পাতা:প্রবাসী (চতুর্বিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৪৯৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৪র্থ সংখ্যা । ' রুশ-ইতিহাস 8Գ> স্বঝেই তিনি রুশিয়ার বিরুদ্ধে জার্মানীকে সাহায্য করতে কৃতসঙ্কল্প হলেন। রুশিয়ার গুপ্তপুলিশের বিশেষ বিভাগের বড় কর্তা cuatro fotfrsifSS (General Spiridovitch ) বলেন —“১৯১৪ খ্ৰীষ্টাব্দে লেনিন বার্লিনে গিয়ে সেখানকার ফরিন ( foreign ) আফিসের সেক্রেটারীর কাছে একখানা কাগজ দাখিল করেন। এই কাগজে কি করে রুশ সৈন্যদলের মধ্যে বিক্রোহের স্বটি করতে হবে—দেশের জায়গায়-জায়গায় কি উপায়ে দাঙ্গাহাঙ্গামা বাধিয়ে তুলতে হবে এবং কি-ভাবে দেশের আভ্যন্তরীণ শান্তি বজায় রাখবার জন্যে গভর্ণমেণ্টকে সৰ্ব্বদা বিব্রত রাখতে হবে, সে-সমস্তই বেশ গুছিয়ে সরল ভাষায় লেখা ছিল। শেষে প্রার্থনা ছিল যে, জর্থান গভর্ণমেন্ট কিছু অর্থসাহায্য করলে লেনিন নিজেই এসব বিষয়ের বন্দোবস্ত করে দেবেন। সহসা রুশিয়া যাতে সৈম্ভবল নিয়ে মিত্রশক্তির সঙ্গে যোগ দিতে না পারে তার জন্যও তিনি দায়ী থাকৃবেন । প্রথমটায় লেনিনেব প্রস্তাব অগ্রাহ হয়। শেষে দুই সপ্তাহ পরে তার একজন বন্ধু ডাক্তার হেল্পহাও প্রাভাসের ( Dr. Helphand Pravas) চেষ্টায় জার্মান সম্রাটের মত বদলে’ যায়। তিনি তাড়াতাড়ি তখন লেনিনের সঙ্গে একটা চুক্তি ঠিক করে ফেলেন। তাতে স্থির হয় যে জার্মান গভর্ণমেণ্ট যেদিন প্রথম ক্লশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করবেন সেইদিনই বলশেভিকদের নেতা হিসেবে লেনিনকে কাৰ্য্যনিৰ্ব্বাহের ব্যয়-বাবদ ৭•,•••••• মাকু নগদ দেবেন। ১৯১৪ খৃষ্টাব্দে যুদ্ধ আরম্ভ হ’লেই লেনিন সুইজারল্যাণ্ডে ফিরে” গেলেন। সেখানে বসে’ রুশিয়ায় বিদ্রোহের স্বষ্টি কর, সৈন্যদলকে বিগড়ে দেওয়া, সম্রাট এবং প্রচলিত শাসন-নীতির উপরে লোকের বিদ্বেষ আরও বেশী করে’ জন্মিয়ে দেওয়া, প্রভূতি. কাজগুলি অতি প্রচ্ছন্নভাবে অথচ বিশেষ দক্ষতার সঙ্গে করতে লাগলেন। ডুমা আগে থেকেই শক্তি সঞ্চয় করেছিল। তার পরে যুদ্ধ বাধলে সৈন্য সংগ্রহ কর যুদ্ধের বন্দোবস্ত করা প্রভৃতি নিয়ে যখন ভারি বিশৃঙ্খল হতে লাগল তখন দ্বিতীয় নিকোলাস ডুমার হাতেই সমস্ত ছেড়ে দিয়ে নিজে রাজ্য ত্যাগ করলেন। মিত্রশক্তির পরামর্শে কেরেনস্কি (General Alexander Kerensky ) &ïqfq& &q 5fairTïg tat&7 জোড়াতাড়া দিয়ে একটা প্রজাতন্ত্র শাসনপ্রণালী; দাড় করালেন। রাজপরিবারকে নজরবন্দী অবস্থায় রাখা হ’ল। এর অল্প কয়েক দিন পরেই জার্মান গবর্ণমেণ্টের ইঙ্গিতে লেনিনও রুশিয়ায় ফিরে’ এলেন । 输 দেশের তখন বড়ই শোচনীয় অবস্থা। বিপ্লবের স্রোত রুশিয়ার একপ্রাপ্ত থেকে অপরপ্রস্ত পৰ্য্যস্ত খরবেগে বয়ে যাচ্ছিল। সবলের অত্যাচারে দুৰ্ব্বল অতিষ্ঠ হ’য়ে উঠেছিল। দেশে শাসন-শৃঙ্খলা মোটেই ছিল না । দুর্ভিক্ষ রাক্ষসী দেশটাকে গ্রাস করে বসেছিল। বারেবারে যুদ্ধে হেরে গিয়ে জনসাধারণ এবং সৈন্যদল কেরেনস্কির গভর্ণমেণ্টের উপর বিশ্বাস হারিয়েছিল। দেশের এই অবস্থায় লেনিন এসে প্রলোভনপূর্ণ ভাষায় সকলকে শাস্তির লোভ দেখালেন-বিদেশ থেকে প্রচুর খাদ্যত্রব্য আমদানি করে জয়কষ্ট নিবারণ করবেন বলে’ আশ্বাস দিলেন। লোকে আকাশের চাদ হাতে পেলে । বেগতিক দেখে কেরেনস্কি শেষ রাত্রে সামান্ত কয়েকজন শরীররক্ষক নিয়ে পালিয়ে কোনো-রকমে প্রাণ বঁাচালেন। লেনিনের একাধিপত্য প্রতিষ্ঠিত হ’য়ে গেল । পরের বছরে অর্থাৎ ১৯১৮ খ্ৰীষ্টাব্দের ১৬ই জুলাই তারিখে দ্বিতীয় নিকোলাস এবং তার পরিবারবর্গকে বধ ক'রে বলশেভিকেরা রোমানফ বংশ ধ্বংস করে ফেললে। দেশে কিন্তু শান্তি আর ফিরে এল না। দুর্ভিক্ষের প্রকোপ দ্বিগুণ বেড়ে উঠল—দেশ একেবারে ছারখার হ’য়ে গেল । পিতরের বড় সাধের সেন্টপিটাস্বর্গ এখন ভেঙে-চুরে ঐহীন হয়ে গেছে—রাজধানীও মস্কো নগরীতে স্থানান্তরিত করা হয়েছে। এখন সেন্টপিটাসর্বর্গের মেরামত চলছে। হয়ত কালে রাজধানী আবার ওখানে উঠে এলেও আসতে পারে ।