পাতা:প্রবাসী (চতুর্বিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৪৭৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

8W:e প্রবাসী--মাঘ, ১৩৩১ • [ ২৪শ ভাগ, ২য় খণ্ড ( & ) পূর্ণ একবৎসর গত হইয়া গিয়াছে। মাঘ মাস প্রায় শেষ হইয়া আসিয়াছে। বৃক্ষের হরিৎ-শোভায়, কোকিলের কুন্থতানে তখন বসন্তের আগমন সূচিত হইতেছিল। নিৰ্ম্মল কয়েকদিনের জন্য বাড়ী আসিয়াছিল, কিন্তু - বাড়ী আসিয়াও তাহার অবসর নাই—সামনেই তাহার ডাক্তারির শেষ পরীক্ষা। সকালে দোতালার খোলা বারাওায় বসিয়া নিৰ্ম্মল পড়িতেছিল। তখনও পাখীর প্রভাতী কুজন আসে নাই। সম্মুখের স্থির নদীজল তখন নবারুণের রক্তরাগে রঞ্জিত হইয়া উঠিতেছিল। পুষ্প-সৌরভমাখা শীতল সমীরণস্পর্শে মন এক আবেশে বিভোর হইতেছিল। প্রভাতী মধুরিমার এই মিলিত স্বর তার প্রাণে এক হারানো ব্যথা জাগাইয়া তুলিতেছিল। পড়াশুনায় তাহার মন মোটেই বসিতেছিল না—ঘণ্টার পর ঘণ্টা সে পুস্তকে মনঃসংযোগ করিবার জন্য বৃথা চেষ্টা করিতেছিল। একখানি স্বন্দর মুখ তাহার শূন্ত-দৃষ্টিবদ্ধ .নীরস সার্জারির পৃষ্ঠায় ভাসিয়া উঠিতেছিল। অস্তরে তাহার যে বিপ্লব ঘটিয়া গিয়াছে, তাহার কয়েকটা করুণ স্থতিরেখা তাহার দীপ্ত মুখখানিকে বিষণ্ণ করিয়া তুলিয়াছিল। জীবন পণ করিয়া সে যাহাকে মরণের হাত হইতে ফিরাইয়া অনিয়াছিল, সে একদিন প্রিয়ের কাছে আপনাকে বিলাইয়া দিল। কিন্তু মামুষের স্বস্ট ধৰ্ম্মসমাজ যেদিন নিৰ্ম্মম-করে তাহাদের মিলনের মাঝে সংকীর্ণতার .প্রাচীর তুলিয়া দিয়াছিল, সেদিন প্রিয়ার সেই বিষাদমলিন নীরব দৃষ্টির মান মাধুৰ্য্যটুকু আজ তাহার প্রাণে -বিসর্জনের করুণ রাগিণীর মতন বাজিতেছিল। শুভ্ৰপাল উড়াইয়া একখানি পণ্যতরী ধারমন্থর গতিতে চলিয়া গেল। মাঝি গাহিতেছিল,—“ও ললিতে এমন বাশী বাজায় কে ?—” বই বন্ধ করিয়া সাজসজ্জা করিয়া নিৰ্মল বেড়াইতে -दश्ब्रि इहेल । পথে নামিতেই নিধিরাম প্রণাম করিয়া কহিল,— “খোকাবাবু দয়া করে যদি আমাদের ওদিকে যেতেন একটাবার ?” “কেন ? কি হয়েছে রে ?” “আজে আমার বাড়ীতে কুসমীর অস্থখ, একটু দেখে’ যদি ওষুধ-পত্তরের ব্যবস্থা করে দেন—” নিৰ্ম্মল জিজ্ঞাসা করিল, যে কি অস্থখ তাহার। নিধিরাম কাতরস্বরে কহিল, “অন্থখ সেরকম কিছু ঠিক পাওয়া যায় না, তবে অনেক দিন থেকে ভুগছে। মাস কয়েক থেকে মোটেই খেতে পারে না, রোজ অস্থখঅস্কখ বোধ হয়—গা ম্যাজ-ম্যাজ করে, তার পরে বড় কাহিল হ’য়ে গেছে । রামচরণ সাহার দোকান থেকে এক বোতল সেই ম্যালোয়ারি না কি বলে এনে খাওলাম ত৷ কিছুই হ’ল না। দু-তিন বেলা রোধে আর পারিনে থোকাবাবু।” নিৰ্ম্মল নীরবে চলিতে লাগিল। 穆 事 尋 কয়েক মিনিট রোগীর দিকে স্থির-দৃষ্টিতে চাহিয়া থাকিয় নিন্মলের মুখ অস্বাভাবিক গভীর হইয়া উঠিল। কাজের অছিলায় নিধিরামকে একপাশে সরাইয়া দিয়া সে মেয়েটির কাছে কয়েকটি কথা জিজ্ঞাসা করিয়া উঠিয়া আসিল । নিধিরাম বলিল, “হাত দেখেছেন বাৰু?” গম্ভীরভাবে নিৰ্ম্মল মাথা নাড়িল । - নিৰ্ম্মলের এই ভাবাস্তর দেখিয়া নিধিরাম ভয় পাইয়া গেল। শঙ্কাজড়িত-কণ্ঠে কহিল, “কি-রকম দেখলেন খোকাবাবু?—আমার কাছে কিছু গোপন করবেন না ?” শাস্ত অথচ দৃঢ়কণ্ঠে নিৰ্ম্মল বলিল, “গোপন করবার কিছুই নেই, অস্বর্থ-বিস্কখ ওর কিছুই না। তবে এখন থেকে ওকে একটু যত্ন করিস,কোনো শক্ত কাজ-কৰ্ম্ম করতে দিসনে—দুই-তিন মাসের মধ্যেই ওর ছেলেগুলে হবে— ।” নিধিরাম প্রথমে ভাবিল খোকাবাৰু তাহার সহিত তামাসা করিতেছেন, কিন্তু তাহার মুখে বা কথায় তামাসার রেশও খুজিয়া না পাইয়া নিধিরাম মাথায় হাত দিয়া বসিয়া পড়িল । to 事