পাতা:প্রবাসী (চতুর্বিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৩৬৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

' ૭8ના - প্রবাসী—পৌষ, ১৩৬১ হৃদয়ের চিরন্তন প্রশ্নপুঞ্জ তাদের মনে কস্মিন-কালে জাগে না বলে’ই । তবু কখনো-কখনো, কোনো-কোনো অসাবধান মুহূৰ্ত্ত, যজ্ঞভঙ্গকারী নিশাচরের মতন অতর্কিত-ভাবে হঠাৎ এসে পড়ে। র্তার বিশ বৎসরের যৌবন মায়ার মুখের লজ্জনিষ হাসিতে, তার প্রসন্ন ললাটের মহিমায় স্নিগ্ধ হয়েছিল, যৌবন-লক্ষ্মীর বরণ-ডালির সেই প্রথম মাঙ্গলিক । অনেক বৎসর পরে মঠে থাকৃতে লোকনাথ শুনেছিলেন, মায়া বিবাহ করেনি, কোন মঠে প্রত্ৰজ্য গ্রহণ করে’ ভিক্ষুণী হয়েচে । সেও অনেক দিনের কথা, তার পর তার আর কোনো সংবাদ তিনি রাখেন না, যেখানে যায় যাক, তিনি গ্রাহ করেন না । সন্ধ্যার ছায়া মাঠের চারিধারে ধন হ’য়ে এল। কুটীরে যেতে-যেতে লোকনাথ আকাশের দিকে চাইলেন, মনেমনে বললেন—হে অদৃশ্ব শক্তি, আমি দার্শনিকাচাৰ্য্য লোকনাথ—অজ্ঞান, মূখ সাধারণ মানুষের মতন আমার যুক্তি-প্রণালী বা মানসিক ধারা নয় । আমি জানতে চাই, এই কাৰ্য্যস্বরূপ দৃশ্যমান জগৎ কোন কারণ-প্রস্থত। সাধারণ লোকে ধাকে ঈশ্বর বলে, তার মূলে কিছু আছে কি না । গ্রন্থের কথ। আমি জানিনে, কারণ তার প্রমাণের ওপর আমার কোনো আস্থা নেই । আমি তোমার কাছে প্রমাণ চাই, জানিনে তোমার শুনবার ক্ষমতা আছে কি না, থাকে ত জানিও •••ভোলাবার চেষ্টা কোরো না, —তী’তে আমি ভুলব না। - Es ( 8 ) মহামণ্ডলীর মঠে প্রধান দার্শনিক বৈভাষিক-পন্থী মাধবাচাৰ্য্য বাস করতেন । লোকনাথ তার কাছে গিয়ে প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করলেন । মাধবাচাৰ্য্য বোঝা’তে গিয়ে প্রথমত মুক্তি কি, মুক্তি কয়প্রকার, মুক্তির ও নির্বাণের মধ্যে প্রভেদ কিছু আছে কি না, প্রভৃতি এত বিস্তৃতভাবে বলতে লাগলেন ও এত শাস্ত্রবাক্য উদ্ধৃত করে তার মতের পরিপোষণের চেষ্টা পেতে লাগলেন, যে, লোকনাথ অত্যন্ত পাণ্ডিত্যপ্রিয় হ’লেও তার মনে হ’তে লাগল, মুক্তির একটি স্বরূপ তিনি [ ২৪শ ভাগ, ২য় খণ্ড SS S SSAAA AAAA MAAA AAAA AAASA SSASAS SSAS SSAS বুঝেচেন, সেটি সম্প্রতি মাধবাচার্ধ্যের বাক্যজালের হাত এড়ানো ৷ 矚 স্বান করতে কবৃতে একদিন তার মনে হ’ল, তার পিঠে যেন কিসের লেজ ঠেকৃচে । তিনি তাড়াতাড়ি পিছনে ফিরে’ জলের মধ্যে হাত দিয়ে দেখলেন, লেজ নয়, একটা জলজ গাছের পাতা গায়ে ঠেকৃচে । গাছটাকে তিনি টান দিয়ে উপড়ে তুলে ফেললেন, দেখলেন একটা শেওলা-গাছ—এ শেওলা নদীতে তিনি পূৰ্ব্বে দেখেচেন, তেমন লক্ষ্য করেননি ভালো করে’, চোখ পড়তে দেখলেন যে, শেওলার ডাটার যে-অংশটা তার গায়ে স্থড্র সুড়, করে” ঠেকৃছিল, সেটা জলের নীচেকার অংশ, সে-অংশের পাতাগুলি ঝাউপাতার মতন—কিন্তু জলের উপরের অংশের পাতাগুলি পানের মতন। জলের উপরের অংশের পাতা জলের উপরে ভাসে, নীচের অংশের পাতা ও রকম হ’লে স্রোতের তোড়ে ভেঙে যেত, কিন্তু চুলের গোছার মতন হওয়ায় তা’রা জলকে বাধা দেয় না, জল তাদের মধ্যে দিয়ে বেশ কেটে চলে যায়, যখন যে দিকে ম্রোতের গতি পাতাগুলি তখন সে-দিকে হেলে পড়ে । লোকনাথ অত্যন্ত অন্যমনস্কভাবে স্বান করে ফিরলেন। একটা কি জিনিস যেন তিনি ধরেচেন ! * তার মনে হ’ল একই ভাটার উপরে নীচে দু’-রকম পাত হওয়ার মূলে প্রকৃতির মধ্যে একটা চৈতন্তসত্তা বেশ যেন ধরা পড়চে—নইলে এই নগণ্য জলজ শেওলার পত্রবিন্যাসের মধ্যে এ-নিপুণতা কোথা থেকে এল ? পাছে ভেঙে যায়, এজন্যে কে এর জলের নীচের অংশের পাতা ঝাউপাতার মতন করে’ গড়লে ? লোকনাথের আর-একটা কথা মনে হ’ল । কয়েকদিন পূৰ্ব্বে তিনি অত্যন্ত অধীরভাবে জাগতিক শক্তিব কাছে তার চৈতন্যসত্তার অস্তিত্ব-সম্বন্ধে একটা প্রমাণ চেয়েছিলেন, তার সেই প্রার্থনা কি এইভাবে কেউ পূর্ণ করলে ? ন্যায় যুক্তির দিক্‌ থেকে এ-সিদ্ধাস্ত এত বিপজ্জনক র্তার মনে হ’ল যে, তিনি এ-কথা জোর করে" মন থেকে দূর করে দিলেন। সাধারণ মানুষের মতন এত