পাতা:প্রবাসী (চতুর্বিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৬০৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

d Գե অতুলপ্রসাদের গানের কবিত্ব-সম্বন্ধে বিশদ আলোচনা করা আমার এ-প্রবন্ধের উদ্দেশ্য নয়। তবু একটা কথা আমি এ-প্রসঙ্গে বলতে চাই। সেটা হচ্ছে এই যে, অতুলপ্রসাদের গানের কথার দিক দিয়ে দেখতে গেলে র্তার একটা বৈশিষ্ট্য মনে হয়—ভক্তিরসকে একটু অভিনবভাবে উদ্রেক করার তার ক্ষমতা । তার এ ক্ষমতার মূল শুধু তার কবিত্ব শক্তি নয়—কারণ শ্রেষ্ঠতর কবিত্বের সাহায্যেও অনেক সময়ে আমাদের আধুনিক মনে ঠিক črton 7 other worldiness ng witwyaf coħşų না, যদি সে-কবিত্বের সঙ্গে . একটা directness না থাকে। অতুলপ্রসাদের গানে এই directness জিনিষটি প্রায়ই আমাদের আধুনিক refinement এর সাহায্যে এক অভিনব রূপ ধরে’ মূৰ্ত্ত হয়ে উঠেছে দেখা যায়। ফলে হয়েছে এই যে তার ভক্তিরসাত্মক গান ঠিক মামুলিভাবে আমাদের ভক্তি না জাগিয়ে অনেকট তার কবিত্ব ও directnessএর সাহায্যে আমাদের হৃদয়তন্ত্রীতে আঘাত করে। এর স্পর্শে আমাদের হৃদয়ে যে-অনুভূতিটি জাগে তা’কে একটু বিশ্লেষণ করে” দেখতে গেলে দেখা যায় যে সেটা ঠিক পুরাতন ভক্তিরসাত্মক গানের ভক্তির অনুভূতি নয়। এ একটা নূতন-রকম complex অনুভূতিটির বিষয়ে বিশদ বর্ণনা শুধু কথায় সম্ভব নয়, কারণ এ অনুভূতির জাগরণ হ’তে পারে এক কথা ও স্বরের সামঞ্জস্তে। তাই আমি আমার বক্তব্যটি পরিস্ফুট ক’রে তোলবার জন্ত দুটি গান গেয়ে আপনাদের শোনাতে চাই। ( এখানে লেখক “হরি হে তুমি আমার সকল হবে কবে” ও ত্রযুক্ত রণজিৎ সেন থাকিস্নে বসে তোরা মুদিন আসবে বলে’ ” গান-দুটি গেয়েছিলেন । ) অভক্তেরও যে অতুলপ্রসাদের এ-শ্রেণীর গানগুলি সচরাচর ভালো লেগে থাকে,তার কারণ বোধ হয়(১)কবির এ-শ্রেণীর গানের স্বর অনন্তসাধারণ না হ’লেও মনোহর ও (২) তার শ্রেণীর গানের কথার মধ্যে যে আবেদনটি আছে তাতে আমাদের ভক্তিরস না হোকু মানবমনের চিরন্তন অসীমের আকাঙ্ক্ষাটি কবিত্বরূপ জাদুকরের সোনার কাঠির পরশে সজাগ ও চঞ্চল হ’য়ে ওঠে। “সীমার মধ্যে প্রবাসী—ফাঙ্কন, ১৩৩১ [ ২৪শ ভাগ, ২য় খণ্ড অসীমের স্বর” চিরদিনই মানবহৃদয়-রাজ্যে এমুনি স্বযম বিস্তার করে এসেছে—এমূনি মোহজালই বেড়ে এসেছে। —কেন ?—কে জানে। সঙ্গীত ও কৰিত্বের স্বপ্নরাজ্য আমাদের মনোজগতে এ-মোহপরশ ঘেমনভাবে এনে দেয় অন্ত কোনো ললিতকলা সে-সৌরভ তেমনভাবে এনে দিতে পারে কি না জানিনে —তবে এটা জানি যে, যে শিল্প এ অঙ্গন-অচেনার স্বরভি যত গভীরভাবে এনে দিতে পারে, তার গরিমাও ততই মহীয়সী হ’য়ে osts i অজানার চরণে মানব-মনের এই যে চিরন্তন আবেদন, মামুষের যুগযুগান্তর ধরে তা’কে পাওয়ার এই যে নিহিত বাসনা—এ-সব অতুলপ্রসাদের নানান গঠনেই মূৰ্ত্ত হ’য়ে উঠেছে। যেমন তার “বাংলা ভাষা” গানটির শেষ চরণদুটিতে যেখানে কবি গেয়ে উঠেছেন – “ঐ ভাষাতেই প্রথম বোলে ডাকৃষ্ণু মায়ে মা মা ব’লে ঐ ভাষাতেই বলব হরি সাঙ্গ হ’লে কাদা-স্বাসা। অথবা মিছে তুই ভাবিস মন গানটির শেষ চরণ-দুটিতে – আজি তোর র্যার বিরহে নয়নে অশ্রু বহে (ওরে ) হয়ত র্তাহার পাবি দেখা গানটি হ’লে সমাপন । অথবা থাকিস না ব’সে তোরা গানটির শেষ চরণ-দুটিতে :– ভাঙলে বালির আবাস বিষাদে হোসনে হতাশ আছে ঠাই বলে বাতুল রাতুল চরণ-তলে । অজানা, অচেনা, অসীমের প্রতি মানবমনের এই যে নিগুঢ় আকাঙ্ক্ষা তার জন্য অবোধ হৃদয়ের এই যে চিরন্তন অশ্র-সজল আরাধনা,—একে বোধ হয় ভারতের মনোজগতের একটা বৈশিষ্ট্য বললেও অত্যুক্তি হবে না। আমি অবশ্য বলতে চাইনে যে এ-মনোভাবটি শুধু ভারতেরই একচেটে । কারণ পরজগতের এই যে আকর্ষণ, জীবনের নানান তৃষ্ণার মধ্যে অজ্ঞাত রহস্তের এই যে মাদকতা, এরা বোধ হয় মানবমন মাত্রকেই কমবেশী অভিভূত না করে’ই পারে না। তবে আমার মনে হয় যে এ মনোভাবটি নিয়ে ভারতের শ্রেষ্ঠমনারা—কবি, দার্শনিক, বাউল, কীৰ্ত্তনী প্রভৃতি—যতটা চেষ্টা করেছে—ততটা অন্যান্য সভ্যতার শ্রেষ্ঠমনারা করেনি । তবে এই পাওয়ার আকাঙ্ক্ষা থাকূলেই যে তাকে