পাতা:প্রবাসী (চতুর্বিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৩৭৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

প্রবাসী SDSe , రిలి { ২৪শ ভাগ, ২য় খণ্ড আসিলেন । র্তাহার দেহে যেন প্রাণ ফিরিয়া আসিল । কিন্তু পরক্ষণেই আর-একটা ভয়ানক আশঙ্কা মনে জাগিয়া উঠিল। স্থথেন্দু কহিলেন, “মা দেখে যাও, তোমার ছেলের কীৰ্ত্তি।” বরযাত্রী এবং অন্যান্য লোকজনের তখন সকলেই নিদ্রিত হইয়া পড়িয়াছিল। মহেশ্বরী শঙ্কিতমনে হখেলুর সহিত বাহির-বাড়ীতে আসিয়া উপস্থিত হইলেন। দেখিলেন বারুদঘরের একপাশ্বে জালানী কাঠের উপর বালক অকাতরে নিদ্র। যাইতেছে ! তখন প্রভাত হইয়াছিল। মহেশ্বরী তাহাকে ডাকিয়া তুলিলেন। দেখিলেন, চক্ষু দুটি বসিয়া গিয়াছে— উদরটিতে বুভূক্ষার সকল লক্ষণই স্বম্পষ্ট হইয়া উঠিয়াছে। ছেলেকে কোলে জড়াইয়া শত চুম্বনে ছাইয়া দিয়া মা বলিলেন, “এখানে শুতে কে বলেছে তোকে ?” কানাইলাল মাথা নীচু করিয়া রহিল। মহেশ্বরী চোখের জল লুকাইয়া জিজ্ঞাসা করিলেন, “রাত্রে খাস্নি কিছু ?” সে কথা বলিল, “না ।” মহেশ্বরী কহিলেন, “সে বুঝতে পেরেছি—আয় খাবি আয় ! আহা! পেটুটা দেখি চিলতে-পানা হয়ে গেছে! বাছা রে - গতরাত্রের লুচি, তরকারী ও মিষ্টান্ন মহেশ্বরী বসিয়াবসিয়া, কানাইলালকে খাওয়াইতে লাগিলেন। তার পর ধমক দিয়া জিজ্ঞাসা করিলেন, “সেখানে কাঠের বোঝার উপর গুতে গেলি কেন ?" কানাই চুপ করিয়া থাকিয় একবার বাকুনি দিয়া বালয়া উঠিল, “ইচ্ছে।” • “এ যে বড় বেজায় ইচ্ছে! আমন আরামের শয্যার উপর ইচ্ছে না হ’লে আর কোথায় হবে!” কানাই কিছুকাল নীরবে থাকিয় কহিল, "বিয়ে ত হ’য়ে গেল, এরা-সব যাবে কবে ?” “কা’রা ?” কানাই মুখ শিটুকাইয়া কহিল, “থালা-খালা খেতে দিতে পারেন—জানেন না কা’রা !” মহেশ্বরী হাসি চাপিয়া কহিলেন, “বরযাত্রীরা ?” কানাই আবার মুখ শিষ্ট্ৰকাইয়া কহিল, ‘বরযাত্রীরা ? —মূক্ষীরা ।” বস্তুতঃ মোক্ষদার ব্যবহার-গুণে কানাইলাল পশ্চাতে তাহার উপর সদয় হইয়া উঠিতেছিল। কিন্তু সে আর কাতারও নাম জানিত না। তাই মোক্ষদাকেই মুখপাত্ররূপে ধরিল । " মহেশ্বরী হাসিয়া কহিলেন, “এখুনি যাবে ? কুটমবাড়ী এসেছে, দু’পাচ মাস থাকৃবে যে ” কানাই শিহরিয়া উঠিল। বলিল, “দু—পা—চ— মা—স ?” মহেশ্বরী তাহাকে বুকের মধ্যে টানিয়া লইলেন। বলিলেন, "মায়ের ছেলে মায়ের কাছে থাকৃবি—তোর ভাবনা কি ? পাচ মাস ছেড়ে দশ মাস থাকৃ না তা'র', আমার কোল থেকে তোকে দূরে ঠেলে কার সাধ্যি ?” ( ক্রমশ: )