পাতা:প্রবাসী (চতুর্বিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৫৬১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

2\○* প্রবাসী—মাঘ, ১৩৩১ [ ২৪শ ভাগ, ২য় খণ্ড তা’রা যদি ইংলণ্ডকে নরক থেকে স্বর্গে পরিণত করার দিকে অগ্রসর হতে পারে, আমাদেরও হাত-পা-মস্তিষ্ক • আছে, আমরা কেন পারব না? আপনারা মনে করবেন না, স্বৰ্গ আকাশ থেকে পড়ে ; মানুষকে করতে হয়, মাহবকে নিজের চেষ্টায় স্বৰ্গ গড়তে হয়, নিজের উযোগ না হ’লে ভালো কখনও হয় না। তার পর আরেকট। আপত্তি আছে, কেহ বলতে পারেন—“মশায়, আপনি বলছেন স্বাবলম্বন করো; ইংলণ্ডে যুদ্ধের পর অfজ পৰ্য্যস্ত ১০ লক্ষ লোককে রাজকোষ থেকে খোরপোষ দেওয়া হয়েছে, আমাদের দেশে লোক খেতে পায় না তার কোনো কথা নাই কেন?” সে-বিষয়ে কিছু বলছি। বিলাতে শ্রমিক গবন্মেণ্ট ছিল। তারা প্ল্যান করেছিলেন ১৭॥• লক্ষ বাড়ী তৈরী হবে, অল্প ভাড়ায় শ্রমজীবীরা সেখানে থাকৃতে পারবে । হায়দরাবাদের নিজাম নিজের রাজ্যে এইরকম অল্প ভাড়ার বাড়ী অনেক তৈরী করে দিয়েছেন। চেষ্টা করলে এই বীরভূম জেলায়ও সে-রকম সব কাজ হ’তে পারে। কিন্তু আমাদের দেশে গবষ্মেণ্ট দ্বারা যদি কাজ করাতে চাই, তা হ’লে কথা উঠবে আমরা স্বাবলম্বন করি না। বিলেতে সে-কথা উঠে নাই, কারণ জনসাধারণ ও গবন্মেন্ট সেখানে এক। আমরা যদি গবন্মেণ্টের সমস্ত ক্ষমতা অধিকার করতে চেষ্টা করি ( এবং আমার বিশ্বাস তাতে আমরা কৃতকাৰ্য্য হবে), তা হ’লে এই ভেদ থাকবে না। তখন গবষ্মেন্ট মামাদের গবশ্লেষ্ট হয়ে যাবে। আমাদের দেশের শাস্ত্রে বলে, রাজা যে কর নেন, সেটা তার মাহিনী। কালিদাস রঘুবংশে লিখেছেন, ইক্ষাকুবংশীয় রাজা দিলীপ প্রজাদের শ্ৰীবৃদ্ধির জন্য কর নিতেন। স্বর্ধ্য যেমন বাপাকারে জল আকর্ষণ করে” মেঘরূপে পরিণত করে বৃষ্টিরূপে শত ধারায় তা’কে ফিরিয়ে দেন, সেইরূপ দিলীপ প্রজার নিকট থেকে কর নিয়ে প্রজার “For long the now industrial towns can only be described as hells upon carth, holls created by the greed of gain on the part of manufacturer or speculative builder, a groed as yet unchecked by the awakening of the corporate conscience of the community.”—Mr. J. S. Hoyland in The Young Men of India for November, 1924. উপকারের জন্ত ব্যয় করতেন। এ আদর্শ আমাদের দেশে নূতন নয়, বৌদ্ধযুগে রাজাকে বলা হ’ত গণৰাগ— সৰ্ব্বসাধারণের সেবক । ইংরেজীতে পাব্লিক্ সার্ডেন্ট কথা আছে—অনেকে তার মানে বুঝেন না। অধিকাংশ হাকিম ও পুলিশের লোক মনে করেন, তার বেসরকারী লোকদের প্রভু। কিন্তু অনেক পাব্লিক্ সার্ডেন্ট আছেন, র্তারা সত্যই জন-সাধারণের সেবক। অনেকে যদি সেটা মনে না করেন তবে সেটা তাদের ভুল । তারা যখন সেটা বুঝতে পারবেন তখন দেশের আরো অনেক উন্নতি হবে। তার পর আমার শেষ জবাব—আমি মেনে নিলাম আমার সব কথা ভুল। কিন্তু আমরা সব দোষ গবষ্মেন্টের ঘাড়ে চাপিয়ে যদি নিশ্চিন্তু থাকি, তা হ’লে কি ম্যালেরিয়া দূর হবে, না কৃষির উন্নতি হবে, না রাস্তাঘাট পরিষ্কার হবে ? এবং এইসকল বিষয়ে উন্নতি না হ’লে বিলেতের লোকেরা ভুগবে না, মরবে না, ভূগব মর্ব আমরাই। এইসব বিষয়ে উন্নতি না করে” কোনো দেশ জাগে নাই—ইংলণ্ড না, আমেরিকা না, ফ্রান্স না । আগে কয়েক-রকম ভেদ যথা—ধৰ্ম্ম-সম্বন্ধে ভেদ, জাতি-ভেদ, রাজনৈতিক দল-ভেদের সম্বন্ধে কিছু বলেছি। তা’র উপর আর একটা ভেদ আছে, সহরের লোক আর পাড়াগায়ের লোকের মধ্যে ভেদ । আমরা সহরে থাকি, আমরা পরগাছা । পরগাছা সকলে দেখেছেন, এক গাছের উপর আর-একটা গাছ হয়। সে নিজে মাটির থেকে রস আকর্ষণ করে না ; অন্তে যে-রস আকর্ষণ করে, তার থেকে সে কিছু আদায় করে নেয়। আমরা সহরে থাকি, চাষ করি না, কাপড় বুনি না। কিন্তু চাষের ফসল সকলেই চায়, ভালো চা’ল সকলেই চায়। ভালো কাপড় সকলেই পরতে চায়। আমরা সহরে বসে কলমের জোরে সে-সকল সংগ্রহ করে স্বখে আরামে থাকি। পরিশ্রম, কষ্টভোগ গ্রামের লোকে করে। সহর্যে পরগাছার জীবন আমাদের যতদিন থাকৃবে, ততদিন আমরা দেশের লোকের সঙ্গে এক হতে পারব না। আমরা গ্রামের লোকের কাছে যে সাহায্য পাই, শান্তি পাই, আমরা যদি সে-সব সাহায্য ১০ গুণ করে তাদের ফিরিয়ে দিতে পারি, কেবল