পাতা:প্রবাসী (চতুর্বিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৪৯৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৪র্থ সংখ্যা] ম, তখন একেবারে বেঁকে বসলেন। পিতৃপিতামহের . আচরিত পথই তার কাছে ভালো বলে’ মনে হ’তে লাগল। তাই আবার অত্যাচারের স্রোত র্তার রাজত্বের মধ্যে প্রবাহিত হ’তে লাগল। ফলে নিহিলিষ্টদের বোমায় এক দিন সন্ধ্যাকালে তিনি প্রাণ হারালেন । দ্বিতীয় আলেকৃজ্যাণ্ডারের ছেলে তৃতীয় আলেকৃজ্যাণ্ডার (Alexander III) এর পরে সম্রাট হ’য়েছিলেন । শাসন সম্বন্ধে তাঁর বাপের মতামতের সঙ্গে তার নিজের মতের কোনোই সহানুভূতি ছিল না। বরং অনেক সময় তিনি প্রকাশুেই বলতেন যে, এই অকৃতজ্ঞ রুশদের অযথা কতকগুলো স্ববিধে দেওয়াতে তাদের ডেপোমি বেড়ে গিয়েছে । বৈপ্লবিক গুপ্তসম্প্রদায়ের উপরেও তার খুব বেশী বিদ্বেষ ছিল। তারাই যে তার পিতৃহস্তা একথাটা মূহূর্তের জন্যও তিনি ভুলতে পারতেন না। এই সম্প্রদায়গুলির মূলোচ্ছেদ করবার উদ্যেশ্বেই তিনি গুপ্ত পুলিশের সংখ্যা অতিরিক্ত বাড়িয়ে দিয়েছিলেন। তাদের হাতে ক্ষমতাও অনেক দিয়েছিলেন। কারো সম্বন্ধে একটু সন্দেহ হ’লেই এই পুলিশ তা'কে ধরে সাইবিরিয়ায় নিৰ্ব্বাসিত কবুত, সাক্ষী-প্রমাণের বড় একটা অপেক্ষা রাখত না । সাধারণ প্রজাদের পারিবারিক স্বাধীনতাতেও তিনি হস্তক্ষেপ করেছিলেন । রুশিয়ায় বহুদেশের বহুজাতীয় লোক বাস কবৃত। তিনি তাদেরও প্রত্যেককে নিজের পরিবারের মধ্যে রুশ ভাষা ব্যবহার করতে বাধ্য করেছিলেন। আফিস-আদালতে রুশ ভাষা এবং রুশ আদব-কায়দা ছাড়া অন্য কিছুই চলত না। এর রাজত্বকালে নাম-মাত্র একটা আইন ছিল বটে, কিন্তু বিচারাদালতে তার বড় ব্যবহার , হ’ত না । সেটা কেতাবেই থাকৃত । রাজদ্রোহীদের ত বিচারই হ’ত না। ধরা পড়লেই তাদের পক্ষে ব্যবস্থা ছিল হয় গাছে লটুকানো, আর না হয়ত সাইবিরিয়ায় চিরনিৰ্ব্বাসন। এত কঠোর শাসনেও কিন্তু বৈপ্লবিকদের সংখ্যা উত্তরোত্তর বেড়েই যাচ্ছিল। জার প্রজাসাধারণের আন্তরিক ঘৃণার পাত্র হয়ে উঠেছিলেন। রুশিয়ার আবালবৃদ্ধবনিতা প্রত্যেকে তার অমঙ্গল কামনা করত। এই সময়ে মধ্য-এশিয়ায় রাজ্য বিস্তার নিয়ে ইংরেজের সঙ্গে ক্ষশিয়ার একটু গোলযোগ বেধে ಆನ್ದ? উপক্রম হয়েছিল ।

  • }–*

8ዊዓ রাজ্যের সীমা বাড়া’তে-বাড়া'তে পাছে রুশিয়া এসে ক্রমেক্রমে ভারতের দরজায় দাড়ায় এই ভয়েই বৃটিশ গভর্ণমেন্ট রুশের মধ্য-এশিয়ার রাজত্বের একটা স্থায়ী সীমা নির্ধারণের জন্ত সম্রাটুকে বারবার তাগাদা করছিলেন ; কিন্তু পাকপাকি-ভাবে সীমানা ঠিক হওয়ার আগেই তৃতীয় আলেক্‌জ্যাণ্ডারের মৃত্যু হ’ল। তার মৃত্যুর পর ১৮৯৪ খৃষ্টাব্দে সম্রাট হ’লেন তার ছেলে দ্বিতীয় নিকোলাস ( Nicholas II), রোমানফ বংশের শেষ রাজা। ইনি ছিলেন অতি জ্বলি-প্রকৃতি, লোক। প্রজাদের উপরে এর একটু আস্তরিক টানও ছিল, কিন্তু মন্ত্রীরা সব-সময়ে একে ঠিক পথে চলতে দিত না । তাদের কথা-মতন কাজ করতেন বলেই এর শাসন-প্রণালীর কোনো বাধা-ধরা নিয়ম থাকতে পাবৃত না। অনেক জায়গায়ই অনাবশুক কঠোরতা কিম্বা নিষ্ঠুরতা দেখান হ’ত, হয়ত আবার যেখানে কঠোর হওয়া দরকার—যেখানে একটু আধটু নিষ্ঠুরতা প্রকাশ করলেও তেমন বেমানান হয় না, সেখানে কিছুই করা হত না । তৃতীয় আলেকৃজ্যাওরের রাজত্বকালে নিহিলিষ্টদের সংখ্যা বৃদ্ধি হ’লেও তারা তার ভয়ে মাথা তুলতে বড় সাহসী হ’ত না । এর আমলে কিন্তু তারা একেবারে বেপরোয়া হয়ে উঠেছিল। জাপানের সঙ্গেও ঠিকৃ এই সময়ে রুশিয়ার লড়াই বাধে। এ যুদ্ধেরও কারণ হচ্ছে সাম্রাজ্যলিঙ্গা । যুদ্ধ প্রায় এক-বছর ধরে চলেছিল। শেষটায় রুশিয়া হেরে যায়। রুশিয়ার এই অসম্ভাবিত পরাজয়ে জগৎস্থদ্ধ লোক বিস্মিত না হ’য়ে থাকৃতে পারেনি। ভেতে জাপানীর হাতে সত্যিই রুশিয়ার দুর্দশার চূড়ান্ত হয়েছিল । জলেস্থলে কোথায়ও রুশেরা জাপানীদের এটে উঠতে পারেনি। জাপানীরা রুশিয়ার নৌবাহিনী সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস করেছিল—পোটু আর্থার (Port Arther), ভুাডিভষ্টক্‌ (Vladivastock ) প্রভৃতি বিখ্যাত বন্দরগুলি কেড়ে নিয়েছিল আর প্রাচ্যে সাম্রাজ্য-বিস্তারের স্কুখস্বপ্নও কিছুদিনের জন্ত একেবারে ভেঙে দিয়েছিল। জাপানের কাছে হেরে গিয়ে দেশে রুশ গভর্ণমেণ্ট প্রজাদের চোখেও অনেকখানি ছোট হ’য়ে পড়েছিলেন। যে-সব মন্ত্রীরা যুদ্ধ চালাচ্ছিল তারাও অকৃতকাৰ্য্যতার জন্য লোকের