পাতা:প্রবাসী (চতুর্বিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৪৪২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৩য় সংখ্যা । বিবিধ প্রসঙ্গ—শ্ৰীযুক্ত চিত্তরঞ্জন দাশের দান 8২৫ কলিকাতা মিউনিসিপ্যাল সভায় আলোচনা হইয়া অধিকাংশের মতে স্থির হয়, যে, মেয়র উপস্থিত থাকিবেন না। এই সিদ্ধান্ত ঠিকৃ হইয়াছে, এবং ইহার দ্বারা কলিকাতার ও বাংলাদেশের সম্মান রক্ষিত হইয়াছে । যিনি কলিকাতা মিউনিসিপ্যালিটীর প্রধান কাৰ্য্যনিৰ্ব্বাহককে এবং আরও অনেককে বিনা বিচারে বন্দী করিবার মূলে, তাহাকে হাসিমুখে, “আমুন মহাশয়, আপনার আগমনে রুতার্থ হইলাম,’বলাটা হেয় কপটতা হইত। এই বিষয়ের আলোচনা উপলক্ষে এই একটা যুক্তির অবতারণ করা হয়, যে, বড়লাট সম্রাটের প্রতিনিধি, তাহার সম্বৰ্দ্ধনা না করিলে সম্রাটের অপমান করা হয় । ইহার উত্তরে যাহ-যাহা বলা যায়, তাহার দু-একটা কথা বলিতেছি । বিলাতে রাজার কোন বিশেষ রাজনৈতিক মত নাই, ভাল-মন্দের জন্য মন্ত্রীরা দায়ী। স্বতরাং বৰ্ত্তমানকালে কোন অবস্থাতেই বিলাতে ইংরেজদের রাজাকে আদর-অভ্যর্থনা করিতে বাধে না, যদি ৪ অতীতকালে যখন রাজারা ক্ষমত পরিচালন করিতেন তখন ইংরেজর সকল সময়ে একান্ত রাজ ভক্তিমান থাকিতে সমর্থ হয় “মাষ্ট। ভারতের বড়লাট যদি বাস্তবিক রাজনীতিক্ষেত্রে নিরপেক্ষ থাকিতেন, তাহু! হইলে ভারতীয়দেরও তাছাকে সৌজন্য দেখাইতে কোন সময়েই বাধিত না । কিন্তু তিনি যখন দলননীতির প্ৰবৰ্ত্তন ও সমর্থনও করেন, তখন ভারতীয়েরা সকল অবস্থায় তাহার আদর-অভ্যর্থনা করিতে পারে না । তা ছাড়া, তাহার সম্বৰ্দ্ধন না করিলেই ধে তাঙ্গার বা রাজার অপমান করা হয়, এরূপ মনে করা ভূল । আর-একটা কথা এষ্ট, যে, রাজার যাহা প্রাপা, রাজপ্রতিনিধির ৪ তাহাই প্রাপ্য ইহা স্বীকার করিয়া লইলেও, সকল অবস্থাতেই রাজার ও তাঙ্কার প্রতিনিধির প্রাপ্য একই থাকে, ইহ স্বীকার করা যায় না । সাধারণ অবস্থায়, রাজশক্তির ক্ল ত আইন মানিতে ও ট্যাক্স দিতে জনসাধারণ বাধ্য, অপর কোন বাধ্যভ নাই । অসাধারণ অবস্থায় প্রজাদের আইন অমান্য করিবার ও. ট্যাক্স না দিবার অধিকার পর্যাস্ত রাষ্ট্রনীতি-বিজ্ঞামে ও ইতিহাসে স্বীকৃত হুইয়াছে । সুতরাং যথেষ্ট কারণবশতঃ রাজপ্রতিনিধির স্বাগমন-উপলক্ষে হাজরী না দেওয়াটায় কোন দোষ নাই । বস্থ-বিজ্ঞানমন্দিরে দান আমরা খবরের কাগজে পড়িয়া স্বর্থী হইলাম, যে, ঐযুক্ত যুগলকিশোর বিল। মহাশয় বস্থ বিজ্ঞানমন্দিরে অনেক টাকা দান করিয়াছেন । বস্ব-বিজ্ঞানমন্দিরে দানের পরিমাণটা জানিতে কৌতুহল সকলেরই হইবার কথা । লর্ড লিটনের টোপ, নুতন ও পুরাতন বে-আইনী আইন-অনুসারে ধূত ব্যক্তিদিগকে কিরূপ অবস্থায় ও সৰ্ত্তে ছাড়িয় দেওয়৷ যাইতে পারে, লর্ড লিটন একটি বক্তৃতায় তাহা বলিয়াছেন । তাহার মধ্যে একটি এই, যে, ছয়মাস-স্থায়ী নুতন অডিন্যান্সটির অনুরূপ একটি স্থায়ী আইন প্রণয়নে বঙ্গীয় ব্যবস্থাপক সভাকে রাজী হুইজে হইবে ! বুদ্ধিমনি ও দেশহিতৈষী কোন ব্যবস্থাপক নিশ্চয়ই এই টোপ গিলিবেন না । ধুত ব্যক্তিরা ত পালাস পাইবেই না, অডিন্যান্সও লুপ্ত হুইবে না । # কোন ব্যক্তিকে ফার্সী কাঠে চড়াইয়া যদি বলা হয়, “তোমাকে ঐ উচ্চস্থান হইতে এই সন্তে নামাইয়। লক্টতে রাজী আছি যে, তোমার গলায় দড়িটার শিস লাগানে থাকিবে, এবং দড়িট। আমি ধরিয়া থাকিব,” তাই। হইলে ঐ ভাগ্যবান ব্যক্তি বলিতে পারে “কৰ্ত্তার কি দয়৷ ” শ্ৰীযুক্ত চিত্তরঞ্জন দাশের দান দান ক্ষুদ্র হউক, বা বৃহৎ হউক, দাতা তাহার জন্য প্রশংসাই । খ্ৰীযুক্ত চিন্তরঞ্জন দাশ মহাশয় ঋণশোপ এবং পারিবারিক ক্ষুদ্র বাসস্থান নিৰ্ম্মাণ ও সাংসারিক ব্যয়নিৰ্ব্বাহের জন্য আবশ্যক অর্থ বাদে নিজের সমুদয় সম্পত্তি লোকহি ভার্থ দান করিয়াছেন, এই স্বসংবাদে সুখী হইলাম । কোন-কোন কাগজে দেখিলাম, ভাঙ্গর সম্পত্তির মোট মূল্য আকুমানিক আট লক্ষ টাকা। ঋণ কত, তাহা প্রকাশিত হয় নাই। সম্পত্ত্বির মূল্য হইতে তাহা শোধ যাইবে । ভিনি টালীগঞ্জে অল্প জমি কিনিয়া তাহাতে একটি বাসগৃহ নিৰ্ম্মাণ করিবেন, এবং সাংসারিক ব্যয়-নির্বাহীর্থ মাসিক দুই হইতে তিন শত টাকা আয়ের সম্পত্তি রাখিবেন । বাকী সব টাকা লোক-হিতার্থ ব্যয়িত হইবে । তাহার মধ্যে, তাহার বর্তমান গৃহ ১৪৮ রসারোড, সাউথে বিগ্রহ প্রতিষ্ঠা ও ঠাকুর সেবার বন্দোবস্ত, হিন্দু বালকদের ধৰ্ম্মশিক্ষার ব্যবস্থা, এবং নারীদের জন্য একটি কলেজ প্রতিষ্ঠা, প্রধান । কলিকাতায় কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অঙ্গীভূত নারীদের কলেজ দু’টিতে যত ছাত্রী হয়, তাহীদের বেতনে কলেজ দু’টির ব্যয়ের সামান্ত অংশই নির্বাহিত হয়। দাশমহাশয়ের ইচ্ছাকুরূপ কলেজ সম্ভবতঃ বিশ্ববিদ্যালয়ের অঙ্গীভূত হইবে না । তাহ হইলে তাহাতেও ছাত্রী খুব বেশী হইবে মনে হয় না। স্বতরাং প্রায় সমস্ত ব্যয় দানের আয় হইতেই নিৰ্ব্বাহ করিতে হইবে । আমরা একটা আনুমানিক হিসাব করিয়া দেখিলাম, একটি নারী কলেজের মাসিক ব্যয় দুই হাজার টাকার কম হইবে না । চারি লক্ষ টাকা ব্যাঙ্কে গচ্ছিত রাখিলে এইরূপ আয়