পাতা:প্রবাসী (চতুর্বিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৪৮২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৪র্থ সংখ্যা ] - নেপালরাজের ইন্দ্রযাত্রা .8\Hම් না করিয়া কিভাৱে ইহার সদ্ব্যবহার করিতেছে আমরা সে-সম্বন্ধে দুই-চারিটি কথা বলিব । ইন্দ্রযাত্রা নেপালের হয়ত ভারতবর্ষের একটি পুরাতন পৰ্ব্ব । পুরাতন ভারতে ভগবানের নিয়েই রাজার স্থান ছিল। রাজাকে সাধারণ লোক সাক্ষাৎ নারায়ণ মনে করিত। সুতরাং প্রত্যেক রাজারই যে একটি বাৎসরিক আত্মসম্বৰ্দ্ধনার আকাঙ্ক্ষা ছিল এবং সাধারণ লোক যে রাজাকে বৎসরে অন্ততঃ একটিবার দেখিবার বাসনা করিত একথা নিঃসন্দেহে সত্য বলিয়া ধরিয়া লণ্ডয়া যাইতে পারে। ইন্দ্রযাত্রা এই শ্রেণীর আকাঙ্ক্ষার একটি পরিণতি বলিয়া মনে হয়। ফলত মিছিল হইলেও উহাকে ঠিক মিছিল বলা চলে না। বরং উহাকে বাৎসরিক অভিষেক বলিলে অধিকতর সত্য বলা হয়। কিন্তু পুরাতন ইন্দ্রযাত্রায় বিশেষ প্রয়োজনীয় এবং লোকহিতকর কোন বিষয় অন্তনিবিষ্ট ছিল না বলিয়া উহা ক্রমশঃই প্রাণশূন্ত দূত মাত্র হইয় পড়ে। বৰ্ত্তমান নেপাল ইন্দ্রযাত্রার কয়েকটি চমৎকার সদ্ব্যবহার করিতেছে। ইন্দ্রযাত্রা হইতে চটকের ভাবটি—শুধু নয়নরঞ্জন দৃপ্ত দেখিবার ভাবটি নেপাল ক্রমশঃ উঠাইয়া দিয়াছে। গুর্থ-বিজয়ের পূৰ্ব্বে এদেশে অৰ্দ্ধহিন্দু এবং অৰ্দ্ধবৌদ্ধ নেওয়ার নামক এক-জাতীয় রাজা রাজত্ব করিত। এথনো নেপাল সহরের অধিকাংশ অধিবাসী নেওয়ার। উহার হিন্দু রাজার অধীনে আছে বলিয়া আপনাদিগকে নিতান্ত পরাধীন মনে করে না। নেওয়ার রাজাদের শেষ অবস্থায় ইন্দ্রযাত্রা শুধু একটি বাৎসরিক মিছিলের মতন হইয়াছিল। শুধু সেদিন রাজা সপারিষদ নূতন করিয়া সিংহাসনে বসিতেন এটুকু বিশেষত্ব মাত্র শেষ পৰ্য্যস্ত উহার মধ্যে নিহিত ছিল। সেদিন নেওয়ার রাজার সৈনিক বা সেনানায়কগণ মিছিলে দল বাধিয়া রাজার পশ্চাদহসরণ করিত, এমন কোনো প্রমাণও

  • ाeब्रां शांध्र न! ।

কিন্তু বর্তমান নেপালের ইন্দ্রযাত্রা ভাজমাসের পূর্ণিমা তিথির একটি মিছিল মাত্র নহে। উহার মধ্যে রাজপুত রাজার - নিজেদের রাজনৈতিক বুদ্ধিতে জনসাধারণের এবং রাজ্যের মঙ্গল কামনায় করিয়া তাহারা উহাকে আপনার করিয়া লয়। নানারকম অভিনব বিষয় সন্নিবেশিত করিয়াছে। বলা বাহুল্য বর্তমান গুর্থ রাজার রাজপুত। মুসলমান রাজত্বের সময়ে স্বধৰ্ম্ম রক্ষা করিবার জন্ত কয়েকটি প্রসিদ্ধ রাজপুতপরিবার হিমালয়-মধ্যস্থ গোরোখা নামক উপত্যকায় আশ্রয় গ্রহণ করে। উহারা সেখানে নিজ শক্তিবলে ক্রমশঃ রাজা হয় এবং পাৰ্ব্বত্য জাতিদের লইয়া একদল সৈন্ত সংগ্রহ করে। পরে অষ্টাদশ শতাব্দীর মধ্যভাগে নেওয়ার রাজাকে পরাজিত করিয়া গোরোখীদের রাজপুত রাজা নেপাল দখল করে। বর্তমানে এই গোরোখা বা গুখী রাজ্যে রাজপুতের শৌৰ্য্য এবং রাজপুর্তের রাজনৈতিক বুদ্ধি ষোল আনা পরিস্ফুটভাবে দেখা যায়। এই শৌর্ধ্য এবং রাজনৈতিক বুদ্ধি অক্ষুন্ন রাখিবার জন্য রাজপুত রাজারা ইন্দ্রযাত্রা মিছিলের মধ্যে নানারকম অভিনব বিষয় সংযোগ করিয়াছে। নেওয়ার রাজাদের প্রাণহীন একটি মিছিলের মধ্যে তখাকথিত গুখ1 অথবা রাজপুত রাজার নিজ বুদ্ধিতে কিভাবে নানারকম নূতনত্বের সংযোগ করিয়া উহাকে একটি অতীব প্রয়োজনীয় বিষয় করিয়া তুলিয়াছে সে-বিষয়ের কিছু আলোচনা করিব। প্রথমতঃ রাজপুত রাজার নেপাল জয় করিয়া সাধারণ অশিক্ষিত অধিবাসীদের চোখে ধূলা দেওয়ার জন্ত ঠিক নেওয়ার রাজাদেরই মতন করিয়া প্রতিবৎসর মিছিলটি বাহির করিতে থাকে। এত পুরাতন একটি মিছিলকে হঠাৎ উঠাইয়া দিয়া নিজেদের আত্মশ্লাঘা প্রকাশ না এই কয়টি রাজপুত পরিবারের পরকে আপন করিবার অদ্ভুত শক্তি ছিল। ওখার দেশে আসিয়া, গুখাদিগকে আপন করিয়া লইবার জন্য নিজেদের গুখ1 বলিতে এবং গুখরি সেকেলে খুকুরীকে নিজেদের নিশান-চিহ্ন করিয়া রাখিতে তাহার একটুকুও সঙ্কোচ বোধ করে নাই। এখন রাজা হইয়াও তাহারা আপনাদিগকে গুখ1 বলিতে সঙ্কোচ মনে করে না। বস্তুতঃ এখানে প্রধান মন্ত্রী মহারাজা চন্দ্রশমশের হইতে আরম্ভ করিয়া সকলের শিরস্ত্রাণেই এই পাৰ্ব্বত্য গুখজিাতির খুক্রী অঙ্কিত বা খোদিত । সুতরাং উহারা যে নেওয়ারদের রাজার