পাতা:প্রবাসী (চতুর্বিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৩৫১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

‘වවර්‍ෂ e প্রবাসী--পৌষ, $99. [ २8° छांश, २घ्र थ७ সম্প্রতি আহম্মদপুর ষ্টেশন হইতে কাটোয় পৰ্য্যন্ত একটি ছোট রেলপথ ( light railway ) নির্মিত হওয়ায় জেলার দক্ষিণ-পূর্ব অংশের অনেক স্বানে যাইবার স্থবিধা হইয়াছে। এইসকল রেলপথে এই জেলায় ২২টি ষ্টেশন আছে। জেলাবোর্ডের নিৰ্ম্মিত ও সংরক্ষিত প্রায় ৫০০ মাইল রাস্তা আছে। ইহার ২৩২ মাইল পাকা, ও ২৮৯ মাইল কাচা । কঁচা রাস্তাতেও, বর্ষার কয়েকমাস ব্যতীত, যাতায়াতের বিশেষ অন্ধবিধা নাই। জেলাবোর্ডের আয় পূৰ্ব্ববৎ আছে, কিন্তু নানাবিধ খরচ আগের অপেক্ষ বাড়িয়াছে। রাস্তার কাজের জন্য গাড়ী-ভাড়া, মজুরি ইত্যাদিও বাড়িয়াছে। স্বতরাং অনেক রাস্তা পূর্বের ন্যায় সংরক্ষিত হইতেছে না। যাহা হউক এইসকল রেলপথ ও রাস্ত থাকাতে এখান কার লোকেরা বিদেশে যাইতে বা জেলার মধ্যে একস্থান হইতে অন্যস্থানে গমনাগমন করিতে বেশী কষ্ট পায় না। छत्रल • পূৰ্ব্বে জেলার অনেক অংশে জঙ্গল ছিল। কিন্তু এখন জঙ্গল_নাই বলিলেই চলে। কোথাও-কোথাও ক্ষুদ্রকায় শাল ও অন্যান্ত গাছের সমাবেশ দেখা যায়, তাহ জঙ্গল নামে অভিহিত হইবার যোগ্য নহে। জঙ্গল নষ্ট হওয়ায়-জালানি কাঠ দুষ্প্রাপ্য হইয়াছে। কিন্তু নিকটবস্তু কয়লার খাদ হইতে অপেক্ষাকৃত স্বলভমূল্যে কয়লা পাওয়া যায়, সেইজন্য জালানি-কাঠের অভাব বেশী অনুভূত হয় না । জালানি-কাঠ ব্যতীত জঙ্গল হইতে আরও অনেক । প্রকারে লোকের অর্থাগম হইত। হরীতকী, কুচিলা ইত্যাদি নানাবিধ আবশুক ফল পাওয়া যাইত। ওম্যালি সাহেবের প্রণীত জেলার বিবরণী ( District Gazetteer) পাঠ করিলে জানা যায় যে, পূৰ্ব্বে এই জেলার পশ্চিম অঞ্চলের জঙ্গল হইতে অনেক তসরগুটি (cocoons) পাওয়া যাইত। এখন এই জেলার জঙ্গল নষ্ট হইয়া যাওয়ায় এখানে আর গুটি জন্মে না । সমস্তই সাওতাল পরগণা হইতে আনীত হয়। ’ -জঙ্গলে প্রচুরপরিমাণে ঘাস জন্মে। স্বতরাং নিকটবর্তী গ্রামের গো-মহিষাদির চরিবার স্থবিধা হয়। গো চারণ-ভূমির অভাব ষে গো-জাতির অবনতির প্রধান কারণ ইহা স্বীকৃত হইয়াছে। এই জেলার জঙ্গল-সকল সংরক্ষিত হইলে সেই অভাব কতকপরিমাণে দূর হইবে। ইহা ছাড়া উচ্চভূমির উপরিস্থ জঙ্গল কাটিয়া ফেলাতে আর-একটি ভয়ানক অনিষ্ট ঘটিতেছে। জঙ্গলাবৃত স্থানে বৃষ্টি পড়িলে, ঐ বৃষ্টির জল অনেকপরিমাণে মাটিতে সঞ্চিত হয় এবং অনেকদিন পৰ্য্যন্ত চতুষ্পার্শ্বস্থ ভূমিকে নরম করিয়া রাখে । অনেক বিশেষজ্ঞের মত এই যে, উচ্চ ভূ-ভাগ জঙ্গলাবৃত থাকিলে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ বৃদ্ধি হয়। স্বতরাং জঙ্গল নষ্ট হওয়াই যে বীরভূমের জলাভাবের অন্যতম কারণ তাহাতে সন্দেহ নাই । ইহার প্রতিকারের জন্য উন্মুক্ত স্থানসমূহে বৃক্ষরোপণের চেষ্টা হওয়া চাই। কোন-কোন বৃক্ষ এই জেলার উপযোগী, তাহা নিৰ্দ্ধারণ করা কৰ্ত্তব্য এবং তাহার বীজ বা চারা সরবরাহের ব্যবস্থা চাই । এই বিষয়ে জেলার প্রধান জমিদারগণের দৃষ্টি আকর্ষণ করিতেছি। উপসংহার এইপ্রবন্ধে যাহা লিখিত হইল তাহ-ছাড়া অবনতির আরও অনেক কারণ আছে। তাহাও দূর করা কর্তব্য। কিন্তু তাহার অধিকাংশই বাংলার অন্যান্য জেলাতেও বর্তমান আছে। সকলেই তাহা জানেন । দৃষ্টান্তস্বরূপ, দলাদলি ও মামলা-মোকদ্দমার কথা উল্লেখ করা যাইতে পারে। গ্রাম্য দলাদলিতে ও অযথা মামূলা-মোকদ্দমায় অনেক লোক কষ্ট পায় ও সৰ্ব্বস্বাস্ত হয়। চেষ্টা করিলে, ইহাদের কষ্ট কতকপরিমাণে নিবারণ করা যাইতে পারে। বিবাহ ও শ্রাদ্ধে অতিরিক্ত ব্যয় এবং অনাবশ্যক বিলাসদ্রব্যের ব্যবহারে অনেক অর্থের অপব্যয় হয় । ইহাও অবনতির আহুষঙ্গিক কারণ। এই বিষয়ে বাহুল্য-ভয়ে কিছুই লিখিলাম না। যে-সকল কারণ বীরভূমের অবস্থার সহিত বিশেষভাবে সংশ্লিষ্ট তাঁহারই উল্লেখ করিলাম। পরিশেষে বক্তব্য এই যে, এইপ্ৰবন্ধ পাঠ করিয়া, আমার সহকৰ্ম্মীগণের মধ্যে যদি কাহারও বীরভূমের অবনতির প্রকৃত কারণ উপলব্ধি ও স্বীয় কর্তব্য-নির্ধারণের সাহায্য হয়, তাহা হইলে আমার শ্রম সার্থক জ্ঞান করিব। কৰ্ম্মী -