পাতা:প্রবাসী (চতুর্বিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৪৯২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৪র্থ সংখ্যা] e পিতরের ছোট-বড় যত কৰ্ম্মচারী রাজধানীতে ছিল, প্রথমতঃ তাদের দাড়ি কামিয়ে দিতে তিনি মনস্থ করলেন। অত লোকের দাড়ি কামানো ব্যাপারটি তখন বড় সোজ৷ ছিল না । নাপিত পাবেন কোথায় ? ভয়ে নাপিতের সব গা-ঢাকা দিয়েছিল। কাজে-কাজেই ইংলণ্ড থেকে বহু নাপিত তাকে আমদানি করতে হয়েছিল। জারের (Czar) হুঁফুমে একদিন এই ইংরেজ নাপিতের দল রাজপ্রাসাদের প্রশস্ত অঙ্গনে রুশ-কর্মচারীদের অনভ্যস্ত মুখের উপর ক্রমাগত ক্ষুর চালাতে স্বরু করলে। এই দৃশ্য দেখবার জন্য চারিদিক লোকে লোকারণ্য হ’য়ে গেল । খোদ জার পিতর বেত হাতে করে’ সাম্নে দাড়িয়ে থাকৃলেন । তার পেছনে কালাস্তক যমের মতন খোল তলোয়ার হাতে করে দাড়িয়ে থাকৃল দুর্ধর্ষ ষ্ট্রেলটুলি ( strolsi ) সৈন্ত। কেউ টু শব্দটাও করতে পালে না। কামানো শেষ হ’লে নতুন সভ্য চেহারা নিয়ে বিষন্ন মুখে যে-যার বাড়ীতে চলে গেল। তার পরে আসল নাগরিকদের পালা। তাদেরও অনেকেই দাড়ি কামাতে বাধ্য হ’ল, অনেকে আবার বিদেশে পালিয়ে দাড়ি বজায় রাখল। প্রত্যেককে দাড়ি কামাতে হুকুম দিয়ে রাজ্যময় ঘোষণাপত্র জারি করা হ’ল । মস্কোর রাজপথে দাড়িওয়ালাদের চলা ফেরাও বন্ধ হয়ে গেল। হঠাৎ পথে পুলিশের সামনে পড়লে তাদের আর দুর্দশার সীমা থাকৃত না । নানা রকমে তাদের . লাঞ্ছিত করে’ দাড়িগুলো টেনে ছিড়ে”দিয়ে অবশেষে বেত মাৰ্বতে মারতে সহর থেকে বের করে দেওয়া হ’ত । শেষ কাণ্ডে বসল দাড়ির উপর ট্যাক্স। যে দাড়ি রাখত তাকে মাসিক দুটাক করে’ ত ট্যাক্স দিতে হ’তই, উপরন্তু সরকারী মার-ধরও যথেষ্ট হজম করতে হ’ত। দাড়ি রেখে যারা গোপনে-গোপনে থাকত তাদেরও হ’ল বিষম বিপদ। গুপ্ত পুলিশ খোজ করে’, বের করে’, ট্যাক্স আদায় করে নিতে লাগল। পিতরের হাত থেকে যখন কিছুতেই নিষ্কৃতি পাওয়া গেল না, রুশেরা তখন অগত্যা দাড়ি রাখা একেবারেই ছেড়ে দিলে । ছয়মাসের মধ্যে রুশিয়া থেকে দাড়ি রাখা প্রথাটা সম্পূর্ণ-ভাবে উঠে গেল। রুশিয়ায় স্কুল-কলেজ একরকম ছিল না বললেই চলে। রুশ-ইতিহাস । ৪৭৩ ছটো-একটা বা ছিল তাতেও বেশী ছাত্ৰ হ’ত না । দেশের লোকে লেখাপড়া শেখার প্রয়োজনীয়তা আদৌ অস্থভব করত না। শুধু নিজের নাম লিখতে পারে এমন লোকও তখনকার দিনে রুশিয়ায় হাজার-করা ছএকজন মিলত কি না সন্দেহ। এই দেশব্যাপী নিরক্ষরতার প্রতিবিধান করা হ’ল পিতরের দ্বিতীয় কাজ । দেশের মধ্যে শত-শত यदैवङनिक छूल डिनि महेबांद्र भूरण' मिट्जन । किरू শুধু স্থল হ’লেই ত আর চলে না—স্থলে পড়ার লোকও দরকার। সেই পড়ার লোক কোনো স্থলেই জুটুল ৱা।" শিক্ষার অভাবই কেউ বুঝত না, তা আর পড়বে কি? অনেক স্কুলই খালি পড়ে থাকৃল। প্রজার তাদের ছেলেদের স্কুলে পাঠাচ্ছে না দেখে পিতত্ত্ব একেবারে হাড়ে চটে গেলেন। তৎক্ষণাৎ দেশের উপর এই মর্শ্বে এক সরকারী ইস্তাহার জারি করে দিলেন—যে, প্রত্যেক স্কুলের তিন মাইলের মধ্যে যারা বাস করে, তারা ঘদি ইস্তাহারের মর্শ্ব অবগত হওয়া মাত্র তাদের ছেলেদের এনে স্থলে ভৰ্ত্তি করে না দেয়, তবে প্রত্যেককে শুধু এই অপরাধের জন্য প্রকাশু রাস্তায় গাছে লটুকে' ফাসি দেওয়া হবে। অদ্ভুত ঘোষণা-পত্র । বিংশ শতাব্দীর এই বলশেভিক যুগে আমরা নিরাপদে ঘরে শুয়ে হয়ত এর তীব্র সমালোচনা করতে পারি–ব্যক্তিগত স্বাধীনতা প্রভৃতি লম্বী-লম্বা কথার অবতারণা করে পিতরকে একটা জাস্ত জানোয়ারও সাব্যস্ত কবার চেষ্টা করতে পারি, কিন্তু সে-যুগে নির্ভীক মৃত্যুভয়-বিরহিত বেপরোয় রুশজাতি এই ঘোষণা-পত্র পড়ে একেবারে স্তম্ভিত হ’য়ে গিয়েছিল। পিতরকে যারা চিনত তারা আর কালবিলম্ব না করে নিজেদের ছেলে এনে স্কুলে ভক্তি করে দিয়ে গেল। দেখা যাকৃ কি হয় ভেবে যারা তখনও গোস্তাকি করে চুপ করে রইল, নিৰ্দ্ধারিত সমর অতীত হওয়ার সঙ্গে-সঙ্গেই তাদের ফালি হ’তে আরম্ভ হ’ল। প্রত্যহু ৩•॥৪০ জন লোক ফাসিকাঠে ঝুলতে লাগল। ৮১• দিন এইরকম বীভৎস ব্যাপারের পর স্থলে ছেলে পাঠাতে প্রজাদের আর কারো অমত থাকূল না । একবছরে রুশিয়ায় প্রাথমিক শিক্ষা চলতি হয়ে গেল। দেখতেদেখতে দেশে উচ্চ বিদ্যালয়, সাধারণ কলেজ, মেডিক্যাল