পাতা:প্রবাসী (চতুর্বিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৫১০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৪র্থ সংখ্যা] “নুতন ಕ್ಷತ್” 8brసి বর্তমানকালে ইলেক্টন বা অতিপরমাণু নামে অভিহিত হইয়া থাকে। এইবার রন্টগেন-রশ্মি-সম্বন্ধে কিছু বলা হইবে। কনরাড় হিবলহেল রন্টগেন-নামক একজন জার্মান দেশীয় পদার্থতত্ত্ববিৎ পণ্ডিত ১৮৯৫ খৃষ্টাব্দে ৮ই নভেম্বর পরীক্ষাগারে ফুক্স-সাহেবের কাচের নলের মধ্যে তড়িৎ-প্রবাহ সঞ্চালিত করিতে-করিতে অজ্ঞাতসারে কক্ষের একপাশ্বে দৃষ্টিপাত করেন। সেই পার্থে বেরিয়মূ-প্লাটিনো-সাএনাইড (Barium-platino-cyanide) RTF PR* ntoftal (4*খানি মোটা কাগজ পড়িয়াছিল। রন্টগেন দেখিতে পাইলেন যে, কাগজটি অতি উজ্জ্বলভাবে জলিতেছে, অথচ ক্রুক্সনলটি এরূপভাবে কাগজ দ্বারা আবৃত ছিল যে, উহার ভিতর হইতে কোনোক্রমে সাধারণ আলো বাহিরে আসিতে পারে না ; কয়েক মিনিট অনুসন্ধানের পর তিনি বুঝিতে পারিলেন যে,কাচের নল হইতে কতকগুলি রশ্মি বাহির হইতেছিল। ঢাকৃনিটা ভেদ করিয়া রশ্মিগুলি ইনমাথা কাগজের উপর পতিত হইয়াছিল। রশ্মির গুণে কাগজখানা উজ্জল হইয়া উঠিয়াছিল। তিনি এই অজ্ঞাত রশ্মির নাম দিলেন এক্স-রে (X-ray )। অতি আশ্চর্য্যের বিষয় এই যে, এক্স-রে বা রন্টগেন রশ্মি হইতে কোনো দৃপ্ত আলোকের উৎপত্তি হয় না, কিন্তু যেসমস্ত প্রব্যের ভিতর সাধারণ আলো প্রবেশ করিতে পারে না, রন্টগেন-রশ্মি তাহাদের ভিতর অনায়াসে প্রবেশ করে। রন্টগেন এই অদৃগু আলোকের সাহায্যে অনেক পরীক্ষা করিতে লাগিলেন। কক্ষের এককোণে একটি কাঠের বাক্সের ভিতর কতকগুলি লৌহাদি পদার্থ ও কালো কাগজে উত্তমরূপে জড়ানো একখানি ফোটোগ্রাফির কাচ বাক্সের গায়ে হেলানো ছিল। তিনি দেখিতে পাইলেন যে, বাক্সের ভিতর যে-সমস্ত ধাতু ছিল, ফোটোগ্রাফির কাচের উপর তাহাদের ছবি পড়িয়াছে, অথচ বাক্স বা ফোটোগ্রাফির কাচের ভিতর-বাইরের কোনো আলো প্রবেশ করিবার উপায় ছিল না। আরও দেখিলেন যে, তাহার হস্ত পূৰ্ব্বোক্ত কাচের নল এবং বেরিয়াম-প্লাটিনো-সাএনাইড-মাখানো কাগজের মধ্যে স্থাপন করিলে কাগজের উপর হাতের হাড়ের প্রতিমূৰ্ত্তি মাংসের অপেক্ষা অধিক স্পষ্টরূপে পড়িয়াছে। তিনি কাগজের পরিবর্তে কালো কাগজে-জড়ানো একখানি ফোটোগ্রাফির কাচ হাতের উপরে রাখিলেন ; পরে যখন সেটিকে ক্রমে বিকশিত (develop) করা হইল, তখন দেখা গেল যে, ফোটোগ্রাফির কাচের উপর হাতের হাড়ের প্রতিমূৰ্ত্তি অতি স্পষ্টভাবে পড়িয়াছে। তিনি এই অত্যাশ্চৰ্য্য ঘটনাবলী দর্শনে ষার-পর-নাই আনন্দিত হইয়া এবং অন্ত্র-চিকিৎসকগণের পক্ষে ইহা অত্যন্ত উপকারী বুঝিতে পারিয়া অবিলম্বে স্থানীয় চিকিৎসালয়ে তাহার এই নব আবিষ্কারের বিশদ বিবরণ প্রেরণ করেন। তার পর ক্ৰমে-ক্রমে সভ্য জগতের সৰ্ব্বত্রই রন্টগেন-রশ্মির অভাবনীয় ক্রিয়ার পরীক্ষা হইতে লাগিল । রন্টগেন-রশ্মির প্রধান ধৰ্ম্ম এই যে, সাধারণ আলোকরশ্মি যেসকল পদার্থ ভেদ করিতে সমর্থ নছে, এরূপ অনেক পদার্থকেই রন্টগেন-রশ্মি অক্লেশে ভেদ করিয়া যায়। ক্রুক্স-নল লইয়া পরীক্ষা-কালে রন্টগেন যে মোটা কাগজের আবরণ ব্যবহার করিয়াছিলেন,উহা এই রশ্মির পক্ষে নিতান্ত স্বচ্ছ । কাগজ, কাপড়, কাঠ, চৰ্ম্ম, মাংস প্রভৃতি সাধারণ আলোকের পক্ষে অস্বচ্ছ হইলেও রন্টগেন-রশ্মির পক্ষে বেশ স্বচ্ছ । রন্টগেন-রশ্মির এই ভেদ করিবার ক্ষমতা প্রকৃতই অভূত। বিগত পচিশ বৎসরের মধ্যে রন্টগেন-রশ্মির আশ্চৰ্য্য ক্ষমতার কথা শ্রুতি-গোচর হয় নাই, এরূপ ব্যক্তি বিরল। যে-রশ্মির সাহায্যে বাক্স না খুলিয়াই ভিতরকার টাকা-কড়ি দেখিতে পাওয়া যায়, চামৃড়া নাচিরিয়া হাত-পায়ের হাড় দেখিতে পাওয়া যায়, বিনা অস্ত্র-প্রয়োগে শরীরের কোন স্থানে গুলিবিদ্ধ হইয়াছে অথবা শরীর-যন্ত্রের কোথায় কোন বিকৃতি ঘটিয়াছে, ইহা নিরূপণ করিতে পারা যায়, এরূপ আবিষ্কারে যে বিজ্ঞান-জগতে একটা হুলস্থল পড়িয়া গিয়াছিল, তাহ আশ্চর্ঘ্যের বিষয় নহে। অদৃশ্বকে দৃশু করাই রন্টগেন-রশ্মির প্রধান গুণ। যাহা কল্পনার অতীত ছিল, রন্টগেন-রশ্মি তাহা সম্ভব করিয়াছে। কনরাড, হিন্নলহেলম রন্টগেন ১৮৪৫ অঝে ২৭শে মার্চ জাৰ্ম্মান দেশে রাইন-প্রদেশের অন্তর্গত লেনেপ-নগরে জন্মগ্রহণ করেন। শৈশবকাল হইতেই তাহার অলৌকিক স্বতশক্তি, প্রবল অধ্যবসায় ও বিদ্যাশিক্ষায় তীব্র অঙ্কুরাগ ছিল। ১৮৭০ খৃষ্টাব্দে তিনি সম্মানের সহিত জুরিকৃ