পাতা:প্রবাসী (চতুর্বিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৫০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

১ম সংখ্যা | কুমুখের মাছরে বসিয়া যে-ছোকরা বিড়ি টানিতেছিল, উত্তরের আশায় রমেশ তাহার দিকে তাকাইল । প্রোফেসারের বিড়ি টানা তখন শেষ হইয়াছিল, কিন্তু গান তখনও থামে নাই। প্রথম যেদিন সে এই ইম্পিরিয়াল হোষ্টেলে আসে, সেদিন সে এই বলিয়া পরিচয় দেয় যে, সে এম্-এ পাস করিয়া সম্প্রতি কোন একটা কলেজে প্রোফেসারি লইয়া কলিকাতায় আসিয়াছে —ভালো দেখিয়া একটা বাড়ী না পাওয়া পৰ্য্যন্ত এইখানেই থাকিবে । কিন্তু দৈব-জুৰ্ব্বিপাকে তাহার সে চালাকি • একদিন ধরা পড়িয়া লে। সে-সব অনেক কথা। তখন হইতে সকলেই তাহাকে প্রোফেসার বলিয়া ডাকে, অন্যান্য বিষয়েও এখানে তাহার যথেষ্ট স্বনাম আছে। প্রায়ই সে ইংরেজিতে কথা বলে, চাকুরীর সন্ধানে ঘুরিয়া বেড়ায়, কিন্তু বাহিরের কায়দা-কানুন তাহার এমনি লেফাফাদুরন্ত–দেখিলে বুঝিবার জো নাই যে, লোকটা বেকার । রমেশের কথাটা সে ভালো শুনিতে পায় নাই, বলিল, I beg your pardon HƠN"-Rf, f [[f{GR ? রমেশ বলিল, এই অজিত ছোকরা ম্যাটিকুলেশন পাশ করে এল চাকুরীর সন্ধানে, তাই বলছিলুম, চাকুরীর বাজার— প্রোফেসার হো হো করিয়া হাসিয়া উঠিল । তাহার পর হাসি থামিলে অজিতের মুখের পানে তাকাইয়। বলিল, I graduated myself in the year of our Lord nineteen-twenty, but still not engaged. এমন সময় "হরিবোল” হরিবোল’ বলিতে-বলিতে অজিতের পূর্ব-পরিচিত সেই কল-তলার ভক্রলোক ঘরে আসিয়া প্রবেশ করিলেন এবং দরজার একপাশে নে মাদুরট খালি পড়িয়াছিল, তাহারই একধারে জলভর্তি ঘটিটি নামাইয়া রাখিয়া একসঙ্গে সকলকে উদ্দেশ করিয়াই বলিতে লাগিলেন, আর চলে না দেখছি,-আমাদের জাত-ধৰ্ম্ম আর কিছু রইল না মশাই.. প্রোফেসার বলিয়া উঠিল, কি হ’ল ম্যানেজার-বাৰু? ম্যানেজার-বাবু সক্রোধে কহিলেন, হ’ল ? যা হবার, তাই হ’ল । ওই ব্যাটা স্থখনলাল, না, আমার ইয়ে লাল ! ব্যাট মুচি, ব্যাটা চামার !...বললুম, ব্যাট

  • ধ্বংস-পথের যাত্রী এরা—

8ፃ নিসনে, নিসনে, তোদের জন্যে রাস্তায় কল রয়েছে, সেই খান থেকে জল ধরে আন্‌! তা না ব্যাট ইঁ ই৷ করতে করতে নিলে একঘটি জল ধরে। তাই নিবি ত সে আলগোছেই নে রে বাপু, তা না কলের বাশটাও ছয়ে দিয়ে গেল –এসব হচ্ছে পয়সার গরম। ছোট জাতের পয়সা হয়েছে কিনা... যে-লোকটি ব্যায়াম করিতেছিল, সে তাহার উঠা-বসা বন্ধ করিয়৷ ই পাইতে স্থাপাইতে বলিয়া উঠিল, অn! বলেন কি ? কিন্তু সে-কথায় কর্ণপাত না করিয়া ম্যানেজার-বাবু বলিতে লাগিলেন, আচ্ছা বাবা, আমিও দেখে নিচ্ছি, কিছু করতে পারি কি না! আজই একটা মিটিং কল করি, তার পর হোষ্টেলের সবাই মিলে একবার ভালো করে’বলা যাক,--ত’তেও না শোনে, ব্যস্ ! প্রহারেণ ধনঞ্জয়: । সব বন্ধ করে দেবো। বস্তির ওই উড়ে, খোট্ট, স্তাকুর, কামার, ধোপ-টোপা সব বন্ধ । দেখি, আমাদের কলে কে জল নিতে পারে,—কত বড় মরদুক বাচ্ছা,—না, কি বলে হে পঞ্চানন ? অনেকক্ষণ হইতে কসরৎ করিয়া পঞ্চানন বোধ করি অত্যন্ত পরিশ্রান্ত হইয়া পড়িয়াছিল ; তাই সে একগ্লাস ঠাণ্ডা জলের সন্ধানে তাহার চট-উঠানো কলাই-করা টিনের গ্লাসটি হাতে লইয়া পাশের ঘরে উঠিয়া যাইবার উদ্যোগ করিতেছিল, ফিরিয়া দাড়াইয় তাহার সেই গ্লাস-সুদ্ধ হাতখানা বাড়াইয়া দিয়া বলিল, আমার এই এক্সারসাইজ-করা হাতের একটি ঘুষির চোটে বাবাজীকে 'হালিম্ খাইয়ে দিতে পারি, জানেন ? আপনার ওই . স্থখনলালকে দুখনলাল বানিয়ে ছেড়ে দেবো বাবা হেঁ-হে ! –এই বলিয়া সে তাহার উপরের এক পাটি দাত দিয়া নীচের ঠোট্টাকে বীরদপে চাপিয়া ধরিল। শেষ পর্য্যন্ত তাই হবে। বলিয়া ম্যানেজার-বাৰু দেয়ালের উপরের একটি কাঠের তাকৃ হইতে ঔষধের শিশির মত কাগজের দাগ-কাটা একটি শিশি বাহির করিলেন । প্রোফেসার বলিল,ওকি আপনার oilএর শিশি বেরুলে। নাকি ?