয়াছে। ইহার মধ্যে কয়জন শিক্ষা পাইয়া চিকিৎসাকার্ধ্যে উপযুক্ত হইয়াছেন এবং কয়জন “হাতুড়ে” আছেন, তাহা বলা কঠিন। তবে রিপোর্ট, দৃষ্টে জানা যায় যে, .জলপাইগুড়ি,দার্জিলিং ও চট্টগ্রামের পাৰ্ব্বত্য অঞ্চল ব্যতীত বাংলার সব জেলাতেই ইহা অপেক্ষ অনেক বেশী চিকিৎসক আছেন। যে-জেলায় রোগের প্রাদুর্তাব এত বেশী এবং মৃত্যুর হার অধিকাংশ জেলাকে অতিক্রম করিয়া যাইতেছে, সে-জেলায় যথেষ্টসংখ্যক চিকিৎসক প্রয়োজন । বর্তমান অন্নসমস্তার দিনে অনেক যুবক চিকিৎসাবিদ্যা শিক্ষা করিবার জন্ত কলিকাতার চিকিৎসা-বিদ্যালয়ে প্রবেশ-লাভ করিতে চায়। তাহাদের মধ্যে অধিকাংশই ব্যর্থ-মনোরথ হইয়া ফিরিয়া আসে। সেইসকল যুবককে আধুনিক চিকিৎসাশাস্ত্রে শিক্ষিত করিবার উদ্দেশ্যে বঁাকুড়ায় যে চিকিৎসাবিদ্যালয় স্থাপিত হইয়াছে, বৈশাখের প্রবাসীতে তাহার বিবরণ প্রকাশিত হইয়াছে। বীরভূমেও এই-প্রকার একটি বিদ্যালয় আবশু্যক । কুষ্ঠ বীরভূমে কুণ্ঠরোগের প্রাদুর্ভাবের কথা পূর্বের প্রবন্ধে . বলা হইয়াছে। বাকুড়ায় কুষ্ঠীর সংখ্যা এখানকার চেয়ে বেশী। বাংলা দেশের মধ্যে এই দুই. জেলা ও বদ্ধমানে কুষ্ঠার সংখ্যা অত্যন্ত বেশী। ইহার প্রতিকারের জন্য স্থানেস্বানে কুষ্ঠাশ্রম স্থাপিত হওয়া প্রয়োজন এবং আধুনিক চিকিৎসা-বিজ্ঞানের অঙ্গুমোদিত পদ্ধতি-অনুসারে ইহাদের চিকিৎসার ব্যবস্থা হওয়া দরকার। বাঁকুড়ায় খৃষ্ট্ৰীয়ান মিশনরিগণ-কর্তৃত স্থাপিত ও পরিচালিত একটি আশ্রম আছে। আর-দুই জেলাতে কোনও আশ্রম নাই। চিকিৎসার ব্যবস্থা নাই বলিলেই চলে। প্রতি-জেলায় এই রোগের বিশেষজ্ঞ একজন উপযুক্ত চিকিৎসক নিযুক্ত করা গভর্ণমেণ্টের কৰ্ত্তব্য। পৃথক চিকিৎসক নিযুক্ত করা ব্যয়সাধ্য হইলে, এই রোগের চিকিৎসায় বিশেষ অভিজ্ঞ ব্যক্তি ভিন্ন অপরকে এই জেলার সিভিল সার্জনের পদে নিয়োগ করা উচিত নহে। রাস্তা ইত্যাদি বীরভূম জেলার একস্থান হইতে অন্যস্থানে গমনাগমনের বেশ সুবিধা আছে । মোটের উপর, এই হিসাবে বীরভূম বাংলাদেশের অনেক জেলা হইতে উন্নত বলিতে পারা যায়। পূর্বের প্রবন্ধে বলা হইয়াছে যে, ইষ্ট-ইণ্ডিয়ান কোম্পানীর লুপ লাইন এই জেলাকে প্রায় সমান দুই অংশে বিভক্ত করিয়া চলিয়া গিয়াছে। পরে অগুলি ; হইতে সাইথিয়া পৰ্য্যন্ত লাইন নির্মিত হওয়ায় জেলার দক্ষিণ-পশ্চিম অংশের যাতায়াতের স্ববিধা হইয়াছে। নলহাট হইতে ইষ্ট ইণ্ডিয়ান রেলওয়ের একটি শাখা আজিমগঞ্জ অভিমুখে গিয়াছে। এই তিনটি লাইনের এই জেলার অন্তভূক্ত অংশের দৈর্ঘ্য ১২০ মাইলের অধিক। এতদ্ব্যতীত