পাতা:প্রবাসী (চতুর্বিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৩৬৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

లd e প্রবাসী—পৌষ, ১৩৩১ ২৪শ ভাগ, ২য় খণ্ড রয়ে গেল। তার মনে হ’ল শ্বেত আকন্দের মূল সপাঘাতের মহৌষধ...মাঠের ইতস্ততঃ শ্বেত আকন্দের সন্ধানে গেলেন, সে-গাছ চোখে পড়ল না-হাতটা যেন অবশ হয়ে আসচে বলে তার মনে হ’ল। বিষ তবে নিশ্চয়ই উপরে উঠচে...লোকনাথ সম্ভব-অসম্ভব সমস্ত স্থান খুঁজতে লাগলেন, আরও দু’একটা সর্পাঘাতের ঔষধ মনে আনবার চেষ্টা করলেন,— কুসুম-ফুলের বীজ, রক্তচন্দনের ছাল, ইত্যাদি, কোনটাই হাতের কাছে নেই! এদিক-ওদিক্‌ খানিকক্ষণ খুঁজতে-খুজতে লোকনাথের মনে হ’ল তিনি আর দাড়াতে পারছেন না, চোখে অন্ধকার দেখে? একটা ঝোপের কোলে তিনি বসে পড়লেন---অসহ-দংশন-বিষে তার সর্বাঙ্গ তখন বিমূ-ঝিম্ কবৃছে।-- ধীরে-ধীরে তার মনের নিভৃততম অংশ কিসের আলোকে যেন আলোকিত হয়ে উঠতে লাগল-আসন্ন মরণের বজ্ৰকঠোর, নিৰ্ম্মম, করাল, রৌদ্র স্বর, দূরশ্রত মুক্তস্রোত গিরিনিঝরের তালে যেন তার কানে মুক্তির গান বাঙ্গুচ্চে.তোমার পাষাণকারী এবার ভাঙব. তোমার চোখের বাধন এবার খুলব••• হে অনন্ত দেব, মহাব্যোমের অনন্ত শূন্যতার পারে কোন স্বদূরতম, অপ্রকল্প রাজ্যের জ্যোতিঃসিংহাসন থেকে তুমি তোমার এই ব্যাকুল, দীনতম প্রজার উপর লক্ষ্য রেখেছ ? তাই বুঝি সেদিন জলের মধ্যে আমায় পথ দেখিয়েছিলে ?•••সে দিন তোমায়ও চিনিনি, তোমার পথও চিনিনি.আজ বোধ হয় বুঝেচি. হৃদয়ের অন্তরে সেই তুমি আমার আত্মা, পৃথিবীর অপেক্ষ মহান, অন্তরীক্ষের অপেক্ষ মহান, স্বর্গের অপেক্ষ মহান, সৰ্ব্বভূতের অপেক্ষ মহান...মেঘ যেমন ওষধিগণের উপজীব্য, তুমি তেমনি আমার প্রাণধারার উপজীব্য...তুমি আমার প্রাণের কথা শুনতে :াও ? বেশ, তা হ’লে আমায় পথ দেখিয়ে নিয়ে চলো, দেব, এই অন্ধ রাজ্যের পারে, ওই দিগন্ত-সীমার পারে, জীবন-মহাসমুদ্রের পারে। কোথায় তোমার চিরবিকশিত জ্যোতিঃপ্রভাত, কোথায় দৈন্তমুক্ত জ্ঞানসম্পদের অপরাজিত আয়তন, চলে 적··· হঠাৎ লোকনাথের মরণাভিভূত দার্শনিক বুদ্ধি মাথা তুলে’ বলে উঠল—তোমার বিচার-শক্তি চলে যাচ্চে,••• বিষের যাতনায় যখন তোমার সমস্ত ইন্দ্রিয় অবশ হ’য়ে আসচে, তখন তোমার যে বিচার, সে so বিচার ? মনের এই তরল ভাব, দুৰ্ব্বলতার পরিচায়ক, মন থেকে দূর করে দাও... লোকনাথ কিছুই ঠিক কবুলেন না, তার মন আর যুদ্ধ করতে পেরে উঠছিল না...আফিমের নেশার মতো মরণের তন্দ্রা তার ক্রমেই গাঢ় হ’য়ে এল--- কোথায় কোন দুটি বালকবালিকা এক ক্ষুদ্র গ্রামের গ্রামসীমায় বুনো খেজুরের ঝোপে-ঝোপে তলায়-পড়া খেজুর কুড়িয়ে খেয়ে বেড়াচ্চে-সময়ের দীর্ঘ পাষাণঅলিন্দের দূরতম সীমায় তাদের ছোট ছোট্ট পা গুলির অস্পষ্ট শব ক্রমেই অস্পষ্টতর হ’য়ে আসচে-ওধারে তা'রা-দুটিতে ক্রমেই মিলিয়ে যাচ্চে--- এক গ্রাম্য বনের মৌ-গাছের ডাল থেকে দু’জনে মেী ফুল পেড়ে খাচ্চে, বালিকাটি ভালে রসাল ফুল পেলেই বালকের হাতে তুলে’ দিচ্চে.এই যে এটি, নিত্য দ্যাখে, বরং দ্যাখো তুমি থেয়ে. নীলব্যোম-পথে দীর্ঘদেহ, শ্বেতশ্বশ্ৰ, সমিধ্যবাহী, জ্যোতিৰ্ম্ময় ঋষিরা চলেচেন-তাদের মধ্যে কে যেন পিছন ফিরে’ সঙ্গীদের নিকট প্রস্তাব করছেন, ওহে সঙ্গীগণ, আমাদের কমণ্ডলু যা দিয়ে পূর্ণ করেচি, এস তা ফেলে’ দিয়ে পুনৰ্ব্বার নূতন জল সংগ্ৰহ করি...এত দিন ভ্রমণের পর মিষ্ট জলের উৎসের সন্ধান পেয়েচি--- র্তাদের কমণ্ডলু থেকে কালীগোলার মতো কি ঝরে’ পড় চে--- পথের বাকে একদিনের মেঘ-ভরা বৈকালে মেয়েটিকে কে খুব মেরেচে, তার এলোমেলে চুলগুলো মুখের চারিদিকে ছড়িয়ে পড়েচে-কাপড় কে টেনে ছিড়ে দিয়েচে--- সে কেঁদে ফুপিয়ে-ফুপিয়ে বলচে-কেন তুমি মারবে ?-- কেন আমায় মারবে তুমি ?...এ-পাড়ায় আসি বলে’ ?-- আর ককখনো আসব না-দেখে নিও, আর ককৃখনো যদি আসি••• লোকনাথের মরণাহত দৃষ্টি বিরাট বিশ্বের উপর সেই