পাতা:প্রবাসী (চতুর্বিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৪৪৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

8ミや一 হইতে পারে। যদি কলেজের জন্য এবং ছাত্রীনিবাসের জন্য জমি কিনিয়া গৃহ নিৰ্ম্মাণ করিতে হয়, তাহাতে এবং লাইব্রেরী ও ল্যাবরেটারীতে আন্দাজ দুই লক্ষ টাকার কম ব্যয় হইবে না। ঋণ-শোধাদি বাদে যদি এইরূপ টাকা উদ্ভূত্ত থাকে, তাহা হইলে নারী-কলেজ প্রতিষ্ঠা সমীচীন হইবে, এবং তাহা স্বপরিচালিত হইলে দেশের কল্যাণ হইবে। যদি যথেষ্ট টাকা উদ্ধৃত না থাকে, তাহ হইলে অপেক্ষাকৃত অল্পব্যয়সাধ্য একটি উৎকৃষ্ট বালিকা বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত ও পরিচালিত হইলেণ্ড দেশের কম হিত হইবে না । তেল্যে মাথায় তেল ভারতে ইংরেজ সিবিলিয়ান প্রভৃতির বেতন ও অন্যান্য পাওনা বাড়াইবার জন্য যে কমিশন বসিয়াছিল, তাহা রিপোর্ট অঙ্গুয়ায়ী বেতন ও অন্যান্য পাওনা বিলাতের কৰ্ত্তারা গত এপ্রিল মাস হইতে মঞ্জুর করিয়াছেন । ভারতীয় ব্যবস্থাপক সভা এই রিপোর্টের অনুরোধগুলির বিরুদ্ধে মত প্রকাশ করিয়াছিলেন । কিন্তু তাহাতে কৰ্ত্তারা কর্ণপাত করেন নাই । ইহাতে ভারতবর্ষের এককোটি বাৎসরিক খরচ বাড়িল । ইহার পর সৈনিক বিভাগের বেতনাদি বাড়াইবার পালা । সিবিলিয়ানদের যাহা বাড়িয়াছে, তাহাতেও বিলাতের কোন কোন কাগজওয়াল সন্তুষ্ট হন নাই । সন্তুষ্ট কেনই বা হইবেন ? “প্রশ্রয়ের দ্বারা আশাকে বাড়াইয়া তুলিলে তাহাকে পূরণ করা কঠিন হয় । যে ক্ষুধা স্বাভাবিক তাহাকে একদিন মেটানো যায়, যোগ্যতার স্বাভাবিক দাবিরও সীমা আছে, কিন্তু প্রশ্রয়ের দাবির ত অস্তু নাই । তাঁহ৷ ফুট কলসীতে জল ভরিবার মত।---অসন্তোষকে চিরকুভূক্ষু করিয়া রাখিবার উপায় প্রশ্রয়।”—“সমূহ", পৃঃ ৭৮ - ১৩১৪ সাল। অনেক আগেও সিবিলিয়ানদের যে-বেতন নিদিষ্ট ছিল, তাঙ্গও অধিকাংশ সভ্যদেশের ঐ-শ্রেণীর চাকরীর বেতন অপেক্ষ। ঢের বেশী, এবং সেইসব দেশ আমাদের চেয়ে ধনী । তথাপি বারবার উহাদের বেতনাদি বাড়িয়া চলিতেছে । দেওয়া না-দেওয়ার মালিক আমরা নই। জোর যার মুলুক তার—নীতি এখনও এদেশে অকুস্থত হইতেছে । তথাপি বলি, যে সব ইংরেজ এদেশে এখন " চাকরী করিতেছেন, র্তাহাদের বর্তমান দাবিতে আমরা আপত্তি করিতাম না, যদি ভারতের পক্ষে এই ক্রমবৰ্দ্ধনশীল বোঝ। তাহাদের চাকরী-কালের সহিতই আমাদের কাধ হইতে নামিত। অর্থাৎ তাহাদের উচ্চতর বেতনাদি প্রাপ্তিতে আমরা সম্মতি দিতাম, এই সৰ্ত্তে, বে, আর নূতন করিয়া ইংরেজ চাকুর্যে আমদানি করা হইবে না ; তাহা হইলে আমরা ক্ৰমে-ক্রমে যোগ্য দেশী লোকের দ্বারা আমাদের সাধ্যমত ব্যয়ে সব কাজ চালাইতে পারিতাম। তাহা হইবে না। ইংরেজ-আমদানি চলিতে থাকিবে। কালক্রমে শতকরা পঞ্চাশজন দেশী লোক ঐসব চাকুরী প্রবাসী—পৌষ, ১৩৩১ [ ২৪শ ভাগ, ২য় খণ্ড পাইবে তার বেশী নহে। যদি গবন্মেন্টেরই কথামত • যোগ্য শতকরা ৫০ জন দেশী লোক পাওয়া যায়, তবে শতকরা একশত জনই বা কেন পাওয়া যাইবে না ? ইস্পাতরূপী ইংরেজ যদি কোহাটে থাকেন, তাহা হইলে দস্তারূপী ভারতীয় এলাহাবাদে থাকিয়া শাস্তি ও শৃঙ্খলা রক্ষায় কোহাটের মত কৃতিত্ব (!) কি-প্রকারে দেখাইতে সমর্থ হইবেন, বুঝি না । দেশের অৰ্দ্ধেকগুলা জেলা যদি দেশী লোকে সায়েস্তা রাখিতে পারে, বাকী অৰ্দ্ধেকটাই বা কেন না পারিবে ? সাদা চাকৃর্যেদের যে মাইনা বাড়িল, কালা ব্যবস্থাপক সভার সভ্যেরা তাহার সম্বন্ধে কোন মত প্রকাশ যাহাতে করিতে না পারে, তাহা কমাইতে না পারে, তাহার জন্ত পালেমেণ্টে ভারতশাসন আইন সংশোধিত হইবে। দেশের লোকের মঙ্গলের জন্য যথেষ্ট টাকা কখনও সরকারের সিন্ধুকে থাকে না, কিন্তু স্বজাতির পকেটে টাকা ঢালিতে সৰ্ব্বদাই টাকা পাওয়া যায় । সমবায় দ্বারা গ্রামসমূহের উন্নতি “স্বরাজ্য সপ্তাহ’ ফণ্ডের দ্বারা সমবায় বা কোঅপারেটিভ প্রণালী-অনুসারে গ্রাম-পুনর্গঠন আদি কাজ করা হইবে, ইংরেজী বক্তৃতায় দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন ইহা বলিয়াছেন । কিন্তু সমবায় দ্বারা এই কাজ করিতে হইলেও তিনলক্ষ টাক যথেষ্ট নহে । “স্বরাজ্য সপ্তাহ* ফণ্ডে কেন টাকা দিতে হইবে গ্রামসকলের উন্নতি করিয়া সমগ্রজাতিকে সংঘবদ্ধ করিয়া ধ্বংস হইতে রক্ষা করা “স্বরাজ্য সপ্তাহ” ফণ্ডের উদ্দেশু বলিয়। “দেশের ডাক” প্রবন্ধে বর্ণিত হইয়াছে । সেরূপ শ্ৰীবুদ্ধিসম্পন্ন শক্তিশালী সংঘবদ্ধ জাতির নিগ্ৰহ বা দলন অসাধ্য বা দুঃসাধ্য, ইহা অবশ্য স্বীকার্য্য । কিন্তু গ্রামসকলের ও বাঙালী জাতির সে-অবস্থা দুএকদিনে দুএকমাসে দুএকবৎসরে হইবে না। অথচ, ফরওয়ার্ড কাগজে বড় বড় অক্ষরে এই মৰ্ম্মের কথা ছাপা হইতেছে, যেন “স্বরাজ্য সপাহ” ফণ্ডে টাকাটি দিবা মাত্রই হাতে হাতে ফল পাওয়া যাইবে—একেবারে নগদ বিদায়, ডান হাত বঁ হাত ! নমুনা দেখুন— “You may be the next victim of the Ordinance. Pay to Kill it.” “এর পরই তুমি অর্ডিন্যান্স-রাক্ষসটার কবলে পড়িতে পার। তাহাকে বধ করিবার জন্য টাকা দাও।” “Are you for repression ? Pay to destroy it.” “তুমি কি দলনের পক্ষপাতী ? [ নিশ্চয়ই নও। ] উহার বিনাশের জন্য টাকা দাও।”