পাতা:প্রবাসী (চতুর্বিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৫১২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৪র্থ সংখ্যা ] হয় না। আবার কম্পন-সংখ্যা কমাইতে-কমাইতে সেকেওে ৩০ বারের কম হইলে শব্দ এতই গম্ভীর হইয়া যায় যে, তাহা আর কোনোক্রমেই শ্রুতি-গোচর হয় না। তেমনই জলন্ত পদার্থ হইতে জাত আলোক-তরঙ্গদ্বারা যেসকল বর্ণ উৎপন্ন হয়,মানব-চক্ষুতাহার সকলগুলি দেখিতে পায় না,—অনন্ত আকাশ-ব্যাপী অনন্ত তরঙ্গের প্রত্যেক হিল্লেীল লক্ষ্য করা সসীমমানবের সম্পূর্ণ অসাধ্য ব্যাপার, তাই আমরা অনতিবিস্তৃত সাধারণ বর্ণচ্ছত্রে কেবল লোহিত হইতে ভায়োলেট পর্য্যন্ত কয়েকটি বর্ণ দেখিয়া থাকি। লোহিত বর্ণোৎপাদক তরঙ্গ অপেক্ষ বৃহত্তর তরঙ্গদ্বারা যে বর্ণ উৎপন্ন হয়,তাহা ক্ষুদ্রদ্ধৃষ্টি মানব কিছুতেই দেখিতে পায় না এবং ভায়োলেট উৎপাদক তরঙ্গ অপেক্ষা স্বল্পতর কম্পনদ্ধারা যেসকল বর্ণ বিকশিত হয়, তাহাও মানব-ইন্দ্রিয়-গ্রাহ হয় না। তাই দৰ্শন-কাৰ্য্যে চক্ষুর অপকর্ষতা লক্ষ্য করিয়া জনৈক খ্যাতনাম বৈজ্ঞানিক বলিয়াছেন—“মানব-চক্ষুর ন্যায় একটি অসম্পূর্ণ স্থূলযন্ত্র নিৰ্ম্মিত হইয়া বিক্রয়ার্থ প্রস্তুত থাকিলে তাহা চিরকালই অবিক্রীত থাকিত” । রন্টগেন-রশ্মির তরঙ্গ সাধারণ আলোক-তরঙ্গের তুলনায় অতিশয় ক্ষুদ্র। ইহার দৈর্ঘ্য ভায়োলেট-উৎপাদক তরঙ্গের দৈর্ঘ্যের সহস্রতম অংশ মাত্র। সেই জন্যই ইহা অদৃশ্য । অদৃষ্ঠালোকের প্রকৃত বর্ণ কি তাহা আমাদের জ্ঞানাতীত, অসম্পূর্ণ মানব-দৃষ্টি উক্ত আলোক-উৎপাদক .কম্পন কোনোক্রমেই অনুভব করিতে পারে না। কিন্তু ভায়োলেট-উৎপাদক তরঙ্গ অপেক্ষা ক্ষুদ্রতর তরঙ্গযুক্ত অদৃপ্ত কিরণের রাসায়নিক শক্তি অত্যন্ত প্রবল এবং এই শক্তিই এই অদৃশু আলোকের একমাত্র অস্তিত্ব-জ্ঞাপক। ফোটোগ্রাফের কাচ এই আলোকে উন্মুক্ত রাখিলে তৎক্ষণাৎ বিকৃত অবস্থা প্রাপ্ত হয়, কাচের বিকৃতি দেখিয়া আমরা অদৃশ্যালোকের অস্তিত্ব জানিতে পারি। সেই জন্যই রন্টগেন-সাহেবের পরীক্ষায় রন্টগেন-রশ্মির অস্তিত্বজ্ঞাপন করিবার জন্য ফোটোগ্রাফির কাচ বা কুন-মাখানো কাগজের প্রয়োজন। হন-মাখানো কাগজের উপর রাসায়নিক প্রক্রিয়ার জন্যই রন্টগেন এই বিখ্যাত রশ্মির অস্তিত্ব ধরিতে পারিয়াছিলেন । নূতন “ভূত” 8ぬ〉 যুবক বৈজ্ঞানিক মোঙ্গলী গত ১৯১৩ খৃষ্টাৰে দেখাইয়াছেন যে, ক্যাথোড-রশ্মি মৌলিক পদার্থকে ধাক্কা দিবার পর যে রন্টগেন-রশ্মি উৎপাদন করে, উহার তরঙ্গের orsi e osa-ori (wave-length and frequency) মৌলিক পদার্থের প্রকৃতি-অনুসারে ভিন্ন-ভিন্ন হইয়া থাকে। এইরূপে উদ্ভূত রন্টগেন-রশ্মি রশ্মি-বিশ্লেষণ যন্ত্রের মধ্য দিয়া গমন করিতে দিয়া ফোটোগ্রাফির কাচের উপর পাতিত করা হয়। ফোটোগ্রাফির কাচটি ক্রমে বিকশিত (develop) করিয়া উহার সাহায্যে কম্পন-সংখ্যা ( number of froquoncios ) নির্ণয় করা হয়। এইরূপে তিনি প্রত্যেক মূল-পদার্থকে বিশ্লেষণ করিয়া এক পদার্থকে অন্ত মূল পদার্থ হইতে একটি বিশিষ্ট সংখ্যা দ্বারা (Atomic Number ) পৃথক করিতে প্রয়াস পান। এইসঙ্গে একটা কথা বলা আবশ্যক। উনবিংশ শতাব্দীর মধ্যভাগে প্রসিদ্ধ রুশ-বৈজ্ঞানিক মেণ্ডেলিফ এক নূতন নিয়ম আবিষ্কার করেন। সঙ্গীতের স্বরলিপিতে যেমন প্রত্যেক সপ্তকের পর স্বরের পুনরাবৃত্তি হইতে থাকে, মূল পদার্থগুলিকে আণবিক গুরুত্ব-অনুসারে সাজাইয়া গেলে সেইরূপ দেখা যায় যে, প্রথম সাতটি মৌলিকের পরবর্তী মৌলিকসমূহে পূর্বের গুণসমূহের পুনরাবির্ভাব হইতে থাকে। পরমাণুর ওজনের এই ক্রমিক বৃদ্ধির হিসাব ধরিয়া যে তালিকা রচিত হয়, তাহার নাম মেণ্ডেলিফের তালিকা । এই তালিকায় প্রতিমৌলিকের অষ্টম মৌলিক দ্রব্যগুণ ও অপরাপর রাসায়নিক প্রক্রিয়ায় প্রায় এক-ধৰ্ম্মাবলম্বী । এই অষ্টম মৌলিকের (Law of Octaves) fox Rifosi বৈজ্ঞানিকগণ নূতননূতন মৌলিক পদার্থ আবিষ্কার করিয়াছেন। অনাবিষ্কৃত প্রত্যেক অষ্টম-মৌলিকের গুণ ও তাহার পরমাণুর ওজন এই হিসাব ধরিয়া বৈজ্ঞানিকেরা অনেক আগে হইতেই বলিয়া দিতে পারেন। অবশ্য এইসঙ্গে বলা আবশ্যক যে, মেণ্ডেলিফের নিয়ম অভ্রান্ত নহে এবং ইহা সৰ্ব্বত্র অবিসংবাদে প্রযোজ্য নহে। কিন্তু মোজলী তাহার আণবিক সংখ্যার ( Atomic Number ) সাহায্যে মেওেলিফ যাহা সম্পূর্ণ প্রমাণ করিতে পারেন নাই, তাহা । বিশদভাবে ব্যাখ্যা করিতে পারিয়াছেন। তিনি আরও