পাতা:প্রবাসী (চতুর্বিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৫১১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

8Se বিশ্ববিদ্যালয় হইতে দর্শনশাস্ত্রে বি-এ উপাধি প্রাপ্ত হইলে হোহেনহাইম্‌ নগরস্থ কৃষিবিদ্যালয়ে গণিত ও পদার্থবিজ্ঞানের অধ্যাপক নিযুক্ত হন। কয়েক বৎসর পর ১৮৭• অৰে তিনি হুটুর্সবুর্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে পদার্থ-বিজ্ঞানবিভাগে অধ্যক্ষ-পদে উন্নীত হন। তিনি তথায় একাগ্রচিত্তে কেবল তড়িৎ-শক্তিরই বিষয়ে গবেষণা করিতেন। এইরূপ বৎসরের পর বৎসর অতীত হইলে ১৮৯৫ অব্দে তিনি এই অত্যাশ্চৰ্য্য রন্টগেন-রশ্মি আবিষ্কার করিয়া একজন প্রসিদ্ধ বিজ্ঞানবিং বলিয়া অশেষ খ্যাতি ও প্রতিপত্তি লাভ করেন । এই আবিষ্কারের জন্য ১৯০১ অব্দে তিনি জগদ্বিখ্যাত নোবেল প্রাইজ প্রাপ্ত হইয়াছিলেন। দুঃখের বিষয় গত বৎসর এই মনীষী দেহত্যাগ করিয়াছেন। বৈজ্ঞানিক গবেষণায় প্রমাণিত হইয়াছে যে রন্টগেনরশ্মির উৎপত্তি হইতেছে ক্যাথোড-রশ্মি বা ইলেক্ট্রন-প্রবাহ হইতে । কাচ-নলের যে-স্থানে ক্যাথোড-রশ্মি পতিত হয়। উহাই রন্টগেন-রশ্মির উৎপত্তি স্থান। ঐ স্থানটি যে বেশ উজ্জল হয় ও গরম হয়, কুক্‌স-প্রমুখ বৈজ্ঞানিকগণ ইহা দেখিয়াছিলেন ; কিন্তু ঐস্থান হইতে যে নূতন-রকমের রশ্মি নির্গত হইয়া থাকে, যাহা কাঠ, কাগজ, রক্ত, মাংস অনায়াসে ভেদ করিয়া যাইতে পারে, উহা আবিষ্কার করিলেন রন্টগেন। ক্রমে দেখা গেল যখনই ক্যাথোড-রশ্মি কোনো কঠিন পদার্থে বাধাপ্রাপ্ত হয়, তখনই ঐ স্থান হইতে রন্টগেন-রশ্মি উৎপন্ন হইয়া থাকে। ক্যাথোড-রশ্মি হইতে উৎপন্ন হইলেণ্ড রন্টগেন-রশ্মি ক্যাথোড-রশ্মি নহে, কেননা ক্যাথোর্ড-রশ্মির এত ভেদ করিবার শক্তি নাই এবং ক্যাথোড-রশ্মির মতন রন্টগেন-রশ্মির উপর চুম্বকের প্রভাব নাই। ইহা সাধারণ আলোক-রশ্মি নহে, কেননা ইহা অদৃশু। সাধারণ আলোক-রশ্মি এত তীক্ষ নহে এবং সাধারণ আলোকের যেগুলি বিশেষ ধৰ্ম্ম—প্রতিফলন (Reflection), forén (Refraction) 8 সমতলীsna (Polarisation ), উহার কোনোটাই রন্টগেনরশ্মিতে পরিস্ফুট নহে। উহা ক্যাথোড-রশ্মি নহে, আলোক-রশ্মিও নহে, ধারাবাহিক কণা-প্রবাহও নহে, ধারাবাহিক তরঙ্গ-প্রবাহও নহে, স্বতরাং প্রশ্ন উঠে, উহা কোন জাতীয় রশ্মি ? প্রবাসী—মাঘ, ১৩৩১ [ ২৪শ ভাগ, ২য় খণ্ড এপর্য্যন্ত যতগুলি রশ্মি আবিষ্কৃত হইয়াছে, তাছাদের ”সকলকেই হয় কণা-বাদের অথবা তরঙ্গ-বাদের অন্তর্গত করা চলে। রন্টগেন-রশ্মিকেও ইহার একটা কোঠায় না ফেলিলে বৈজ্ঞানিকের তৃপ্তিলাভ ঘটে না । অধ্যাপক ষ্টোক্স বলিলেন, কণা-বাদে চলিবে না, খাটি তরঙ্গ বাদেও সুবিধা হইবে না—একটা বিশিষ্ট তরঙ্গ-বাদের প্রয়োজন। ইলেক্ট্রনের ধাক্কা হইতে যাহার উৎপত্তি— যাহাকে বলা হয় রন্টগেন-রশ্মি—উহ কণাজাতীয় নয়, তরঙ্গজাতীয়, তবে আলোক-তরঙ্গের ন্যায় উহার একটির পর একটি শ্রেণীবদ্ধ হইয়া চলে না—উহারা খাপছাড়া তরঙ্গ । এইজন্যই আলোক-তরঙ্গের বিশেষ ধৰ্ম্মগুলি রন্টগেন-রশ্মিতে সেরূপ প্রকট নহে । রন্টগেন-রশ্মির তরঙ্গ আলোক-তরঙ্গের তুলনায় অতিশয় ক্ষুদ্র । আমরা যাহাকে আলোক বলি,তাহা সৰ্ব্বব্যাপী ইথারনামক এক পদার্থের ( ) তরঙ্গ হইতে নাকি উৎপন্ন। ইথারকে দেখা যায় না, কিন্তু ইহা সৰ্ব্বস্থানে অবস্থান করে । বায়ু কেবল পৃথিবীর উপরেই আছে—নৰ ই কি একশত মাইল উদ্ধে উঠিলে আর বায়ুর অস্তিত্ব থাকে না। সম্প্রতি বিখ্যাত ফরাসী জ্যোতির্ষিক অ্যাব বে মোরো (AbboAMoreaux) ùììSJ ùùi (Aurora Borealis) **J**| করিয়া মত প্রকাশ করিয়াছেন যে, বায়ু-স্তর ৫৪• মাইল পৰ্য্যন্ত বিস্তৃত। কিন্তু ইথার জিনিষটা সে প্রকার নয়, ইহা সমগ্র ব্ৰহ্মাও জুড়িয়া আছে। বায়ুতে বা জলের কোনো স্থানে একটু আলোড়ন উপস্থিত হইলে যেমন তরঙ্গাকারে সেই আলোড়ন চারিদিকে ছুটিয়া চলে, ইথারেও তাহাই হয়। কোটি-কোটি মাইল দূরের জ্যোতিষ্কে অগ্নি প্ৰজলিত হইলে ইথারের যে আলোড়ন উপস্থিত হয়, তাহা তরঙ্গ-পরম্পরায় আসিয়া অামাদের দর্শনেন্দ্রিয়ে ধাক্কা দেয় এবং এই ধাক্কাতেই আমরা আলোককে দেখিতে পাই। শব্দ বা ধ্বনির বৈচিত্র্য বায়ুর তরঙ্গের সংখ্যার উপর নির্ভর করে। তরঙ্গের দৈর্ঘ্য যত কম বা বায়ুর কম্পন-সংখ্যা যত অধিক হইবে, শব্দও তত চড়িতে থাকিবে। পরীক্ষা দ্বারা দেখা গিয়াছে যে, এই কম্পন সংখ্যা ৩৮,••• বার হইলে শস্ব এতই চড়িয়া যায় যে, তাহা তখন আমাদের কর্ণদ্বারা অনুভূত