পাতা:প্রবাসী (চতুর্বিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৬২২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৫ম সংখ্যা ] ফিরিয়া না-আসা পৰ্যন্ত মহেশ্বরী গৃহের দ্বারে চুপ করিয়া বসিয়া রহিলেন । যাহারা অনুসন্ধানের জন্ত গিয়াছিল তাহাদের মধ্যে একটি লোক, বলাই যাহার দ্বারা সংবাদ পাঠাইয়াছিল তাহাকে সঙ্গে লইয়া মহেশ্বরীর নিকটে আসিয়া উপস্থিত হইল। লোকটি বলিল, “বাবুর খবর দিতে বলেছিলেন, আমি খেয়ে-দেয়ে আসব বলে’ দেরি করছিলাম।” বিরক্তি চাপিয়া মহেশ্বর জিজ্ঞাসা করিলেন, "তুমি তা’কে দেখেছ নৌকোয় উঠতে ?” “হঁ। মা, আমি কি মিথ্যা কথা বলছি। আমি সেই ঘাটের কাছেই কাঠ কাটুছিলাম। কানাই-বাৰু নৌকায় উঠলে—নৌকা ভাসালে আমি চলে এসেছি।” মহেশ্বরীর কতকটা ভাবনা দূর হইল বটে কিন্তু তিনি নিশ্চিন্ত হইতে পারিলেন না। বালকের সম্বন্ধে এই যে ভেদ-জ্ঞান সংসারস্বদ্ধ লোকের নিকট অত্যন্ত প্রত্যক্ষ হইয়া আছে, তাহার ফলে না জানি নূতন স্থানে যাইয়া মৃতন-নূতন চক্ষুর সম্বন্ধবিহীন দৃষ্টিতে সে কতখানি টানাটানির মধ্যে পড়িয়া যায় ! সেখানে এই ব্ৰহ্ম-বস্তুর উপর পদাঘাত করিতে কি সকলের বাধিবে ? সঙ্কীর্ণতার অপরিহার্ষ্য গণ্ডীতে পড়িয়া সে সেখানে কাহাকে অঁাকড়িয়া ধরিবে ? সে যে নিজের বিরুদ্ধে পৰ্য্যাপ্ত অস্ত্ৰ-শস্ত্র লইয়াই পৃথিবীর একপার্থে স্থানগ্রহণ করিয়াছে ! সেখানে কে তাহাকে এত আঘাত হইতে বাচাইয় আড়াল করিয়া রাখিবে ? মহেশ্বরী ভাবিতে-ভাবিতে সেইখানে অসাড় হইয়া গেলেন । শৈল আসিয়া কহিল, “শাস্তির সঙ্গে গেছে তার আর ভাবনা কি ? বলাইও ত গেছে ? বরং পাচসাত দিন পরে লোকও নৌকো পাঠিয়ে দিলে হবে—দু’ ভায়ে একসঙ্গে চলে আসবে।” মহেশ্বরী কহিলেন, “সে-কথা ভাবছিনে। ভাবছি —এরকম চুক্তি-পত্তর বিধাতা তার হাতে তুলে দিয়েছেন —না মানুষে দিয়েছে ? শান্তির বিয়েব কথা যে এখনও গাথা রয়েছে ” শৈল কহিল, “তা সেখানে কি আর সে অধত্বে বামুন-বাগদী 6tS& থাকবে ? সে কি ভাবে থাকে—শাস্তি, বলা এরা সব छांटन ना ?” “তাদের জানা-জানিতে কিছু আসবে যাবে না— আমিই ঠাই পাই না তারা ত শিশু ! এ-দেশটা শুধু ছোয় খাওয়ার দ্বন্দ্ব নিয়েই চলেছে ! তা’রা বুঝে দেখে না যে—বে কা’র সঙ্গে দ্বন্দ্ব করে। আত্মারূপে অন্তর্ধ্যামীরূপে আমার জীবনে যার বিকাশ-অন্তের জীবনেও র্তা’রই বিকাশ—এতে কি দ্বন্ধ করা চলে ?” শৈল কহিল, “পূৰ্ব্বপুরুষের অর্জিত সংস্কার নিয়েই লোকে করে יין “কিন্তু এমন রেখা টেনে সীমা চিহ্নিত করে কেন ? তা’র যে-রেখা টানে, সেই রেখার মধ্যে এক-এক স্থানে যে-কদর্ঘ্যতা জোট পাকিয়ে রয়েছে তা দেখতে তা’র অন্ধ হয়। অথচ রেখার বাহিরে যে মহৎ তাকে তারা ঘৃণা করে। এরূপ ভুল সংস্কারের অধীন হ’য়ে দেশট কি চিরদিনই চলবে? আর আপনার জাতিটার গা প্রাণপণে চাটুবে ?” শৈল কহিল, “যাক্ গে, সে-সব ভেবে আর কি করবে ?” - মহেশ্বরী কহিলেন, “ভাবছি—সেখানে তার খেতেশুতে পদে-পদেই বাঁধবে। এমন দরদের জন সে পাবে ন। সেখানে, যে তা’র দিকে ফিরে’ চাইবে । বালকের অস্তরেও এমন একট। কিছু আছে যা বাইরে অত্যন্ত অস্পষ্ট কিন্তু ভিতরে খুবই সত্য। তার সেই মৌন নীরবতাই তার প্রাণের মাঝে বর্ষণ নামিয়ে দেবে।” শৈল কহিল, “তোমার এই একটা দোষ যে, একএকট। অসম্ভব ভাবনা টেনে এনে নিজকে অস্থির করে? 〔寸【奇t!” মহেশ্বরী একটু হাসিলেন। কহিলেন, “অসম্ভব কিছু ভাবিনে । যা ভাবি—না ভেবেও পারিনে। একট। হৈ-চৈ নিয়েই যেন তার জীবনটা গড়ে উঠেছে। আরও দুঃখ, এই যে, সে মীর খায়–অথচ জানে না কেন মীর থায় !” মহেশ্বরীর অন্তর এইরূপে অশাস্ত হইয়া উঠিল। রীত্রিকালে শূন্য বিছানায় শয়ন করিয়া কানাইলালের