পাতা:প্রবাসী (চতুর্বিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৩৬১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

V)3V. প্রবাসী—পৌষ, ১৩৩১ [ ২৪শ ভাগ, ২য় খণ্ড গ্রহনক্ষত্র সংক্রান্ত র্তার এ মতবাদ লিপিবদ্ধ করে” রেখে গিয়েচেন । তাদের আলোর উৎপত্তি-সম্বন্ধে লোকনাথ লিগেছিলেন যে, পৃথিবীতে স্ফটিক প্রস্তরের যে-শ্রেণী দেখতে পাওয়া যায়, মহাব্যোমস্থ এইসমস্ত স্ফাটিক তার অপেক্ষ উংকৃষ্টতর শ্রেণীর হওয়ায় তাদের অভ্যন্তর থেকে একপ্রকার স্বভাবজ জ্যোতি বার হ’য়ে থাকে । এ-সংক্রান্ত বহু প্রমাণ ও বহু জ্যামিতির রেখা ও অঙ্কন তার ঐ পুথিখনিতে ছিল দেখা যায়, কিন্তু লোকনাথের প্রতিভা অত্যন্ত উচ্চশ্রেণীর হওয়ায় তিনি উrর মত সম্বন্ধে আদৌ গোড়া ছিলেন না, সকলকে তার মত পড়ে দেখে বিচার করতে অনুরোধ করেছিলেন। তিনি মাঝামাঝি কিছু হওয়াটাকে অত্যন্ত ঘৃণা করতেন। তিনি চাইতেন উচ্চজ্ঞান, নয় ত একেবারে মুখত । ত্রিশঙ্কুর স্বৰ্গবাসের উপর তার একট। আন্তরিক অশ্রদ্ধা ছিল। একবার তিনি কয়েক বৎসর ধরে বহু পরিশ্রম করে সাস্থ্যের এক ভাষ্য প্রণয়ন করেছিলেন । লেখা শেষ করে তার মনে হ’ল তিনি যেমনটি আশা করেছিলেন ভাষ্য তেমনটি হয়নি, অনেক খুঁত রয়ে গিয়েচে, অনেক চেষ্টা করে ও লোকনাথ সে খুঁত কিছুতেই দূর করতে পারলেন না। একদিন সকালবেলা হস্তলিখিত পুথিখানা নিয়ে তিনি পুণাভদ্রার তীরে গিয়ে দাড়ালেন । জলের স্রোতে তাঁরলগ্ন শরবনগুলো তখন থর্থর করে কাপচে। লোকনাথ অনেক বৎসরের পরিশ্রমের ফলস্বরূপ পুথিখানাকে টান মেরে নদীর মাঝখানে ছুড়ে ফেলে দিলেন, একখণ্ড ইটের মতনই সেখান সে-মুহূৰ্বে ডুবে গেল, শুধু সাথ্যের উগ্ৰ পাণ্ডিত্যের সংঘাতে বন্যনদীর নিরক্ষর বুকটি অল্পক্ষণের জন্য ভয়বিহ্বল হয়ে উঠল মাত্র । দিন যেতে লাগল। লোকনাথ পূর্বের মতন আর একস্থানে অনেকক্ষণ বসতে পারেন না । মনের শাস্তি তিনি দিন-দিন হারাতে লাগলেন। এক-একদিন সমস্ত দিন তিনি কিছুই খেতেন না, কি জানি কেন, শুধু কেবল नशैत्र थाप्न-धाम्ब गांद्रा निनभान षष्ब' क्लड़ाप्खद्र भङन ঘুরে-সুরে বেড়াতেন। রাত্রে আকাশের দিকে চাইতেন না, যদি হঠাৎ উপরদিকে চেয়ে ফেলতেন, কালো আকাশে ভাঙা-ভাঙা মেঘের ফাকে-ফাকে যে-সব নক্ষত্র জলজল করত, তাদের সন্ত্রস্ত দৃষ্টির সাম্নে তিনি অনভ্যস্তপাঠ অপরাধী বালক-ছাত্রের মতন সঙ্কুচিতভাবে দৃষ্টি নামিয়ে

  • ছ'হাতে চোখ ঢেকে ফেলতেন। রাত্রে নির্জন মাঠে

চারিধার থেকে অন্ধকারে রাশি-রাশি নীরব প্রশ্ন জেগে উঠত, ভগবান উপবর্ষের বেদাস্তস্থত্রের মধ্যে এদের উত্তর মেলে না কেন ? লোকনাথ আবার অত্যস্ত একমনে দর্শনের পুথি পড়তে স্বরু করলেন। কিন্তু র্ত্যর মুখ যদি সে-সময় কেউ দেখত, সে বেশ বুঝত যে, তৃপ্তির চেয়ে অসন্তোষই হয়েচে তার বেশী। দুঃখ থেকে মুক্তিলাভ করবার যে সহজ উপায় দার্শনিকের নিরূপণ করে গিয়েচেন, পড়ে’ শুনে’ দেখে লোকনাথের দুঃখ যেন তা’তে বেড়েই চলেচে । রাত্রে বঁাশের আড়ার পুস্তকাধার থেকে ভূৰ্জপত্রের পতঞ্জলি বক্ৰচক্ষে গৌতমের দিকে চাইতেন, কপিল গৰ্ব্বমিশ্রিত ব্যঙ্গ হাস্তে জৈমিনির দিকে কৃপাদৃষ্টিতে চেয়ে রইতেন, মূখ-গুলোর সঙ্গে এক-আসনে বসতে হয়েচে ভেবে গভীর অপমানে ব্যাসদেব পুথির মধ্যে দিনদিন শুকিয়ে উঠতে লাগলেন। রাজ-দুপুরের সময় অধ্যয়নক্লাস্ত অবসন্ন মস্তিষ্কে শধাগ্রহণ করে’ লোকনাথের মনে হ’ত অৰ্দ্ধ-অন্ধকারে ঘরের মধ্যে একটা খণ্ডপ্রলয় চলচে । দর্শনাচাৰ্য্যগণ যেন কেউ কারুর কথা না শুনে পরস্পর মহা তর্ক তুলেচেন, তাদের ভাষ্যকার ও উপভাষ্যকারগণের বাকৃযুদ্ধ হাতাহাতিতে পরিণত হবার উপক্রম হয়ে উঠচে, কথার ওপর কথা চড়িয়ে দু’দিক থেকেই কথার পাহাড় গড়ে তোলবার চেষ্টা হচ্চে.লোকনাথের আর ঘুম হ’ত না, পুরাতন ভূৰ্জপত্রের গন্ধে ভারাক্রাস্ত বদ্ধ বাতাসে র্তার নিশ্বাস বন্ধ হ’য়ে আসত, শধ্যা ছেড়ে উঠে তিনি বাইরের নিমগাছটার তলায় এসে দাড়াতেন, হয়ত কোন দিন ভাঙা চাদের নীচে বিশাল মাঠ আলো-আঁধারে অস্পষ্ট দেখাতো, কোনো দিন কষ্টি-পাথরের মতন কালে অন্ধকারে পথের তলায় ঘাসের মধ্যে থেকে কত কি কীটপতঙ্গ বিচিত্র স্বরে ডাকৃতে থাকৃত, বনঝোপের মাথায় জোনাকিপোকার ঝণক জলত-নদীর বিবুঝিরে ঠাও। বাতাসে একটু শাস্তিলাভ করবার সঙ্গে-সঙ্গুে আবার সেইসব নীরব নৈশ প্রশ্ন প্রেতের মতন উাকে পেয়ে বসত।