পাতা:প্রবাসী (চতুর্বিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৪৩২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

২য় সংখ্যা ] তাহা হইলে সকল ঋতুতে নির্বাচিত গ্রামের অবস্থা ও স্বথ, দুঃখ, কৃষি, স্বাস্থ্য, ভিন্ন-ভিন্ন ঋতুতে বালকবালিকাদের শিক্ষালাভের অবসরের ও অন্য সুযোগের পরিমাণ ইত্যাদিসম্বন্ধে অভিজ্ঞতা জন্মিবে। যদি একবৎসরের মধ্যে অন্ততঃ কোন-কোন বিষয়েও গ্রামবাসীদের সেবা ও সাহায্য কৰ্ম্মীরা করিতে পারেন, তাহা হইলে তাহাদের কাজের রিপোটু প্রকাশ করিয়া সৰ্ব্বসাধারণের নিকট হইতে পুনৰ্ব্বার টাকা চাহিবার অধিকার জন্মিবে। কাজ ভাল হইয়াছে –এই বিশ্বাস জন্মাইতে পারিলে টাকা পাওয়াও যাইবে । গ্রামের উন্নতির চেষ্টা করিতে হুইবে, এই কথা ও সংকল্প নূতন নহে । বাংলা দেশে এই প্রস্তাব বোধ হয় শ্ৰীযুক্ত রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর প্রথমে করেন, এবং প্রস্তাবঅকুযায়ী কাজও তাহার দ্বারা অনেক হইয়াছে ও হইতেছে । তদ্ভিন্ন অন্ত অনেকেও এই কাজে প্রবৃত্ত হইয়াছেন । যেমন ডাক্তার গোপালচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের ম্যালেরিয়া নিবারণ চেষ্টা । সকলেরই কাজের প্রণালী এবং কি-কি কাজ কতদূর হইয়াছে, তাহার বৃত্তাস্ত সংগ্রহ করা উচিত। তাহা হইলে নূতন জায়গায় কাজ ফাদিবার সুবিধ। হইবে । বঙ্গে টিলক স্বরাজ্য ফণ্ডে ব্যয় আগে হইতে ভিন্ন-ভিন্ন কাজের জন্য টাকা ভাগ করিয়া রাখার কথা উপরে বলিয়াছি । ইহার আবশ্যকভ। বুঝাইবার বিশেষ প্রয়োজন নাই। কারণ, যেমন সকল গবন্মেণ্ট, মিউনিসিপ্যালিটি প্রভৃতি আয়-অন্তসারে ভিন্ন-ভিন্ন বাবতে ব্যয়ের বরাদ বজেটে করিয়া থাকেন, তেমনি বরাদ্দ লোকহিতকর প্রতিষ্ঠানসমূহেরও করা উচিত! অনেক হিসাবী গৃহস্থ ও আয়-অনুসারে পারিবারিক ব্যয়ের বরাদ্দ এই প্রকারে করিয়া থাকেন । এলাহাবাদ হইতে টিলক স্বরাজ্য ফণ্ডের আয় ব্যয়ের যে-হিসাব প্রকাশিত হইয়াছে. তাহ দেখিয়া মনে হয়, সে, সম্ভবতঃ আগে হইতে বিবেচনা করিয়া বঙ্গদেশে ফণ্ডের টাকা ভিন্ন ভিন্ন কাজে ও উদ্দেশ্যে ব্যয় করিবার ব্যবস্থা করা হয় নাই । ১৯২১ সালের ব্যয়ের হিসাবে দেখিলাম, খন্দরের জন্য একটি পয়সাও ব্যয় করা হয় নাই ; ঐ কাজের জন্য ১৯২২ সালে এবং ১৯২৩ সালেও একটি পয়সা ও ব্যয় কর হয় নাই। অথচ খদ্দর উৎপাদন, বিক্রয় ও ব্যবহারকে মহাত্মা গান্ধীর প্রভাবাধীন কংগ্রেস বরাবর অতুষ্ঠেয় কৰ্ম্মের মধ্যে প্রধান স্থান দিয়া আসিতেছেন । ১৯২১ সালের হিসাবে ( ১৯২২এর পুস্তিকার পৃষ্ঠা ৫ ) বিবিধ প্রসঙ্গ—বঙ্গে টিলক স্বরাজ্য ফণ্ডে ব্যয় 836: আর-একটা নূতনরকমের জিনিষ দেখিতেছি । সকলেই জানেন, যে, যে-ষে প্রধান-প্রধান কাজে থোক্ বেশী টাকা খরচ হয়, তাহা স্বতন্ত্র দেখাইয়া, ক্ষুদ্র-ক্ষুদ্র ব্যয়ের সমষ্টি “বিবিধ’ নাম দিয়া দেখানে হয়। কিন্তু যে-ব্যয়ের হিসাবে থদ্বয়ের জন্য শৃঙ্ক টাকা, অস্পৃশ্বতা-দূরীকরণ-চেষ্টায় শূন্য টাকা, সালিসীর জন্ত শূন্ত টাক, কৰ্ম্মীদের দক্ষিণা বাবতে শূক্ষ টাকা দেখানে হইয়াছে, তাহাতে “বিবিধ" ব্যয়ের সমষ্টি দেখানো হইয়াছে একলক্ষ চৌষটি হাজার আটশত পয়ত্রিশ টাকা সাড়ে দশ আনা ! এইরূপ ব্যয়-তালিকা দেখিলে এরূপ বিশ্বাস জন্মে না যে, স্বশৃঙ্খলভাবে, বিবেচনাপূৰ্ব্বক, ভিন্ন-ভিন্ন কাজের গুরুত্ব-অনুসারে, সদ্ব্যয় করা হুইয়াছে । এলাহাবাদ হইতে প্রকাশিত যে-পুস্তিকায় ১৯২৩ সালের হিসাব দেখানো হইয়াছে, তাহার ৬ ও ৭ পৃষ্ঠায় ১৯২১, ১৯২২ ও ১৯২৩ সালের প্রপাগাণ্ড অর্থাং মত-প্রচারের ব্যয়ের বহরটা দেখুন । ১৯২১এর হিসাবে ইহা দু'টি-দফায় দেখানে গুইয়াছে। প্রথমটির নাম—মতপ্রচার, আফিসের স্বেচ্ছা-সেবক, দুর্ভিক্ষ, অবনতশ্রেণী, ইত্যাদি বাবতে । ইঙ্গার ব্যয়ের পরিমাণ দুষ্ট লক্ষ সতের হাজার তিনশত উনপঞ্চাশ টাকা চারি আনা । ( ঐ বৎসর দুর্ভিক্ষের জন্য ব্যয় হয় কেবলমাত্র ৩৮৮১lyন। ) । দ্বিতীয় দফার নাম— মত-প্রচার প্রভৃতির জন্য জেলাসমূহকে প্রদত্ত টাকা । উস্কার পরিমাণ ৩,০৯,৯৮৫॥৩/১১ । মত-প্রচারের খরচ ১৯২২এ ৪৩,৭৪১ দেখানে হুইয়াছে । ১৯২৩এ মত-প্রচারের জন্য ঠিক পরচ কত, তাহা বুঝা যায় না ; কারণ ঐ সালের হিসাবে মত প্রচার দু’টা দফার সঙ্গে মিলাইয়া দেপানে হইয়াছে, এবং ঐ দুই দফাতে খরচ ২৩৩৯৯io/৩ এবং ১ - ০ টাকা । প্রত্যেক বৎসরের হিসাবের দফ বা হেডিংগুলি যদি একই-রকম রাখা হষ্টত, তাছা হইলে তুলনার সুবিধ হইত। তাই করা হয় নাই । ষ্টিসাব যে সুরক্ষিত ও মুশৃঙ্খল নহে, ইঙ্গ তাহার অন্যতম প্রমাণ । কংগ্রেসের প্রধান কাজ পদরে, অস্পৃশ্যতা দূরীকরণে, সালিসীতে কিছু ব্যয় করা হয় নাই, তাই বলিয়াছি। জাতীয় শিক্ষার জন্য ব্যয় “বিবিধ” এবং “মত-প্রচার ইত্যাদি’র তুলনায় কিরূপ কম, এবং তাহা কেমন কমিয়া আসিয়াছে দেখুন --১৯১১ সালে উহা ছিল ৬৯৯৯৬ । তাহার পর ১৯২২ সালে হয় ২৭১৫, এবং ১৯২৩ সালে ১৯০৬ । অন্তান্য প্রদেশের সঙ্গিত নানা-রকমের ব্যয়ের তুলনা করিলে তাহা হইতে অনেক উপদেশ লাভ করা যাক্টত । কিন্তু এখন তাঙ্কণ করিতে পারিলাম না । বঙ্গের টিলক স্বরাজ্য ফণ্ডের ব্যয়ের যে-সব দুষ্টাস্ত দিলাম, তাহা হইতে আশা করি ইঙ্গ বুঝা যাইবে, যে, আগে হইতে কাজের গুরুত্ব-অহসারে সংগৃহীত টাকা ভাগ